সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে কানাডায় পালিয়ে যাওয়া ব্যাংকার প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করেছে ইন্টারপোল।
বাংলাদেশ পুলিশের অনুরোধে আন্তর্জাতিক পুলিশি সংস্থা এই পদক্ষেপ নিয়েছে বলে বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন পুলিশ সদরদপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) সোহেল রানা।
তিনি জানান, এই অ্যালার্ট জারি হওয়ায় পি কে হালদারকে গ্রেপ্তার করে দেশে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে সুবিধা হবে। তিনি যে দেশে আছেন, সে দেশের পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে বাংলাদেশকে বুঝিয়ে দেবে।
নিউজবাংলাকে সোহেল রানা বলেন, ‘পি কে হালদারের সম্ভাব্য অবস্থান আমরা উল্লেখ করে দিয়েছি। সে অনুযায়ী ইন্টারপোল তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করবে।’
তিনি বলেন, ‘আসামির অবস্থান পরিবর্তন করার সম্ভাবনা রয়েছে। সে কারণে ইন্টারপোল এই রেড নোটিশ তাদের সব শাখার পাঠিয়েছে। যেখানে তার অবস্থান পাওয়া যাবে, সেখানেই গ্রেপ্তারের ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
পি কে হালদার বর্তমানে কানাডায় অবস্থান করছেন। গত ডিসেম্বরে তিনি দেশে আসার অনুমতি চেয়ে উচ্চ আদালতে আবেদন করেন। আবেদনে তিনি দেশে এলে যেন গ্রেপ্তার করা না হয়, সে অনুরোধ রাখেন। তবে হাইকোর্ট তাকে দেশে আসার অনুমতি দিলেও দেশে ফেরামাত্র গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেয়। পরে তিনি আর দেশে ফেরেননি।
পুলিশের এআইজি সোহেল রানা জানান, আগামী পাঁচ বছরের জন্য জারি থাকবে। তবে, প্রয়োজনে আবেদনের প্রেক্ষিতে তা নবায়নযোগ্য।
পি কে হালদারকে গ্রেপ্তার করতে সরকার কী পদক্ষেপ নিয়েছে, হাইকোর্টের এমন জিজ্ঞাসার পর পুলিশ ইন্টারপোলে রেড অ্যালার্ট জারির আবেদন করে।
সোহেল রানা জানান, ইন্টারপোলের একটি বিশেষ কমিটি তাদের করা আবেদন ও নথিপত্র পর্যালোচনা করে আবেদনটি অনুমোদন করে। ইন্টারপোলের কেন্দ্রীয় ওয়েবসাইটে প্রকাশের পাশাপাশি সারাবিশ্বে বিভিন্ন দেশে ইন্টারপোলের শাখাগুলোতেও তা পাঠানো হয়।
পি কে হালদারের বিরুদ্ধে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং থেকে বিভিন্ন কৌশলে দেড় হাজার কোটি এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকে আরও দুই হাজার কোটি টাকা বের করে বিদেশে পাচারের অভিযোগ আছে।
গত বছরের শুরুতে পি কে হালদার বিদেশে পালিয়ে যান বলে তথ্য পাওয়া যায়। এরপর তার পাসপোর্ট, সম্পত্তি জব্দ করা হয়। ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইএলএফএসএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক থেকে তাকে অপসারণও করা হয়।
পি কে হালদারের আত্মসাৎ করা টাকা উদ্ধারে সম্প্রতি হাইকোর্টে গেছেন ভুক্তভোগী বেশ কয়েকজন। তারা ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ে টাকা লগ্নি করে আর ফেরত পাচ্ছেন না।
দুর্নীতি দমন কমিশন সম্প্রতি এই ব্যাংকারকে সহযোগিতা করার অভিযোগে এক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেছে। তার বান্ধবীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ পাঠানো হয়েছিল- এমন তথ্যও পেয়েছে দুদক। তবে তাকে এখনও গ্রেপ্তার করা যায়নি।