বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘ছেলে’ ইসহাকের মামলায় আদালতে গেলেন না বদি

  •    
  • ১৪ জানুয়ারি, ২০২১ ১৫:৪০

বদিকে বাবা দাবি করে গত ১৩ ডিসেম্বর মামলার পর আদালতের সমন নিয়ে টেকনাফে বদির বাসায় যান আদালতের জারিকারক মো. টিটো। কিন্তু ঢুকতে দেয়া হয়নি তাকে। আদালতের সমন আছে জানালে দারোয়ান বলেন, বদি ঢাকায় আছেন। এরপর টিটো ফিরে আসেন।

বাবা দাবি করে কক্সবাজারের যুবক মোহাম্মদ ইসহাকের মামলায় আদালতে গেলেন না কক্সবাজারে আলোচিত সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি।

গত ১৩ ডিসেম্বর নিজেকে বদির সন্তান দাবি করে পিতৃ পরিচয় দাবি করে টেকনাফের সহকারী জজ জিয়াউল হকের আদালতে আবেদন করেন ইসহাক।

আবেদনে ২৬ বছর বয়সী এই যুবক বলেন, তিনি তার জন্ম পরিচয় নিশ্চিত করতে ডিএনএ পরীক্ষাতেও রাজি। আবেদন গ্রহণ করে বিচারক বদিকে ১৪ জানুয়ারি উপস্থিত হতে সমন জারি করেন।

নির্ধারিত দিন বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির হন ইসহাক, তার মা, তাদের আইনজীবী। তবে বদির পক্ষ থেকে কেউ উপস্থিত হননি।

ইসহাকের আইনজীবী কফিল উদ্দিন বলেন, ‘সমন পাননি বলে আদালতে হাজির হননি আব্দুর রহমান বদিসহ বেশিরভাগ আসামি। যেহেতু ইসহাকের মাকেও আসামি করা হয়, সেহেতু তিনি উপস্থিত ছিলেন।’

তিনি বলেন, ‘বদি আজ আসেননি। কতদিন এভাবে থাকবেন? তাকে আদালতে আসতেই হবে। তিনি যদি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হন তাহলে অবশ্যই উপস্থিত হবেন।’

সমন জারিকারক মোহাম্মদ টিটোর বরাত দিয়ে কফিল উদ্দিন বলেন, ‘টেকনাফে বদির বাসায় সমন নিয়ে গেলে ঢুকতে দেয়া হয়নি। আদালতের সমন আছে জানালে দারোয়ান বলেন, বদি ঢাকায় আছেন। এরপর টিটো ফিরে আসেন।’

আদালত চত্বরে ইসহাক বলেন, ‘আমার আইনজীবীদের হুমকি দেয়া হচ্ছে। অনেক আইনজীবী কথা দিয়েও আদালতে আসেননি। তারপরও একজন আমার পক্ষে লড়ছেন। আমি নিজেও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। শুধুমাত্র অজুহাত দিয়ে সময় নিচ্ছে আমার বাবা।’

ইসহাক তার এজাহারে বাবার নাম লিখেছেন আব্দুর রহমান বদি। ঠিকানা: টেকনাফ পৌর এলাকার কায়ুকখালী। তাকে কক্সবাজার-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

এজাহারে ইসহাক বলেছেন, বদিদের এক সময়ের পারিবারিক মিস্ত্রী মোহাম্মদ ইসলামের সংসারে তিনি লালিত-পালিত হয়েছেন। মোহাম্মদ ইসলামের সঙ্গে তার মা সুফিয়া খাতুনের ‘দ্বিতীয়’ বিয়ে হয়।

কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের বিসিক শিল্প এলাকা সংলগ্ন দক্ষিণ মুহুরী পাড়ায় বসবাস করেন ইসহাক। অর্থকষ্টে দিন কাটে তার।

যদিও নিউজবাংলাকে এই যুবক বলেছেন, তিনি টাকা পয়সা নয়, বাবা বদির স্নেহের ছায়াতলে যেতে চান। এ জন্য অনেক চেষ্টা করেও যখন কাজ হয়নি, তখন আদালতে আসতে বাধ্য হন।

মামলায় বদি ছাড়াও বিবাদী করা হয়েছে বদির চাচা মোহাম্মদ ইসলামকে।

ইসহাকের দাবি, ১৯৯২ সালের ৫ এপ্রিল তার মা সুফিয়া খাতুনের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল বদির। বিয়ে পড়ান বদিদের আবাসিক হোটেল নিরিবিলিতে কর্মরত মৌলভী আবদুস সালাম। সাক্ষী ছিলেন হোটেলের দারোয়ান মোহাম্মদ এখলাছ।

বিষয়টি নিয়ে এতদিন চুপ থাকা প্রসঙ্গে ইসহাক জানান, বদির রাজনৈতিক শত্রু ও সামাজিক অবস্থানসহ নানা সমীকরণের কারণে তিনি মায়ের কাছে সময় নেন।

ইসহাকের দাবি, বদির পরিবার এর সবই জানে। ‘বাবার’ সঙ্গে তার দেখাও হয়েছে একাধিকবার। মায়ের হাত ধরে অসংখ্যবার বদির কাছে গিয়েছেনও। বদি তাকে বুকে জড়িয়ে ধরে আদর করেছেন; মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে দোয়া করেছেন; লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

ইসহাক থাকেন কক্সবাজার লিংরোড এলাকায়। পড়াশোনা করেন কক্সবাজার সরকারি কলেজে। এবার মাস্টার্স পরীক্ষা দেবেন। পড়ালেখার পাশাপাশি টিউশনি করেন। তার টাকাতেই চলে সংসার।

ইসহাকের মা সুফিয়া খাতুন নিউজবাংলাকে জানান, যখন তিনি ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা, তখন তাদের বিয়ের বিষয়টি জেনে যান বদির বাবা। এই অবস্থায় বদির বোন পরিচয়ে জোরপূর্বক স্থানীয় রাজমিস্ত্রি নুরুল ইসলামের সঙ্গে বিয়ে দেয়া হয় তাকে।

তখন বদির বাড়িতে ভবন নির্মাণের কাজ করছিলেন নুরুল। তিনি একজন সহজ সরল মানুষ।

সুফিয়ার অভিযোগ, যখন তাকে জোর করে বিয়ে দেয়া হয়, তখন মুখ খুললে সন্তানসহ তাকে হত্যার হুমকি দেন বদি ও তার বাবা এজহার মিয়া। এখন ছেলে যখন পিতৃত্ব দাবি করে মামলা করেছেন, তখন আবার হুমকি দেয়া হচ্ছে তাকে; হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছে ছেলেকে।

যার সঙ্গে সুফিয়ার বিয়ে হয়েছিল, সেই নুরুল জানান, বিয়ের দুইমাস পর তিনি জানতে পারেন তার স্ত্রী গর্ভবতী। তখন সুফিয়া তাকে সব খুলে বলেন। পরে বেশ কয়েকবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেন সুফিয়া।

নুরুল ইসলাম নিউজবাংলাকে জানান, এমন বাস্তবতা সামনে আসবে তা কখনও কল্পনাও করেননি তিনি। কখনও কক্সবাজারে কখনও চট্টগ্রামে পরিবার নিয়ে পালিয়ে বেড়াতেও হয়েছে তাকে।

নুরুলও চান, সন্তান হিসেবে ইসহাককে স্বীকৃতি দিক বদি।

এ বিভাগের আরো খবর