দুর্নীতি মামলা সরকার প্রত্যাহার করতে পারবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে উচ্চ আদালত। তারা জানাচ্ছে, এসব মামলা প্রত্যাহারে দুর্নীতি দমন কমিশনই অনুমোদিত সংস্থা।
মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত এবং বিচারিক আদালতে মামলা পরিচালনা থেকে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিকে বিরত রাখতে সরকারের সিদ্ধান্তকে দুর্নীতি দমন কমিশনের উপর হস্তক্ষেপ বলে মনে করেছে হাইকোর্ট।
দুদকের মামলা প্রত্যাহার সংক্রান্ত বিচারিক আদালতের আদেশ বাতিল করে এক রায়ে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ পর্যবেক্ষণ দিয়েছে।
১৫ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় বুধবার সুপ্রিমকোর্টের ওয়েব সাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। এর আগে গত ১০ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রায় দেয়।
রায়ে বলা হয়, ‘এটা হতে পারে যে, সরকার দুর্নীতির কোনো মামলা প্রত্যাহার করতে চাইলে অনুরোধ জানিয়ে বা ইচ্ছা প্রকাশ করে দুর্নীতি দমন কমিশনের কাছে অনুরোধ করতে পারবে। এ ক্ষেত্রে তখন স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে দুদক।’
ত্রাণের টিন আত্মসাতের অভিযোগে সুনামগঞ্জের বড়দল (উত্তর) ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যানসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ৫ এপ্রিল তাহিরপুর থানায় মামলা হয়।
২০০৯ সালে এ মামলায় অভিযোগপত্র দেয়া হয়। তা বিচারের জন্য তা সিলেটের বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতে পাঠানো হয়।
অভিযোগ গঠনের পর সরকার মামলাটি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ২০১০ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি সংশ্লিষ্ট আদালতের বিশেষ পিপিকে চিঠি দেয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট পিপি একই বছরের ৩ আগস্ট মামলাটি প্রত্যাহারে আদালতে আবেদন জানান। আদালত মামলাটি প্রত্যাহার করে ২০১২ সালের ২৬ জানুয়ারি আদেশ দেন।
ওই আদেশের বিরুদ্ধে ২০১৬ সালে হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করে দুদক। আবেদনে হাইকোর্ট ওই আদেশ কেন বাতিল করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে।
এ রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে ১০ ডিসেম্বর রুল যথাযথ বলে রায় দেয় হাইকোর্ট।
রায়ে আসামিদের চার সপ্তাহের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয়া হয়।