পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, মিয়ানমারের আন্তরিকতার অভাব থাকায় তিন বছরে এক জন রোহিঙ্গাও ফেরত যায়নি।
তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছি তাদের নিয়ে যাও। তারা অঙ্গীকার করেছে নিয়ে যাবে। এর পরও আজ প্রায় সাড়ে তিন বছরে এক জন রোহিঙ্গাও ফেরত যায়নি। কারণ মিয়ানমারের মধ্যে আন্তরিকতার অভাব রয়েছে।’
চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে রোববার দুপুরে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘গত ২০ জানুয়ারি মিয়ানমারের সঙ্গে বড় মিটিং হয়। এর পর কোভিড ও সেখানের ইলেকশনের বাহানা দিয়ে তারা আর মিটিং করেনি। আমরা আশা করছি নতুন করে তাদের সঙ্গে বসব।’
তবে কবে নাগাদ রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়া হবে তা বলা মুশকিল জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর জন্য যত ধরনের পদক্ষেপ নেয়া দরকার সব নিয়েছে। আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে সার্বক্ষণিক আলোচনা চালাচ্ছি। আমরা আশাবাদি ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে তারা নিয়ে যাবে।
‘তারা বারবার বলছে, রোহিঙ্গাদের নিয়ে যাবে ভেরিফিকেশনের পর। তারা কখনও বলেনি, রোহিঙ্গাদের নেবে না।’
‘দুইবার চেষ্টার পরও তারা (রোহিঙ্গারা) যায়নি। একটি বড় কারণ, তারা মিয়ানমার সরকারকে বিশ্বাস করে না। তাদেরকে (মিয়ানমার সরকার) বলেছি তোমাদের বিশ্বাসের অপূর্ণতা রয়েছে। বিশ্বাস বাড়াতে আমরা তিন ধরণের প্রস্তাব দিয়েছি। তাদের বলেছি তোমাদের সরকারের নেতারা এসে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলুক। তারা একবার এসেছিল। পরে প্রশ্নের মুখে পড়ে আর আসেনি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কৌশলগত কারণে প্রতিবেশী দেশ আমাদের পক্ষে থাকেনি। ১৩২টি দেশ আমাদের পক্ষে রায় দিয়েছে। আমাদের মূল উদ্দেশ্য রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো। সুতরাং কে কোথায় ভোট দিল সেটি গুরুত্বপূর্ণ না।
‘আমাদের বড় সমস্যা হয়ে গেছে তৃতীয় পক্ষ বিভিন্ন রাইটস নিয়ে কথা বলে। আমাদের চাপ দিয়ে সেই রাইটসগুলো অর্জনের চেষ্টা করে। তবে আমাদের নাম্বার ওয়ান দাবি, রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো। তারপর তারা রাইটস নিয়ে কথা বলুক।’
রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে সরকার আশাবাদী; আলোচনার মাধ্যমে এর সমাধান আসবে বলে জানান পররাষ্টমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন।
প্রেসক্লাবের ওই অনুষ্ঠানে অবসরপ্রাপ্ত মেজর মোহাম্মদ এমদাদুল ইসলামের দুইটি বই প্রকাশ করা হয়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. শিরীণ আখতারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।