বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

করোনা টিকা ভারতের দামেই পাবে বাংলাদেশ

  •    
  • ১২ জানুয়ারি, ২০২১ ২১:৫৬

ত্রিপক্ষীয় চুক্তিতে উল্লেখ আছে, ভারত যে দামে সিরামের টিকা কিনবে, সেই দামেই টিকা পাবে বাংলাদেশ। ভারত ৪ ডলারের কম দামে এ টিকা কিনলে বাংলাদেশ মূল্য সমন্বয় করে অর্থ পরিশোধ করবে।  

ভারত যে-দামে সে দেশের সিরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে করোনার টিকা কিনবে, বাংলাদেশ সেই দামেই টিকা পাবে। বাংলাদেশের সঙ্গে সিরামের যে চুক্তি হয়েছে, সেখানে প্রতি ডোজ টিকার দাম ধরা হয়েছে ৪ ডলার।

ভারত এর কম দামে সিরামের কাছ থেকে টিকা পেলে বাংলাদেশ অর্থ পরিশোধের সময় ভারতের দামের সঙ্গে মূল্য সমন্বয় করে ওই একই দামে অর্থ পরিশোধ করবে।

ভারত থেকে টিকা কেনার দায়িত্বপ্রাপ্ত বাংলাদেশের কোম্পানি বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের পক্ষ থেকে নিউজবাংলাকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তাও এটি নিশ্চিত করেছেন।

সম্প্রতি বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিরামের কাছ থেকে ২ দশমিক ৭২ ডলার দরে টিকা কিনছে ভারত। সে হিসেবে ভারতের চেয়ে ৪৭ শতাংশ বেশি দামে টিকা কিনবে বাংলাদেশ।

বেক্সিমকো ফার্মার চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) রাব্বুর রেজা নিউজবাংলাকে বলেন, আমরা প্রতি ডোজ চার ডলার দাম ধরে প্রাথমিকভাবে চুক্তি করেছি। এই অনুযায়ী তিন কোটি টিকা পাওয়ার জন্য অর্ধেক ৬০০ কোটি টাকা সিরামের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছে। পরে যখন টাকা দেয়া হবে, ভারতের সরকার যে দামে টিকা কিনছে, সেই দামেই বাংলাদেশ টিকা পাবে। ভারত যে দামে টিকা পাবে, সেই দাম তখন অ্যাডজাস্ট করা হবে। কাজেই ভারত সরকার যে দামে টিকা পাবে বাংলাদেশও সেই দামে টিকা পাবে।’

রাব্বুর রেজা আরও বলেন, ‘চুক্তির মধ্যেই বলা হয়েছে, পেমেন্টের সময় ভারতের সরকার যে দামে টিকা পাচ্ছে, সেই দামটি আমরা অ্যাডজাস্ট করব। আমরা আশাবাদি, ভারতের চেয়ে বাংলাদেশ করোনা টিকার দাম বেশি হবে না।’

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ভারত যে দামে টিকা পাবে, সিরাম ইনস্টিটিউট বাংলাদেশকেও একই দামে টিকা দেবে। এর ব্যতয় হবার সুযোগ নেই। কারণ, তাদের সঙ্গে করা চুক্তিতে বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এর কোনো ব্যতয় হলে বিষয়টি নিয়ে সিরাম এবং বেক্সিমকোকে জবাবদিহি করতে হবে।

এ বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন হবার কারণ নেই জানিয়ে ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘টিকার জন্য আমরা সিরামকে ৪০ শতাংশ অর্থ দিয়েছি। তেমন কোনো অসুবিধা দেখা দিলে বাকি অর্থ ছাড় করা হবে না।’

প্রথম দফার ৩ কোটি টিকা কেনার ব্যাপারে গত ৫ নভেম্বর স্বাক্ষরিত ত্রিপক্ষীয় চুক্তির তিনটি পক্ষ হলো ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া, বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড ও বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এ চুক্তিতে প্রতিটি টিকা সিরামের কাছ থেকে ৪ ডলারে কেনা হলেও বেক্সিমকো সরকারকে এ টিকা দেবে প্রতিটি ৫ ডলারে।

এতে বেক্সিমকোর কী পরিমাণে মুনাফা হবে জানতে চাওয়া হলে বেক্সিমকো ফার্মার সিওও রাব্বুর রেজা বলেন, ‘আমাদের এখানে কোনো লাভ নেই। জনগণের সেবা করার জন্য এই ভ্যাকসিনের পুরো কাজটা আমরা নিয়েছি। মৌলিকভাবে আমরা এখানে সরকারের হয়ে কাজ করছি। সিরামের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ থেকে শুরু করে রেজিস্ট্রেশন করতে যতো ধরনের ডকুমেন্ট, এরপর ভ্যাকসিন সিরামের কারখানা থেকে নিয়ে এসে আমাদের ওয়্যারহাউজে রাখা, সেখান থেকে দেশের ৬৪ জেলায় ওয়্যারহাউজগুলোতে পৌঁছে দিতে কাজ করছে বেক্সিমকো।

‘বেক্সিমকো এখানে শুধু মিডলম্যান নয়, সরকারের সহযোগী প্রতিষ্ঠান। এটার জন্য সার্ভিস ফি বা সেবা মূ্ল্য হিসেবে সরকার এক ডলার বেক্সিমকোকে দিচ্ছে। তবে এসব কাজ করতে এক ডলারও (মুনাফা) থাকবে না। টিকা সংরক্ষণের জন্য অবকাঠামো ও ওয়্যারহাউজ থেকে শুরু করে সব কিছুই আমাদের তৈরি করতে হচ্ছে। প্রতি মাসে যতো ডোজ টিকা সরবরাহ করা হবে, সে অনুযায়ী সরকার বেক্সিমকোকে টাকা দিবে।’

প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা ও বেক্সিমকো ফার্মার ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, সবচেয়ে কম দামে ভ্যাকসিন আনছে সরকার। প্রতি ডোজ পেতে খরচ হবে মাত্র পাঁচ ডলার। সব প্রক্রিয়া শেষ হলে ভারত ও বাংলাদেশ সরকার একই সময়ে ভ্যাকসিন পাবে।

সালমান এফ রহমান আরও বলেন, ‘মডার্না ও ফাইজারের ভ্যাকসিনের দাম হাঁকা হচ্ছে ৪০ ডলার। চীনা কোম্পানির ভ্যাকসিন ৬০ ডলার। অথচ একই কার্যকারিতার ভ্যাকসিন বাংলাদেশ পাচ্ছে মাত্র পাঁচ ডলারে।’

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, করোনা টিকা কিনতে প্রতি ডোজে সরকারকে গুণতে হবে ৫৩০ টাকা। তাতে সরকারকে প্রথম দফায় ৩ কোটি ডোজ টিকা কিনতে ব্যয় করতে হবে ১ হাজার ৫৮৯ কোটি ৪৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। চুক্তি অনুযায়ী, পরিবহনসহ প্রতিটি টিকার জন্য খরচ নির্ধারণ করা হয়ছে পাঁচ ডলার। আনুষঙ্গিক উপকরণের জন্য বাড়তি খরচ হবে টিকা প্রতি ১ দশমিক ২৫ ডলার। সবমিলিয়ে টিকা প্রতি ডোজে খরচ দাঁড়াবে ৬ দশমিক ২৫ ডলার, যা দেশীয় মুদ্রায় প্রায় ৫৩০ টাকা।

ইউনিসেফের ওয়েবসাইটের তথ্যমতে, সংরক্ষণ ও সরবরাহের সক্ষমতা থাকায় সরাসরি অক্সফোর্ডের অ্যাস্ট্রাজেনেকার কাছ থেকে ইউরোপীয় কমিশন প্রতিটি ডোজ টিকা কিনছে ২ দশমিক ১৯ ডলারে। সেই হিসেবে টিকা নিতে প্রতিজনে খরচ হবে সাড়ে চার ডলারের কম।

এ বিভাগের আরো খবর