পালা গানের আসরে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের মামলায় আত্মসমর্পণ করে জামিন পেলেন বাউল শিল্পী রিতা দেওয়ান।
এই শিল্পীর জামিনের বিরোধিতা করে রাষ্ট্রপক্ষ বলেছিল, তিনি মুক্তি পেলে আবার ধর্মানুভূতিতে আঘাত হানবেন। তবে বিচারক সে বক্তব্য আমলে নেননি।
গানের আসরে ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত দেয়ার অভিযোগে একজন আইনজীবী রিতার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাটি করেছিলেন।
গত ২ ডিসেম্বর সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
এই বিষয়টি নিয়ে তুমুল আলোচনার মধ্যে বুধবার ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আস্সামছ জগলুল হোসেনের আদালতে আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়ার মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করেন রিতা দেওয়ান।
জামিন শুনানিতে আইনজীবী জ্যোতির্ময় বলেন, ‘আসামি একজন স্বনামধন্য ও বরেণ্য বাউল শিল্পী। তাকে জামিন দিলে তিনি পলাতক হবেন না।’
তবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও সাইবার ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর নজরুল ইসলাম শামীম জামিনের বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, ‘আসামির জামিন হলে তিনি আরও উসকানিমূলক বক্তব্য দ্বারা সামাজিক ও ধর্মীয় গোলমাল সৃষ্টি করতে পারেন । তাই তাকে জামিন না দিয়ে জেলহাজতে আটক রাখার জন্য আবেদন করছি।’
দুই পক্ষের বক্তব্য শেষে বিচারক রিতার আবেদন গ্রহণ করেন।
গত ৩১ জানুয়ারি রিতার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাটি করেন আইনজীবী ইমরুল হাসান।
অভিযোগে বলা হয়, ৩১ জানুয়ারি ফেসবুক, ইউটউিবে দেখতে পান, রিতা দেওয়ান একটি পালা গানের আসরে প্রতিপক্ষকে আক্রমণ করতে গিয়ে ধর্মীয় বিষয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন।
অভিযোগটি তদন্তে পুলিশের বিশেষায়িত সংস্থা পিবিআইয়ের কাছে প্রতিবেদনও চান বিচারক।
২০ অক্টোবর পিবিআইর পুলিশ পরিদর্শক শেখ মো. মিজানুর রহমান তিন জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দেন।
২ ডিসেম্বর সেই প্রতিবেদন আমলে নিয়ে আদালত রিতা দেওয়ানসহ তিন জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়।
অন্য দুই আসামি হলেন শাজাহান ও ইকবাল।
১ ফেব্রুয়ারি ইউটিউবে ভাইরাল গানটির বিষয়ে ক্ষমা চেয়েছেন রিতা দেওয়ান।
‘গান রুপালি এইচডি’ নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে দুই মেয়েসহ করা একটি ভিডিওতে তিনি বলেন, ‘এ কথাটা আমার ভুল হয়ে গেছে। মুসলিম ভাই-বোনদের কাছে আমি বলব, আমার ভুল হয়ে গেছে। আমাকে ক্ষমা করে দেবেন। আমি যেন আর কোনো দিনও ভুল না করি।’
আরও পড়ুন: তিন বাউল শিল্পীকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা