যারা এখনও জঙ্গিবাদের মতো ভুল পথে আছে তাদেরকে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ।
রাজধানীর র্যাব সদর দপ্তরে বৃহস্পতিবার দুপুরে নয় জঙ্গি সদস্যের আত্মসমর্পণ উপলক্ষে আয়োজিত ‘নব দিগন্তের পথে’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এ আহ্বান জানান তিনি।
বেনজীর বলেন, ‘যারা এখনও ওই পথে আছো, তোমরা ফিরে এসো। কারণ তোমরা কখনও বিজয়ী হবে না।’আরও পড়ুন: ‘নব দিগন্তের পথে’ ৯ জঙ্গি
আত্মসমর্পণ করা নয় জঙ্গি সদস্য হলেন- সিলেটের শাওন মুনতাহা ইবনে শওকত, ডা. নুসরাত আলী জুহি, কুমিল্লার আবিদা জান্নাত আসমা অরফে তারাদ অরফে রামিসা, চাঁদপুরের মোহাম্মদ হোসেন অরফে হাসান গাজী, মো. সাইফুল্লাহ, ঝিনাইদহের মো. সাইফুল ইসলাম, চুয়াডাঙ্গার মো. আবদুল্লাহ আল মামুন, মো. সাইদুর রহমান ও কুমিল্লার আবদুর রহমান সোহেল।
তাদের মধ্যে ছয় জন জেএমবির এবং তিন জন আনসার আল ইসলামের সদস্য।
স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে ৯ জঙ্গি সদস্যের আত্মসমর্পণ। ছবি: নিউজবাংলা
জঙ্গিদের উদ্দেশে আইজিপি বলেন, ‘ককটেল, জর্দার কৌটা বা এ জাতীয় জিনিসপত্র দিয়ে তোমরা কারও বিরুদ্ধেই বিজয়ী হতে পারবে না। বরং ওই পথে গিয়ে তোমরা পরিবার-সমাজ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছো। বেঘোরে প্রাণ যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। এই অন্ধকার জগতে গিয়ে তোমার নিজেকে, পরিবারকে এবং রাষ্ট্রকে বিপদে ফেলতে পারো।
আইজিপি জানান, বাংলাদেশ বার বার জঙ্গিবাদে আক্রান্ত হয়েছে। তবে এর কোনোটাই বাংলাদেশ থেকে সৃষ্টি হয়নি। প্রতিবারই বাইরের দেশ থেকে এসেছে। প্রতিবারই শান্তিপ্রিয় মানুষের সহায়তায় পরাস্ত করা হয়েছে।
এখনও যারা এ ধরনের কাজে জড়িত আছে, তাদের প্রতি আইনশৃঙ্ক্ষলা বাহিনীর নজরদারী অব্যাহত আছে জানিয়ে বেনজীর বলেন, ‘আমাদের গোয়েন্দা কমিউনিটিও এ বিষয়ে তৎপর রয়েছে। হয়তো পরিপূর্ণভাবে সব ঘটনা শুরুতে বিনষ্ট করতে পারিনি। ১০০ ভাগ না হলেও অন্তত ৯০ ভাগেরও বেশি ঘটনা শুরুতেই বিনষ্ট করতে সক্ষম হয়েছি।’
যারা সমাজের মূলধারায় ফিরে এসেছে তাদেরকে অভিনন্দন জানিয়ে পুলিশ প্রধান বলেন, ‘তোমরা আলোর পথের অভিযাত্রী, এটা দুঃসাহসিক কাজ। এ জন্য তোমাদের অভিনন্দন। জঙ্গিদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার এই ধারা বাংলাদেশই প্রথম চালু করেছে।’
নয় জঙ্গি সদস্যের আত্মসমর্পণ উপলক্ষে আয়োজিত ‘নব দিগন্তের পথে’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল ও আইজিপি বেনজীর আহমেদ। ছবি: নিউজবাংলা
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘যারা আজ সমাজের মূলধারায় ফেরার জন্য আত্মসমর্পন করেছেন, তাদেরকে এই সমাজ যেন আন্তরিকতার সঙ্গে গ্রহণ করে নেয়। তুই জঙ্গি বলে যেন তাকে আবারও নেতিবাচক পথের দিকে যেন ঠেলে দেয়া না হয়।
‘জঙ্গিবাদ একটা আদর্শিক সমস্যা, এটা মোকাবিলার জন্য প্রয়োজন সঠিক ধর্মীয় ব্যাখ্যা। তাদেরকে সমাজের মূল স্রোতধারায় ফিরিয়ে আনতে চাই।’
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো. আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রফেসার ও সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের পরিচালক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ, এফবিসিসিআই এর শেখ ফজলে রহিম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি বিভাগের প্রধান খন্দকার ফারজানা রহমান, ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি ও দৈনিক ইত্তেফাকের সিটি এডিটর আবুল খায়ের।