বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কাদেরের বোঝা উচিত তিনি জাতীয় নেতা: মির্জা

  •    
  • ১০ জানুয়ারি, ২০২১ ২১:২৩

‘আমি যখন বলি, ওবায়দুল কাদের সাহেব ঘরে ঘরে চাকরি দেয়ার কথা বলছে, সে চাকরি কোথায়? আমি যখন প্রতিবাদ করি, তখন বলে আমি নাকি পাগল, আমি উন্মাদ।’

সুষ্ঠু নির্বাচন চেয়ে আলোচনায় উঠা মির্জা আবদুল কাদের এবার তার বড় ভাই ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে আনলেন নানা অভিযোগ। বলেছেন, তিনি অন্যায়ের বিরুদ্ধে বললে তাকে পাগল বলা হয়। তাকে ঢাকায় এসে বড় নেতা হতে দেয়া হয়নি।

ওবায়দুল কাদের একজন জাতীয় নেতা, এই বোধটুকু তার থাকা উচিত বলে মনে করেন তিনি।

চিকিৎসা করিয়ে ‘খারাপ’ ধরনের টিউমার অপসারণ ও করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সময় রাজনীতি ও বৃহত্তর নোয়াখালী নিয়ে নতুন চিন্তার উদ্ভব হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

কাদের মির্জা বলেন, ‘আমি সাহস করে সত্য কথা বলব। অন্যায়, অনিয়ম, অবিচারের বিরুদ্ধে কথা বলব।’

নির্বাচনকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের অংশ হিসেবে নিয়েছেন বলেও জানান তিনি।

আগামী ১৬ জানুয়ারির অনুষ্ঠেয় কোম্পানিগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের এই মেয়র প্রার্থী রোববার পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের হাজীপাড়ায় পথসভা করেন।

এ সময় তিনি স্থানীয় প্রশাসন, আওয়ামী লীগের একাংশ ও নিজের ভাইয়ের তীব্র সমালোচনা করেন। বলেছেন, তিনি ইমানদার, সত্য কথা বলেন, কাউকে তোষামোদ করেন না।

কাদের মির্জা জানান, তার দুটি টিউমার ধরা পড়েছে। প্রথমটি বাংলাদেশে, দ্বিতীয়টি যুক্তরাষ্ট্রে। সে টিউমারটি খারাপ ছিল।

সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে সম্প্রতি আন্দোলনে নেমে আলোচিত হয়েছেন ওবায়দুল কাদেরের ভাই মির্জা আবদুল কাদের

‘আমি মনে করেছিলাম আমার জীবনের অবসান এখানেই হবে। আর আপনাদের সঙ্গে দেখা হবে না’- বলেন কাদের মির্জা।

করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২৪ দিন ঘরে শুয়ে থাকার কথা জানিয়ে কাদের মির্জা বলেন, এই ২৪ দিনে বাংলাদেশের রাজনীতি, কোম্পানীগঞ্জের রাজনীতি, নোয়াখালীর রাজনীতি, ফেনীর রাজনীতি নিয়ে তিনি ভেবেছেন।

কাদেরের কারণে এগোতে না পারার অভিযোগ

ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ করে কাদের মির্জা বলেন, ‘তার বোঝা উচিত উনি জাতীয় নেতা। আওয়ামী লীগের দুই বারের সাধারণ সম্পাদক। এ লোক আমাকে পাগল এবং উন্মাদ বলে। আমি কি পাগল, উন্মাদ।’

‘আমি যখন অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করি, নোয়াখালী, ফেনীর অপরাজনীতির কথা প্রতিবাদ করি, ভোট কারচুপির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করি, আমি আমার এলাকার মানুষের ন্যায্য অধিকার, গ্যাসের অধিকারের জন্য আমি কথা বলি…

‘আমি যখন বলি, ওবায়দুল কাদের সাহেব ঘরে ঘরে চাকরি দেয়ার কথা বলছে, সে চাকরি কোথায়? আমি যখন প্রতিবাদ করি, তখন বলে আমি নাকি পাগল, আমি উন্মাদ।’

কাদেরের কারণে রাজনীতিতে এগোতে পারেননি বলেও অভিযোগ করেন কাদের মির্জা। বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের আমাদেরকে এগোতে দেয়নি।

‘ঢাকায় ভর্তি হওয়ার জন্য গিয়েছি। বলছে চট্টগ্রাম ভর্তি হওয়ার জন্য। ঢাকায় রাজনীতি করলে, কোনো বড় নেতা হই যাইনি? আমরা এগোব কোত্থেকে?’- ভাই কাদেরের বিরুদ্ধে অনুযোগ ঝরে পড়ে কাদের মির্জার।

শেখ হাসিনা চেয়েছেন ফল, প্রশাসন দিয়েছে গাছ

প্রশাসনকে উদ্দেশ করে কাদের মির্জা বলেন, ‘প্রশাসনের কিছু লোক অতি উৎসাহী। শেখ হাসিনা চেয়েছেন ফল, তারা এনে দিয়েছে গাছ।’

নোয়খালীর জেলা প্রশাসককে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘একজন এমপির নামযুক্ত মাস্ক কীভাবে আপনি পরেন? আপনি তো নিরপেক্ষ নন। তিনি বলেন, যদি কোম্পানীগঞ্জের নির্বাচন নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র হয়, কোনো মায়ের বুক খালি হয়, এর সকল দায় ডিসি, এসপি, নির্বাচন অফিসারকে নিতে হবে।’

কর্মী সমর্থকদের পাশে থাকার আহ্বান জানিয়ে কাদের মির্জা বলেন, তারা থাকলে তিনি আর কাউকে তোয়াক্কা করবেন না।

এই পৌরসভায় টানা তিন বারের মেয়র কাদের মির্জা। কিন্তু সম্প্রতি তিনি অভিযোগ করছেন, দলের ভেতরের একটি অংশ তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী পাঠাচ্ছে, পোস্টার ছিঁড়ে ফেলছে।

সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে সম্প্রতি আন্দোলনে নেমে তুমুল আলোচিত হয়েছেন এই নেতা। বলেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বৃহত্তর নোয়াখীতে আওয়ামী লীগের তিন/চারজন এমপি ছাড়া বাকিরা ঘর থেকে বের হতে পারবেন না।

‘তোষামোদি করব না’

ওবায়দুল কাদেরের ভাই বলেন, ‘তিন বার ভোট করেছি। এখন কারও কারও তোষামোদি করতে হবে। কেন্দ্রীয় নেতাদের তোষামোদ করতে হবে। আমার এগুলোর দরকার নেই।’

দলের ভেতর বিরোধিতার ইংগিত দিয়ে কাদের মির্জা বলেন, ‘নোয়াখালী আওয়ামী লীগ আমার বিরুদ্ধে অস্ত্রশস্ত্র পাঠিয়েছে, ফেনী আওয়ামী লীগ আমার বিরুদ্ধে অস্ত্রশস্ত্র পাঠিয়েছে।

‘কোম্পানীগঞ্জের আওয়ামী লীগ আমার সঙ্গে নেই, পৌরসভা আওয়ামী লীগ আমার সঙ্গে নেই। তারপরে ডিসি, এসপি, নির্বাচন অফিসার আমার সঙ্গে নেই। আপনারা কি আমার সঙ্গে থাকবেন?’

উপস্থিত জনতা সমস্বরে ‘আছিইইই…’ বলে আওয়াজ দেন।

ওবায়দুল কাদেরের ভাই নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভায় তিন বারের মেয়র। তার নির্বাচনী সভাগুলোতে কর্মী-সমর্থকদের ভিড় থাকে

‘আপনারা থাকলে যথেষ্ট’- উল্লেখ করে কাদের মির্জা বলেন, ‘আমার কর্মীও যথেষ্ট নাই। যাদেরকে দায়িত্ব দিয়েছি, তারা আজকে পর্যন্ত চিঠি বিলি করে নাই। কাউন্সিলর ভোট নিয়ে ব্যস্ত।’

তখন উপস্থিত জনতা সমস্বরে, ‘আছি’ বলে চিৎকার করে।

একজন বলেন, ‘আপনারা থাকলে আমি ভোট করব, আর না হয় বাড়িতে শুয়ে থাকব।’

কাদের মির্জা বলেন, ‘আমি স্পষ্ট কথা বলি। আমি বেইমানের চেহারা একটু দেখব। আমি ওয়াদা রক্ষা করি। এদের উপর আল্লাহর গজব পড়বে। কেন্দ্র থেকে এ পর্যন্ত যারা এগুলো করতেছে, আল্লাহর গজব পড়বে।’

দলের ভেতরে একটি পক্ষকে ইংগিত করে কাদের মির্জা বলেন, ‘আমি ইমানদার, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি। তোমরা বেইমান, তোমরা মোনাফেক। তোমরা মানুষের সঙ্গে ওয়াদা করলে, তা রাখ না। আমি ওয়াদা রক্ষা করি।’

জনগণকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘গত কয় বছর আমি দায়িত্ব পালন করেছি। করোনার সময় আপনাদের সঙ্গে ছিলাম। কোনো নেতা ছিল? কোনো দলের কেউ ছিল? এখন আপনারা আমাকে ফেলে দিলে, কিছু যায় আসে না।’

এ বিভাগের আরো খবর