রাজধানীর কলাবাগান এলাকায় ইংরেজি মাধ্যমের মেয়েটির মৃত্যুর কারণ অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এই ঘটনায় মেয়েটির বাবা ধর্ষণ ও হত্যা মামলা করার আগেই সন্দেহভাজন ফারদিন ইফতেখার দিহানকে আটক করে পুলিশ। পরে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
দিহানকে শুক্রবার দুপুরে আদালতে তোলা হয়েছে। তার আগেই তাকে পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার সাজ্জাদুর রহমান জানান, দিহান তাদেরকে বলেছেন, তার সঙ্গে মেয়েটির প্রেমের সম্পর্ক ছিল। শারীরিক মিলনের এক পর্যায়ে মেয়েটির রক্তক্ষরণ শুরু হয়। এতে মেয়েটি অজ্ঞান হয়ে যায়। পরে তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে তার মৃত্যু হয়েছে।
পুলিশের কাছে দেয়া আসামির এই বক্তব্যের অবশ্য কোনো আইনি ভিত্তি নেই। মামলার বিচারে আরও তথ্য প্রমাণ লাগবে। আনোয়ার খান মেডিক্যালের জনসংযোগ কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে জানান, মেয়েটিকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে তাদের কাছে আসার আগেই মৃত্যু হয়েছে মেয়েটির। ফাইল ছবি
পুলিশ কর্মকর্তা সাজ্জাদুর রহমান জানান, মামলাটির তদন্তের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য তারা জোগাড় করছেন।
মেয়েটির ভেজাইনাল সোয়াব নেয়া হয়েছে। সেটা প্রমাণ করবে যে তাদের দৈহিক মেলামেশা হয়েছে কি না।
সুরতহালে মেয়েটির শরীরে অন্য কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি জানিয়ে তিনি বলেন, স্বাভাবিক যৌন সম্পর্কের বাইরে আর কোনো কিছু করা হয়েছে কি না, সেটিও জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। এ জন্য ময়নাতদন্ত রিপোর্টের দিকে তাকিয়ে বাহিনীটি।
একমাত্র আসামি দিহান
দিহানকে রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করে আদালতে পাঠানোর কথা জানিয়ে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে এই ঘটনাটিকে অনেকে অন্যখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে। আমি তাদের বিনীতভাবে অনুরোধ করতে চাই, মেয়েটির পরিবার বুঝে-শুনে এই মামলা করেছে। তার পরেও যদি এর সঙ্গে অন্য কেউ থাকে তাহলে তাদেরও আইনের আওতায় আনার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।’
যে বাসায় এই ঘটনা ঘটেছে সেখানে দিহান ও তার মা থাকেন। তার ভাই একজন ব্যাংকার। তিনি মাঝে মাঝে আসেন। বাবা থাকেন রাজশাহীতে।
বৃহস্পতিবার দিহানের মা বগুড়ায় যান। এরপর মেয়েটিকে বাসায় নেয়া হয় বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা সাজ্জাদুর।
এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্যে জানা যাচ্ছে, মেয়েটির রক্তক্ষরণ শুরু হলে তাৎক্ষণিক তাকে চিকিৎসা দেয়া হয়নি।
মেয়েটির বাবার করা মামলায় বলা হয়েছে, বেলা একটা ১৮ মিনিটে মেয়ের মায়ের মোবাইল ফোনে কল আসে। ফারদিন ইফতেখার দিহান নিজের পরিচয় দিয়ে জানান, মেয়েটি অচেতন অবস্থায় পড়ে গেছে। তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে মেয়েটিকে বেলা একটা ২৫ মিনিটের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পৌনে দুইটার দিকে মারা যায় সে।