রাজধানীতে রিকশা, ভ্যান, ঘোড়ার গাড়ির মতো অযান্ত্রিক বাহনের নিবন্ধন বন্ধ হয়েছিল ১৯৮৬ সালে। এর ৩৪ বছর পর এসব বাহনের নিবন্ধন দেয়া শুরু করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)।
শনিবার নগর ভবনে রাজধানীতে চলাচলকারী দুই লাখ ১২ হাজার অযান্ত্রিক বাহনের নিবন্ধন কার্যক্রম উদ্বোধন করেন ডিএসসিসির মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।
মেয়র জানান, ঢাকার ৪০ ভাগ মানুষ হেঁটে বা রিকশায় যাতায়াত করে। ১৯৮৬ সালের পর থেকে ঢাকায় অযান্ত্রিক বাহন চলাচলের নিবন্ধন দেয়া বন্ধ রয়েছে। তখন ৮৬ হাজার অযান্ত্রিক যানবাহন চলাচলের নিবন্ধন দেয়া হয়। পরে ঢাকা বিভক্ত হয়ে গেলে দক্ষিণের আওতায় আসে ৫২ হাজার আর উত্তরের আওতায় ২৬ হাজার অযান্ত্রিক বাহন।
তাপস বলেন, ‘৮৬ সালের পর আর নিবন্ধন হয়নি। আমাদের একটা শঙ্কা ছিল, আমরা কত নিবন্ধন দিতে পারব। তবে আমরা লক্ষ করেছি, এর মধ্যে অনেকগুলো যান্ত্রিক বা ব্যাটারিচালিত অবৈধ রিকশা ও অন্যান্য যানবাহন সিটির মধ্যে ঢুকে পড়েছে। তাই আমরা যতগুলো আবেদন জমা পড়েছে সব নিবন্ধন দেব।’
রিকশা ঐতিহ্যের অংশ। তাই ঢাকা শহরে রিকশা থাকবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ডিএসসিসি মেয়র বলেন, ‘নিবন্ধনের মাধ্যমে অযান্ত্রিক বাহন চলাচলকে একটা নিয়মের মধ্যে নিয়ে আসব। এর ফলে আমাদের সচল ঢাকার কার্যক্রম শুরু হবে।
‘ব্যাটারিচালিত যেসব বাহন আছে, তাদের সময় দিয়েছি, এর মধ্যে যদি ব্যাটারি খুলে না ফেলে তবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’
ডিএসসিসি জানায়, লাইসেন্স না থাকলেও অযান্ত্রিক অবৈধ এসব বাহনের চলাচল বন্ধ করা যাচ্ছে না। তাই এগুলোকে নিবন্ধন দেয়ার পাশাপাশি শৃঙ্খলার মধ্যে এনে পরিচালনা করা হবে।
দুই সিটি করপোরেশনের তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীতে লাইসেন্স থাকা রিকশা ও রিকশাভ্যানের সংখ্যা ৭৯ হাজার ৫৫৪টি। যদিও বাস্তবে চলাচল করছে প্রায় ১১ লাখ।
এ বিষয়ে মেয়র তাপস বলেন, ‘আমরা এই দুই লাখ নিবন্ধন দিচ্ছি। এর বাইরে যারা ডিএসসিসির মধ্যে চলাচল করবে, তাদের অবৈধ ঘোষণা করা হবে।’
ডিএসসিসির প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা গত বছরের সেপ্টেম্বর ও ডিসেম্বরে নিবন্ধন প্রক্রিয়ার জন্য অনলাইনে আবেদন করতে বলি। তখন আমাদের কাছে দুই লাখ ১২ হাজার আবেদন আসে।
‘এর মধ্যে বেশিরভাগ রিকশা। তবে অন্যান্য যেমন: ঘোড়ার গাড়ি, ঠ্যালা গাড়ি ও ভ্যান এর অন্তর্ভুক্ত হবে।’
তিনি আরও বলেন, “আমরা দুই লাখ ১২ হাজার বাহনকে নিবন্ধন দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। রোববার থেকে প্রতিদিন পাঁচ হাজার করে নিবন্ধন কার্ড দেয়া হবে।
‘আমরা যে নিবন্ধন কার্ড ও নম্বর প্লেট দেব, তা কখনোই নকল করা যাবে না। কারণ এখানে একটি ‘কিউ আর কোড’ ও ‘হলোগ্রাম’ সংযুক্ত করা হয়েছে।”