মাদক মামলায় ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত শাহাবুদ্দীন বিহারির পরিবর্তে নির্দোষ আসামি হিসেবে প্রায় পাঁচ বছর ধরে কারাগারে থাকা মো. আরমানকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ২০ লাখ টাকা দিতে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেছে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।
মঙ্গলবার চেম্বার বিচারপতি নূরুজ্জামানের আদালত আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে দেয়।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস ও অমিত দাশ গুপ্ত। আরমানের পক্ষে শুনানি করে ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত নিউজবাংলাকে বলেন, আরমানকে ২০ লাখ টাকার ক্ষতিপূরণের আদেশ চেম্বার আদালত আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে দিয়েছেন।
এর আগে গত ৩১ ডিসেম্বর আরমানের আটকাদেশ অবৈধ ঘোষণা করে তাকে মুক্তি দেয়ার নির্দেশ দিয়ে রায় দেয় বিচারপতি মো. মুজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহিউদ্দীন শামীমের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
রায়ে আরমানকে ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ারও নির্দেশ দেয়া হয়।
এ ছাড়া অভিযুক্ত চার পুলিশ সদস্যকে তাদের বর্তমান কর্মস্থল থেকে সরিয়ে ‘কম গুরুত্বপূর্ণ জায়গায়’ বদলি এবং ঘটনা তদন্তে পুলিশের পক্ষ থেকে কমিটি গঠন করার আদেশ দেয়া হয়।
তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়।
২০১৬ সালের ২৭ জানুয়ারি সকালে রাজধানীর মিরপুরের পল্লবীর বিহারি ক্যাম্প এলাকার নিজ বাসার সামনে থেকে পুলিশের মাদকবিরোধী অভিযানে আটক হন আরমান। কিন্তু তাকে মাদক কারবারি ও সাজাপ্রাপ্ত আসামি শাহাবুদ্দীন বিহারি হিসেবে দেখিয়ে জেলে পাঠানো হয়।
২০০৫ সালে ৪০ বোতল ফেনসিডিলসহ আটক হন মিরপুর বিহারি ক্যাম্পের শীর্ষ মাদক কারবারি শাহাবুদ্দীন বিহারি ও তার দুই সহযোগী। সেই মাদক মামলায় ২০০৭ সালের ৫ মার্চ জামিনে মুক্ত হন শাহাবুদ্দীন।
২০১১ সালের ১৭ জানুয়ারি আদালতে আত্মসমর্পণ করে আবার জামিন আবেদন করেন তিনি। এতে জামিন মেলে তার। এরপর ফেরারি হয়ে যান শাহাবুদ্দীন।
২০১২ সালের ১ অক্টোবর মামলায় শাহাবুদ্দীন ও তার দুই সহযোগীর ১০ বছর জেল ও ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা হয়। রায় অনুযায়ী পলাতক শাহাবুদ্দীনকে ধরতে জারি হয় পরোয়ানা।
এর চার বছর পর সেই পরোয়ানায় পল্লবী থানার এসআই রাসেল গ্রেপ্তার করেন বিহারি ক্যাম্পের বেনারসি কারিগর আরমানকে। এরপর চার বছর অন্য আসামির সাজা খাটছেন তিনি।