বয়স ১০ থেকে ১৩। রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর এলাকায় দল বেঁধে ঘুরে বেড়ায় তারা। রাস্তায় হাঁটার সময় অন্য এক কিশোরের সঙ্গে গায়ে ধাক্কা লাগে এই দলের একজনের।
তর্ক বিতর্কের এক পর্যায়ে ১৪ বছর বয়সী ওই কিশোরকে মারধোর করে তারা। একজন আবার পেটে মারে বুকে, কোমরে।
রক্তক্ষরণ হচ্ছিল কিশোরটির। এক ভ্যান চালকের দেখে মায়া হয়। তিনি তাকে নিয়ে ছুটে যান হাসপাতালে।
প্রথমে কিশোরটিকে নেয়া হয় মিটফোর্ড হাসপাতালে। অবস্থা গুরুতর দেখে চিকিৎসক নিতে বলেন ঢাকা মেডিক্যালে। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ছেলেটির নাম সিফাত। জন্মের পরে বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ হয়ে যাওয়ায় কামরাঙ্গীরচরে নানা-নানির সঙ্গে থাকত সে। কাজ করত জুতা কারখানায়।
পুলিশ জানায়, এই খুনের ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে। কিশোরটির নানা মামলা করেন ছয় জনের বিরুদ্ধে। শনিবার ভোর পাঁচটার দিকে কামরাঙ্গীরচরেরই ইব্রাহিমনগর বালুর মাঠ এলাকা থেকে ছয় জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
যাদেরকে ধরা হয়েছে তাদের মধ্যে সবচেয়ে ছোট দুই জনের বয়স ১০। তিন জনের বয়স ১২ আর সবচেয়ে বেশি বয়স একজনের, ১৩।
পুলিশ জানায়, এদের কাছ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত একটি সুইচ গিয়ার চাকু উদ্ধার করা হয়।
কামরাঙ্গীরচর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোস্তফা আনোয়ার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শুক্রবার সন্ধ্যায় করিমাবাদ সরকার বাড়ী এলাকায় গ্রেপ্তারকৃতদের সঙ্গে সিফাতের গায়ে ধাক্কা লাগাকে কেন্দ্র করে বাকবিতণ্ডা হয়। ঝগড়া শেষে সে ইব্রাহিমনগর বালুর মাঠ বরিশাইল্যা গলিতে গেলে সেখানে আরেক দফা বাকবিতণ্ডা হয়।
‘এক পর্যায়ে সিফাতকে মারপিট ও ছুরিকাঘাত করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে পড়ে থাকতে দেখে এক ভ্যানচালক তাকে হাসপাতালে নেন।’
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সিফাত লালগুদাম তারা মসজিদ সংলগ্ন ফজলুল হকের কার্টুনের কারখানায় শ্রমিকের কাজ করত। জন্মের পর তার মা অন্যত্র চলে যায় এবং বাবা আরেকটি বিয়ে করেন। তখন থেকে সে নানা-নানির কাছে বড় হচ্ছিল।
গ্রেপ্তার করা ছয় কিশোরকে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান ওসি।