পিএইচডি গবেষণাপত্র (থিসিস) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কীভাবে সংরক্ষণ করা হয় এবং তা মূল্যায়নের ক্ষেত্রে কোনো উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় কি না, তা আগামী দুই মাসের মধ্যে জানাতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এ তথ্য জানাতে বলা হয়েছে।
সোমবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি ও সমমানের ডিগ্রি প্রদানের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের নীতিমালা অনুসরণ করা হয় কি না তা তিন মাসের মধ্যে জানাতে নির্দেশ দিয়েছিল।
তারই আলোকে আজকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) প্রতিবেদন দাখিল করে। ওই প্রতিবেদনের উপর শুনানি নিয়ে আদালত এ আদেশ দেয়।
ইউজিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ স্বীয় আইন, বিধি, প্রবিধি, সংবিধি ও নীতিমালা অনুযায়ী নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় এমফিল ও পিএইচডিসহ উচ্চতর ডিগ্রি প্রদান করা হয়ে থাকে। এ বিষয়ে কমিশনের কোনো ভূমিকা নেই।’
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যলয়ের ব্যাপারে বলা হয়, ‘বর্তমানে দেশে সরকার অনুমোদিত ১০৭টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। তন্মধ্যে ৯৭টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। কমিশন থেকে অদ্যাবধি কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এমফিল ও পিএইচডি গ্রোগ্রাম পরিচালনার অনুমোদন দেয়া হয়নি।’
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আবেদনকারী আইনজীবী মনিরুজ্জামান লিঙ্কন। রাষ্ট্রপক্ষ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
বাশার বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওষুধপ্রযুক্তি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবুল কালাম লুৎফুল কবীর যে গবেষণাপত্র জমা দিয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন, সেটির ৯৮ শতাংশ নকলের অভিযোগ ওঠে।
‘এই অভিযোগটি তদন্ত করার জন্য উপাচার্যকে নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। যথারীতি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, তদন্ত চলছে। এর মধ্যে আমরা সময় চেয়েছিলাম, আদালত আমাদেরকে সময় বাড়িয়ে দিয়েছে। দুই মাসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছে।’
‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের পিএইচডি গবেষণার ৯৮ শতাংশ নকল’ শিরোনামে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়।
ওই প্রতিবেদন যুক্ত করে পিএইচডি ও সমমানের ডিগ্রি দেয়ার ক্ষেত্রে জালিয়াতি বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে গত বছর জানুয়ারিতে হাইকোর্টে রিট করেছিলেন আইনজীবী মনিরুজ্জামান লিঙ্কন।
পরে রিটের প্রাথমিক শুনানি করে গত বছর ৪ ফেব্রুয়ারি রুলসহ আদেশ দেয় হাইকোর্ট।
রুলে চৌর্যবৃত্তির মাধ্যমে তৈরি করা থিসিসের উপর কোনো গবেষক বা শিক্ষার্থীকে পিএইচডি ও সমমানের ডিগ্রি প্রদান না করতে কেন নির্দেশনা দেয়া হবে না এবং চূড়ান্ত অনুমোদনের আগে থিসিস চৌর্যবৃত্তি চিহ্নিত করার জন্য প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ নিয়োগের নির্দেশনা কেন দেয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।
শিক্ষাসচিব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যানকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।