অভিনেত্রী আশা চৌধুরীকে চাপা দেয়া সেই ট্রাকচালককে ধরতে থানা পুলিশের পাশাপাশি কাজ করছে গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। শিগগিরই তাকে গ্রেপ্তারের আশা করছে পুলিশ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রাজধানীর দারুসসালাম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সোহান আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা আজ (শুক্রবার) সেই ট্রাক ও ট্রাকচালকের খোঁজে সাভারের আশুলিয়া অবধি গিয়েছিলাম। আশা করছি, দুই/এক দিনের মধ্যেই আমরা চালককে গ্রেপ্তার করতে পারব।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পাশাপাশি ডিবি ও সিআইডি কাজ করছে। সবার মিলিত চেষ্টায় বেশি দিন পালিয়ে বেড়াতে পারবেন না ওই ট্রাকচালক।’
ডিবি মিরপুর বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মানস কুমার পোদ্দার বলেন, ‘এ ঘটনায় মামলা হয়েছে দারুসসালাম থানায়। এক জনকে গ্রেপ্তারও করেছে তারা। আমরা এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করি নাই। আমাদের কাছে কোনো মামলা আসে নাই। তবে এই ঘটনায় আমরা ট্রাকচালককে আটক করার জন্য ছায়া তদন্ত চালাচ্ছি।’
সিআইডির সিনিয়র এএসপি (মিডিয়া) জিসানুল হক জিসান বলেন, ‘আমরা প্রচার করে কোনো কাজ করি না। তবে গ্রেপ্তার হলে অবশ্যই প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে জানাব।’
এদিকে অভিনেত্রী আশার বাবা আবু কালাম শুক্রবার নিউজবাংলাকে বলেন, চার দিন হয়ে গেল, এখনও তারা ট্রাকচালককে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
কথা বলার এক পর্যায়ে কেঁদে ফেলেন তিনি। বলেন, ‘আমি আগে চাঁদনী চকে কাপড়ের ব্যবসা করতাম। লকডাউনে ব্যবসা লস হওয়ায় বেকার হয়ে পড়ি। আমার মেয়ের উপার্জনেই আমাদের সংসার চলত। এখন কীভাবে সংসার চলবে উপর ওয়ালাই জানে।’
রাজধানীর মিরপুরের পলিটেকনিক্যাল মোড় থেকে গত ৫ জানুয়ারি রাতের প্রথম প্রহরে অভিনেত্রী আশা চৌধুরীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সোহান আহমেদ বলেছিলেন, ‘গত ৫ তারিখ রাতে টেকনিক্যাল মোড়ে আনুমানিক দেড়টা থেকে দুইটার মাঝে একটা সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। লাশের কাছে গিয়ে দেখি একটা ছেলে আছে সঙ্গে।
‘পরবর্তীতে আশার পরিবার আসে এবং আমি তাদের সব বুঝিয়ে দেই। তদন্ত করতে গিয়ে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে জানতে পারি মোটরবাইকের সামনে একটা কাভার্ড ভ্যান ছিল। পেছন থেকে বড় একটি ট্রাক আশাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটা একটি সড়ক দুর্ঘটনা।’
এসআই সোহান আহমেদ আরও বলেন, ‘আমরা যে সিসিটিভি ফুটেজটা পেয়েছি, সেটা স্পষ্ট না। তাই ট্রাক ও ট্রাকচালক খুঁজতে আমাদের সময় লাগছে।’
আশার বাবা এ ঘটনায় মামলা করেছেন দারুসসালাম থানায়। মামলায় সন্দেহভাজন আসামি করা হয়েছে আশাকে মোটরবাইকে বহনকারী শামীম আহমেদকে। এ ছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় কয়েক জনকে আসামি করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন আশা। অভিনয় ও লেখাপড়ার পাশাপাশি তিনি বায়িং হাউসে চাকরি করতেন।
আশা রূপনগর আবাসিক এলাকার ২১ নম্বর রোডের ৩৭ নম্বর বাসায় সপরিবারে থাকতেন। শামীমের বাসা কল্যাণপুরে।