বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিনাদোষে সাজা: আরমানকে ক্ষতিপূরণ দিতে চায় না রাষ্ট্রপক্ষ

  •    
  • ১০ জানুয়ারি, ২০২১ ১৮:২১

আরমানকে ২০ লাখ টাকা ও অভিযুক্ত চার পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে চেম্বার জজ আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন। বিচারক আদেশ না দিয়ে আপিলের আবেদন করতে বলেছেন।

বিনা দোষে পাঁচ বছর সাজা খাটার ঘটনায় মো. আরমান নামে একজনকে ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।

রোববার আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে এ আবেদনে ঢাকার পল্লবী থানার সাবেক চার পুলিশ সদস্যের বিষয়ে আদেশও স্থগিত চাওয়া হয়েছে।

তবে চেম্বার আদালত রোববার এ বিষয়ে কোনো আদেশ দেয়নি।

মাদক মামলায় শাহাবুদ্দিন বিহারি নামে একজনের ১০ বছরের কারাদণ্ড হয়েছিল। তার বদলে আসামি হিসেবে চার বছরেরও বেশি সময় কারাগারে ছিলেন আরমান।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত। চার পুলিশ সদস্যের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী। আরমানের পক্ষে ছিলেন রুহুল কুদ্দুস কাজল। সঙ্গে ছিলেন হুমায়ন কবির পল্লব।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত নিউজবাংলাকে বলেন, চেম্বার বিচারপতি নূরুজ্জামানের আদালত চার পুলিশ সদস্যদের বিষয়ে কোনো স্থগিতাদেশ দেননি। তাদেরকে সিপি (লিভ টু আপিল) করতে বলেছেন।

অন্যদিকে ক্ষতিপূরণ স্থগিত চেয়ে আবেদনটি নট টু ডে (আজ নয়) করেছেন।

গত বছরের ১৮ এপ্রিল একটি জাতীয় দৈনিকে ‘কারাগারে আরেক জাহালম’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। হাইকোর্টের হস্তক্ষেপে তিনি কারামুক্ত হন।

নিউজবাংলার এই প্রতিবেদকের অনুসন্ধানে জানা যায়, মামলা তদন্তের সময় এজাহারে মূল আসামি শাহাবুদ্দীন বিহারির নামের পাশে ওরফে আরমান লেখা হয়। আর শাহাবুদ্দীনের বাবার নাম মহিউদ্দীন হলেও তার জায়গায় আরমানের বাবার নাম প্রয়াত ইয়াসিন জুড়ে দেয়া হয়।

এতে জড়িত ছিলেন তৎকালীন ডিবির এসআই সিরাজুল ইসলাম ও নূরে আলম সিদ্দীকী এবং পল্লবী থানার এসআই মো. রাসেল। আরমানকে আটকের সময় পল্লবী থানার ওসি ছিলেন দাদন ফকির।

গত ৩১ ডিসেম্বর আরমানের আটকাদেশ অবৈধ ঘোষণা করে তাকে মুক্তি দেয়ার নির্দেশ দিয়ে রায় দেয় বিচারপতি মো. মুজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহিউদ্দীন শামীমের হাইকোর্ট বেঞ্চ।

রায়ে আরমানকে ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ারও নির্দেশ দেয়া হয়।

উচ্চ আদালতের রায়ে বলা হয়, ‘এটা কোন নিছক দুর্ঘটনা নয়। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী পুলিশ এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এই ব্যর্থতা সংশ্লিষ্ট গুটিকয়েক পুলিশ সদস্যের নয়, এটা পুলিশ প্রশাসনের সামগ্রিক ব্যর্থতা।’

এই ঘটনায় অভিযুক্ত চার পুলিশ সদস্যকে তাদের বর্তমান কর্মস্থল থেকে সরিয়ে ‘কম গুরুত্বপূর্ণ জায়গায়’ বদলি এবং ঘটনা তদন্তে পুলিশের পক্ষ থেকে কমিটি গঠন করার আদেশও দেয়া হয়।

তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়।

২০১৬ সালের ২৭ জানুয়ারি সকালে রাজধানীর মিরপুরের পল্লবীর বিহারি ক্যাম্প এলাকার নিজ বাসার সামনে থেকে পুলিশের মাদকবিরোধী অভিযানে আটক হন আরমান। কিন্তু তাকে মাদক কারবারি ও সাজাপ্রাপ্ত আসামি শাহাবুদ্দীন বিহারি হিসেবে দেখিয়ে জেলে পাঠানো হয়।

২০০৫ সালে ৪০ বোতল ফেনসিডিলসহ আটক হন ‍মিরপুর বিহারি ক্যাম্পের শাহাবুদ্দিন বিহারি ও তার দুই সহযোগী। সেই মাদক মামলায় ২০০৭ সালের ৫ মার্চ জামিনে মুক্ত হন শাহাবুদ্দিন।

২০১১ সালের ১৭ জানুয়ারি আদালতে আত্মসমর্পণ করে আবার জামিন আবেদন করেন তিনি। এতেও জামিন মেলে তার। এরপর ফেরারি হয়ে যান শাহাবুদ্দিন।

২০১২ সালের ১ অক্টোবর মামলায় শাহাবুদ্দিন ও তার দুই সহযোগীর ১০ বছর জেল ও ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা হয়। রায় অনুযায়ী পলাতক শাহাবুদ্দিনকে ধরতে জারি হয় পরোয়ানা।

চার বছর পর সেই পরোয়ানায় পল্লবী থানার এসআই রাসেল গ্রেপ্তার করেন বিহারি ক্যাম্পের বেনারসি কারিগর আরমানকে। এরপর চার বছর অন্য আসামির সাজা খাটছেন তিনি।

এ বিভাগের আরো খবর