কৃষি আইনের বিরোধীতায় ভারতের দিল্লিতে আন্দোলনে থাকা কৃষকদের জন্য কম্বল পাঠাতে চেয়ে ঢাকায় দেশটির হাইকমিশনাকে আবার চিঠি দিয়েছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।
রোববার দুপুর সাড়ে ১২টায় বারিধারায় ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামীর অফিসে চিঠি পৌঁছে দেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের গণমাধ্যম উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু।
এর আগে গত ২৪ ডিসেম্বর দিল্লিতে শীতার্ত কৃষকদের জন্য কম্বল পাঠাতে চেয়ে চিঠি দিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি। আগের চিঠিটি ছিল গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরীর। কিন্তু ওই চিঠির কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।আরও পড়ুন: নয়াদিল্লির কৃষকদের জন্য মন খারাপ জাফরুল্লাহর
ভারতীয় হাইকমিশনে এবারের পাঠানো চিঠিটি জাহাঙ্গীর আলম মিন্টুর স্বাক্ষর করা।
আগের চিঠির সাড়া পাওয়া যায়নি জানিয়ে এবারের চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘দিল্লীতে শীতার্ত কৃষকদের জন্য হাতে বোনা ২০০০ কম্বল গ্রহণের জন্য দয়া করে আমাদেরকে একটি তারিখ প্রদান করে বাধিত করবেন। আমরা অত্যন্ত ব্যথিত যে, শীতে ইতিমধ্যে ৪৪ জন কৃষক মারা গেছে জানতে পেরে।’
ভারতীয় হাইকমিশনে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিঠি হস্তান্তর। ছবি: নিউজবাংলা
সম্প্রতি ভারতের আইনসভায় কৃষি সংক্রান্ত তিনটি সংস্কার আইন পাশ করা হয়। নতুন আইনে দেশটির কৃষি কার্যক্রমে ব্যক্তিমালিকানা প্রতিষ্ঠা হবে বলে মনে করছে কৃষকেরা।
নতুন আইনের ফলে কৃষকদের শঙ্কা তাদের কাছ থেকে ন্যায্যমূল্যে ফসল কিনতে সরকার যেমন বাধ্য থাকবে না, তেমনি বাজারের ওপর নিয়ন্ত্রণও থাকবে না। দাম-দর নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা চলে যাবে কোম্পানিগুলোর হাতে। এতে কোম্পানিগুলোর দয়ার ওপর নির্ভরশীল হয়ে যেতে পারে তাদের জীবন।
আইনগুলো পাশের আগে থেকেই এর বিরোধিতা করে আসছিল ভারতের কৃষক সমাজ। আইন পাশের পর নভেম্বরের শেষ দিকে আন্দোলন করে যাচ্ছে তারা। হাজার হাজার কৃষক মিছিল করে রাজধানী নয়াদিল্লিতে অবস্থান নিয়েছে।
আন্দোলন থামাতে সরকার নানা প্রস্তাব দিলেও বিতর্কিত কৃষি আইন প্রত্যাহার ছাড়া কোনো আশ্বাসেই রাজি হচ্ছে না কৃষকেরা। খোলা আকাশের নিচে তীব্র শীতে চরম দুর্দশায় পড়েছেন তারা।আরও পড়ুন: দিল্লির কৃষকদের কম্বল পাঠাতে ভারতকে জাফরুল্লাহর চিঠি
কম্বল দিয়ে আন্দোলনরত কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে চান গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ ও যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে চিকিৎসা খাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা এই ব্যক্তিত্ব ভারতের কট্টর সমালোচক হিসেবেও পরিচিত।
ভারতীয় হাইকমিশনে ২৪ ডিসম্বর পাঠানো চিঠিতে মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সহায়তার প্রসঙ্গও তুলে ধরেন জাফরুল্লাহ।
বলেছিলেন, ‘পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের উদার সহযোগিতার জন্য আমরা ভারতের জনগণের কাছে কৃতজ্ঞ। স্বাধীনতা যুদ্ধে সহযোগিতার কৃতজ্ঞতা স্বরুপ নয়াদিল্লিতে শীতার্ত কৃষকদের জন্য বাংলাদেশের গ্রামীণ তাঁতীদের হাতে তৈরী ২০০০ কম্বল দিতে চাই।’