পুলিশে ব্রুটালিটি বা নিষ্ঠুরতা চান না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ।
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) আয়োজিত বার্ষিক সাধারণ সভা-২০২০ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘তথ্য আদায়ে অনেকগুলো আইনগত ক্ষমতা পুলিশের রয়েছে। তবে পেশীশক্তির পরিবর্তে আইনের শক্তি প্রয়োগ করতে হবে।’
পেশীশক্তির ব্যবহার থেকে পুলিশ বেরিয়ে আসতে চায় বলেও জানান আইজিপি।
পুলিশের দুর্নীতির বিষয়ে কাজ করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শুরুতে মোটিভেশনাল অ্যাক্টিভিটিস এবং ডিসিপ্লিন নিয়ে কাজ করছি। আর দ্বিতীয় হচ্ছে পুলিশে ব্রুটালিটি বা নিষ্ঠুরতা আমরা চাই না। আমরা চাই না পত্রপত্রিকায়ও পুলিশ ব্রুটালিটি নিয়ে খবর ছাপা হোক। আমরা খবর হতে চাই না।’
তিনি বলেন, পুলিশের কাছে আইনগত ক্ষমতা রয়েছে। যেখানে আইনগত ক্ষমতা রয়েছে, তাহলে কেন পেশীশক্তি ব্যবহার করতে হবে। মাথা ও বিবেকের শক্তি, আইনের শক্তি প্রয়োগ করতে হবে। কেন পেশী শক্তি? রাষ্ট্র অসংখ্য আইনের ক্ষমতা দিয়ে রেখেছে, সুতরাং পেশীশক্তি প্রয়োগের দরকার নেই।
তিনি আরও বলেন, ‘শারীরিক ক্ষমতা সেই প্রয়োগ করে, যার মানসিক ক্ষমতা নাই, আইনগত ক্ষমতা নাই এবং বুদ্ধির ক্ষমতা নাই। পুলিশ এ থেকে বেরিয়ে আসতে চায় ও আমরা তা নিয়ে কাজ করছি।’
আইজিপি বলেন, ‘পুলিশ সদস্যরা যদি পুলিশের বাইরে গিয়ে দায়িত্বের ঊর্ধ্বে থেকে কোনো অপকর্ম করেন, তবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে আমাদের মনোভাব অত্যন্ত কঠোর। বাংলাদেশ পুলিশের লক্ষ্য হচ্ছে অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা ব্যত্যয়ে শূন্য সহিষ্ণুতা।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মাদকের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘মাদকের বিরুদ্ধে আমরা কঠোরভাবে কাজ করছি। পুলিশের মধ্যে যদি কোনো মাদকসেবী থাকে, তাহলে তাকে বাহিনী থেকে বের করে দেয়া হচ্ছে। আমরা রেনডমলি ডোপ টেস্ট করছি। এর মধ্যে পুলিশের সব পর্যায়ের (র্যাংক) কর্মকর্তাদের ডোপ টেস্ট করা হচ্ছে। আমরা আমাদের ঘর পরিচ্ছন্ন করতে চাই। এ ছাড়াও কেউ মাদক সেবন করেন না, কিন্তু মাদকের সঙ্গে জড়িত, এমন পুলিশ সদস্যদের চিহ্নিত করে তাদেরও চাকরিচ্যুত করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রেও আমরা শূন্য সহিষ্ণুতা বাস্তবায়ন করতে চাই।’
করোনাভাইরাইসের সংক্রমণ মোকাবিলা প্রসঙ্গে আইজিপি বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘গত বছর আমরা সরকারের নির্দেশনায় ঐক্যবদ্ধভাবে করোনাকে মোকাবিলা করেছি, চলতি বছরেও আমরা একইভাবে করোনার মোকাবিলা করতে কাজ করছি। আমি বলতে পারি, পশ্চিমা বিশ্বে করোনা মোকাবিলায় হিমশিম খেয়েছে, কিন্তু আমাদের দেশে আধুনিক সব রিসোর্স না থাকা সত্ত্বেও, সরকারের নেতৃত্বে করোনা মোকাবিলা করতে পেরেছে, সেটা বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি পেয়েছে।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন র্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, ক্র্যাবের সভাপতি আবুল খায়ের, সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামানসহ কমিটির সদস্যরা। এ ছাড়াও ক্র্যাবের সাধারণ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।