সাত বছর আগে বঙ্গবন্ধুকে কটূক্তির অভিযোগে নোয়াখালীতে করা এক মামলার বিচার শুরুর আদেশ দিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে গ্রেপ্তারের আদেশ এসেছে।
পুলিশের দেয়া প্রতিবেদন গ্রহণ করে অভিযোগ গঠনের শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার নোয়াখালীর জেলা ও দায়রা জজ আদালত-২ আদালতের বিচারক সৈয়দ ফখরুল আবেদিন এই আদেশ দিয়েছেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাজাকার, খুনি ও পাকবন্ধু বলে বক্তব্য দেয়ায় ২০১৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি নোয়াখালীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২ নং আমলি আদালতে মামলা করেন সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওমর ফারুক।২০১৪ সালের ডিসেম্বরে যুক্তরাজ্যে বিএনপির এক আলোচনায় ওই বক্তব্য দেন তারেক।
মামলাটি আমলে নিয়ে চরজব্বর থানাকে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন বিচারক। উপপরিদর্শক আনোয়ার হোসেন ভূঁঞা ২০১৭ সালের ৪ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
নোয়াখালীর অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর দেব প্রিয় চক্রবর্তী নিউজবাংলাকে জানান, আগামী ৩১ মার্চ এ মামলার বিচার শুরু হবে। আদালত বাদীকে সেদিন সাক্ষ্য দিতে হাজির হতে বলেছে।
মামলায় নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খায়রুল আনম চৌধুরী, সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হানিফ চৌধুরী, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান হোসেন সোহরাওয়ার্দীকে সাক্ষী করা হয়েছে।
আদালতের আদেশের নিন্দা জানিয়েছে জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম হায়দার বলেন, ‘জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এই মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে।’
বর্তমানে যুক্তরাজ্যে অবস্থানকারী তারেক রহমান মোট তিনটি মামলায় দণ্ডিত। তার বিরুদ্ধে আরও বেশ কয়েকটি মামলা চলছে।
২০১৬ সালের ২১ জুলাই বিচারিক আদালতের খালাসের রায় বাতিল করে তারেক রহমানকে সাত বছরের কারাদণ্ডের আদেশে দেয় হাইকোর্ট। পাশাপাশি ২০ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়।
দুই বছর পর ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় তারেকের দণ্ড হয় ১০ বছর। এই মামলায় সাজা হয়েছে তার মা বেগম খালেদা জিয়ারও। বিচারিক আদালত তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিলেও উচ্চ আদালত সাজা দ্বিগুণ করেছে। দুই বছরের বেশি সাজা ভোগের পর প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ বিবেচনায় গত মার্চে তিনি সাময়িক মুক্তি পান।
তারেকের বিরুদ্ধে তৃতীয় সাজার রায় আসে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায়। ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর এই রায়ে তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়।
সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালে দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে পরের বছর প্যারোলে মুক্তি নিয়ে যুক্তরাজ্যে যান তারেক রহমান। জামিনের মেয়াদ শেষ হলেও তিনি দেশে ফেরেননি।
২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে বেগম খালেদা জিয়ার সাজা হলে তারেককে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করে বিএনপি।
বঙ্গবন্ধুকে কটূক্তির অভিযোগে একাধিক জেলায় মামলা আছে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে।
- আরও পড়ুন: খালেদা তারেকের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন