করোনাভাইরাস সংকটের মধ্যে অভিভাবকদের বাসায় থাকার প্রবণতা বাড়লেও নিশ্চিত করা যাচ্ছে না শিশুদের নিরাপত্তা। থামছে না শিশু ধর্ষণ, নির্যাতন।
জনজীবনে স্থবিরতা মধ্যেও ২০২০ সালে সারাদেশে মোট ৬২৬ শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১৪ শিশুর। ধর্ষণের শিকার এর মধ্যে ১০ জন ছেলে শিশু।
শনিবার ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে আয়োজিত ‘শিশু পরিস্থিতি রিপোর্ট ২০২০, পত্র পত্রিকার পাতা থেকে’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন।
মুল প্রবন্ধে বলা হয়, গত বছর ধর্ষণ চেষ্টার মুখে পড়েছে আরও ৩৭ শিশু। যৌন নির্যাতনের স্বীকার হয়েছে ১৬ জন। এ সময় বাল্য বিয়ের সংখ্যা ১০১টি।
প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, করোনার কারণে শিশুরা ঘরে থাকলেও তাদের ওপর নির্যাতন কমেনি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পরিবারের সদস্য বা প্রতিবেশীদের মাধ্যমেই শিশুরা নির্যাতনের স্বীকার হয়েছে।
ফাউন্ডেশনের গবেষক রাফিজা কাওসার মৌসুমী বলেন, ‘পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমেই শিশুরা ধর্ষণের স্বীকার হচ্ছেন। অনেক ক্ষেত্রে ধর্ষণের স্বীকার শিশুর বিষয় নিয়ে আলোচনা হলেও ধর্ষকের মনোবৃত্তি নিয়ে কোনো আলোচনা হয় না। এটা নিয়ে সামাজিক সচেতনতা প্রয়োজন।’
শিশু নির্যাতন কমাতে সমাজের প্রতিটি স্তরে সচেতনতা বাড়ানোর তাগিদ মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের। শিশু অধিকার বিষয়ক পৃথক একটি অধিদপ্তর করতে সরকারের প্রতি আহ্বান তাদের।
শিশু নির্যাতনের প্রকৃত চিত্র আরও ভয়াবহ হতে পারে বলে মনে করেন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম।
‘মুলত আটটি পত্রিকা থেকে নির্যাতনের এ তথ্যগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে। কিন্তু সব ক্ষেত্রে ঘটনাগুলো পত্রিকায় আসে না।’
শাহীন আনাম বলেন, ‘করোনার জন্য একটি ইউনিক সময় আমরা কাটাচ্ছি, সেটাকে অন্য কোনো বছরের সঙ্গে তুলনা করা যায় না। তারপরও আমরা দেখছি বাড়িতে থাকার পরেও কিন্তু অনেক শিশু অত্যাচার নিপীড়নের মুখে পড়েছেন।
‘জরিপে দেখা যাচ্ছে এ সময় বাল্যবিবাহ অনেক বেড়ে গেছে। সবচেয়ে বড় বিষয় সেখানে একজন শিশুর সবচেয়ে নিরাপদ থাকার কথা সেখানেও তাকে আমরা নিরাপদ রাখতে পারিনি।’
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের তথ্যে বলা হয়, ২০১৯ সালে সারাদেশে শিশু ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছিল ৯৫৬টি।