অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারে প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পি কে হালদারকে সহায়তা করায় তার বান্ধবী অবন্তিকা বড়ালকে দুদকের মামলায় তিন দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত।
ঢাকার মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ বিচারক কে এম ইমরুল কায়েশ বুধবার এ আদেশ দেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-পরিচালক সালাউদ্দিনের নেতৃত্ব একটি দল সকালে ধানমন্ডি এলাকা থেকে অবন্তিকাকে গ্রেপ্তার করে।
বিকেল তিনটায় তাকে আদালতে হাজির করে ৩ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন দুদকের আইনজীবী মীর আহমেদ আলী সালাম।
তিনি বলেন, ২৭৪ কোটি টাকা পাচারে পি কে হালদারকে সহযোগিতা করার প্রমাণ পাওয়া গেছে অবন্তিকার বিরুদ্ধে। আসামিকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা দরকার।
অপরদিকে রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন অবন্তিকার আইনজীবী জাকির হোসেন।
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে তিন দিনের রিমান্ড আদেশ দেয় আদালত।
মামলায় পি কে হালদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, রিলায়েন্স ফাইন্যান্সের এমডি থাকাকালে নিজের আত্মীয় স্বজনকে আরও বেশ কয়েকটি লিজিং কোম্পানির ইনডিপেন্ডেন্ট পরিচালক বানান তিনি। একক কর্তৃত্বে পিপলস লিজিংসহ বেশ কয়েকটি লিজিং কোম্পানির টাকা বিভিন্ন কৌশলে আত্মসাৎ করেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, পিপলস লিজিংয়ে আমানতকারীদের প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা বিভিন্ন কৌশলে আত্মসাৎ করে এই কোম্পানিকে পথে বসিয়েছেন পিকে হালদার।
পি কে হালদার এসব কোম্পানির স্থাবর সম্পদ বিক্রি করাসহ আমানতকারীদের শেয়ার পোর্টফোলিও থেকে বিক্রি করে সব টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
তাকে এসব কাজে সহায়তা করার অভিযোগে গত ৫ জানুয়ারি পি কে হালদারের মা লিলাবতী হালদার ও অবন্তিকা বড়ালসহ ২৫ জনের বিদেশ যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা দেয় হাইকোর্ট। এতে বলা হয়, প্রয়োজনে দুদক তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে।
পি কে হালদারের প্রতারণার শিকার হওয়ার দাবি করে ভুক্তভোগী পাঁচ জন বিনিয়োগকারী ২৫ জনের বিদেশ যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করলে এই নির্দেশনা দেয় আদালত।
আবেদনকারীরা হলেন সাবেক প্রধান বিচারপতি মোস্তফা কামালের মেয়ে নাশিদ কামাল, সাবেক রাষ্ট্রদূত রাজিউল হাসান, বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকতুর রহমান, সামিয়া বিনতে মাহবুব, খালেদ মনসুর ট্রাস্টের পক্ষে তরিকুল ইসলাম।
সামিয়া বিনতে মাহবুব নামের এক বিনিয়োগকারী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা যেকোনো মূল্যে টাকা ফেরত চাই। এ জন্য যা যা করা দরকার তাই করব। পি কে হালদারের মা লিলাবতী হালদার ও অবন্তিকা বড়ালসহ সকলকে আটক করলেই পিকে হালদারকে ফেরানো সম্ভব হবে।’
গত বছরের শুরুতে পি কে হালদার কানাডায় পালিয়ে যান বলে তথ্য পাওয়া যায়। এরপর তার পাসপোর্ট, সম্পত্তি জব্দ করা হয়।
৮ জানুয়ারি তাকে ধরতে রেড নোটিশ জারি করেছে ইন্টারপোল।