সিলেটের মুরারী চাঁদ (এমসি) কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে রেখে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলায় অভিযোগ গঠন আবারও পিছিয়েছে।
বাদীপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ১৩ জানুয়ারি অভিযোগ গঠনের নতুন তারিখ ঠিক করেছে আদালত।
সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহিতুল হকের আদালত রোববার সকালে এ সিদ্ধান্ত জানায়।
এর আগে মামলার আট আসামিকে আদালতে হাজির করে পুলিশ।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রাশিদা সাইদা খানম নিউজবাংলাকে জানান, রোববার এ মামলার অভিযোগ গঠনের তারিখ থাকলেও আসামিপক্ষ দুই দিন বেশি সময় চেয়ে আবেদন করে। বিচারক আবেদন আমলে নিয়ে সময় বাড়িয়ে দেয়।
তিনি বলেন, ‘আসামি তারেকুল ইসলামের আইনজীবী তার জামিনের আবেদন করলেও আদালত তা নাকচ করে।’
গত ৩ জানুয়ারি এ মামলার অভিযোগ গঠনের তারিখ পিছিয়ে রোববার নির্ধারণ করা হয়েছিল।
ওই দিন ছাত্রলীগের আট নেতাকর্মীকে অভিযুক্ত করে আদালতে এ মামলার অভিযোগপত্র জমা দেয় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহপরান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য।
অভিযোগপত্রে সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, তারেকুল ইসলাম তারেক, অর্জুন লস্কর, আইনুদ্দিন ওরফে আইনুল ও মিসবাউল ইসলাম রাজন মিয়াকে ধর্ষণে সম্পৃক্ত এবং রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান মাসুমকে ধর্ষণের সহযোগী হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়েছে। আসামিরা সবাই কারাগারে আছেন।
২৫ সেপ্টেম্বর রাতে সিলেটের বালুচর এলাকার এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন এক গৃহবধূ। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বন্ধ থাকা ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে রেখে তাকে ধর্ষণ করা হয়।
ওই রাতেই ওই নারীর স্বামী ছয় জনের নামে ও অজ্ঞাতপরিচয় কয়েক জনকে আসামি করে নগরীর শাহপরান থানায় মামলা করেন।
ঘটনার পর পালিয়ে গেলেও তিন দিনের মধ্যে সিলেটের বিভিন্ন স্থান থেকে এজাহারভুক্ত আসামি সাইফুর রহমান, তারেকুল ইসলাম তারেক, মাহবুবুর রহমান রনি, অর্জুন লস্কর, রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান মাসুম এবং সন্দেহভাজন আসামি মিসবাউর রহমান রাজন ও আইনুদ্দিনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তারের পর সবাইকে পাঁচ দিন করে রিমান্ডে পায় পুলিশ। রিমান্ড শেষে সবাই আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
কোনো পদে না থাকলেও গ্রেপ্তার হওয়া সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত বলে স্থানীয় ও কলেজ সূত্রে জানা যায়।
ওই ঘটনার পর দেশজুড়ে ধর্ষণবিরোধী তীব্র আন্দোলন শুরু হয়। ধর্ষণের ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে আইনও সংস্কার করে সরকার।