বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিতর্কিতরা আবার সিলেট আ. লীগের কমিটিতে

  •    
  • ৯ জানুয়ারি, ২০২১ ১৬:০৪

গত ৮ জানুয়ারি সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের ৭৫ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন করা হয়েছে। এই কমিটিতে স্থান পাওয়া একাধিক নেতা নানা সময় নেতিবাচক সংবাদের শিরোনাম হয়ে আলোচিত হয়েছেন।

সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার লোভাছড়া পাথর কোয়ারি থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন ও পরিবেশ ধ্বংসের ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে মোস্তাক আহমদ পলাশের বিরুদ্ধে। গত অক্টোবরেই জেলা প্রশাসন লোভাছড়ায় অভিযান চালিয়ে পলাশের অবৈধভাবে মজুদ করা কোটি টাকার পাথর জব্দ করে।

পলাশ সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের নতুন পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছেন। আগের কমিটির উপপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ছিলেন তিনি।

গত বছরের এপ্রিল পর্যন্ত চার বছর লোভাছড়া পাথর কোয়ারির ইজারাদার ছিলেন এই নেতা।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন, সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম বলেন, কোয়ারি থেকে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে বা হাতে পাথর উত্তোলনের নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু পলাশ তা না করে পরিবেশ বিধ্বংসী বোমা মেশিন ব্যবহার করেন। যার ফলে সীমান্তবর্তী লোভা নদী ও তীরবর্তী এলাকার পরিবেশ ব্যাপকভাবে বিপর্যস্ত হয়েছে।

গত ৮ জানুয়ারি সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের ৭৫ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন করা হয়েছে।

এর প্রায় এক বছর আগে ২০১৯ সালের ৫ নভেম্বর কাউন্সিলের মাধ্যমে এই দুই কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়।

শুক্রবার দুই পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকা প্রকাশের পরপরই সাম্প্রতিক বিভিন্ন ঘটনা ও কর্মকাণ্ডে সমালোচিত হওয়া কয়েক জন নেতার গুরুত্বপূর্ণ পদে স্থান পাওয়া নিয়ে ক্ষোভ দেখা দেয়।

গত বছরের সেপ্টেম্বরে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী মুরারী চাঁদ (এমসি) কলেজ ছাত্রাবাসে ছাত্রলীগ কর্মীদের সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন এক তরুণী। এই ঘটনার পর আবারও আলোচনায় আসে নগরের টিলাগড়কেন্দ্রীক সন্ত্রাসী কার্যক্রম এবং সন্ত্রাসীদের প্রশ্রয়দাতাদের বিষয়টি।

ওই সময় টিলাগড় এলাকার ক্ষমতাসীন দলের দুই নেতা আজাদুর রহমান আজাদ এবং রণজিৎ সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ-যুবলীগ কর্মীদের নিয়ে দুটি বলয় গড়ে আধিপত্য বিস্তারের বিষয়টি আলোচনায় আসে।

এ ঘটনার পর সিলেটে নবগঠিত নাগরিক মোর্চা ‘দুষ্কাল প্রতিরোধে আমরা’ টিলাগড় এলাকায় লাল পতাকা উত্তোলন করে ‘গডফাদার’ মুক্তির দাবি জানায়।

ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে ক্ষোভের মুখে আওয়ামী লীগ নেতারাও টিলাগড় এলাকার ছাত্রলীগ কর্মীদের প্রশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন।

কিন্তু সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের আগের কমিটিতে শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক ও সিটি কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদকে নতুন মহানগর কমিটিতে যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে।

আর আগের জেলা কমিটির যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক রণজিৎ সরকার নতুন জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছেন।

‘দুষ্কাল প্রতিরোধে আমরা’-র সংগঠক রাজীব রাসেল বলেন, ‘এমসি কলেজে ধর্ষণের ঘটনার পর সারা সিলেট জুড়েই যখন ওই এলাকার গডফাদারদের চিহ্নিত করে বিচারের দাবি ওঠেছে, তখন ক্ষমতাসীন দলের কমিটিতে তাদের পুরস্কৃত করা হয়েছে। এটা আওয়ামী লীগ সম্পর্কে জনগণকে ভুল বার্তা দেবে।’

গত ১১ ডিসেম্বর সিলেটের হরিপুরে বন্যপাখির মাংসে ভূরিভোজ করে সমালোচিত হয়েছিলেন সিলেটের পাঁচ সিটি কাউন্সিলর। তাদের মধ্যে ইলিয়াছুর রহমান ইলিয়াসকে মহানগর কমিটির শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক এবং তৌফিক বক্স লিপন ও রকিবুল ইসলাম ঝলককে একই কমিটির সদস্য করা হয়েছে।

পরিবেশবাদী সংগঠন ‘ভূমিসন্তান বাংলাদেশের’ সমন্বয়ক আশরাফুল কবীর মনে করেন, পরিবেশ ও প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংসের ঘটনায় যারা অভিযুক্ত তাদের পদপদবি দিয়ে পরিবেশের ধ্বংসকেই বরং উৎসাহিত করেছে আওয়ামী লীগ।

তিনি বলেন, ‘রাজনীতিতে এখন স্বচ্ছ ভাবমূর্তির মানুষেরা কোণঠাসা ও দুর্বৃত্তরা মূল্যায়িত হচ্ছে। এতে করে রাজনীতিই কলুষিত হচ্ছে।’

তবে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ মনে করেন, নতুন অনুমোদন পাওয়া কমিটি আগের কমিটিগুলোর তুলনায় অনেক স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘রাজনীতি করলে কিছু অভিযোগ-সমালোচনা থাকেই। সব অভিযোগের সত্যতাও সবসময় থাকে না।’

এ বিভাগের আরো খবর