দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মেজর সিনহা হত্যা মামলার আসামি ও টেকনাফ থানার বহিষ্কৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন আবার পেছাল।
বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালতে এই প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা ছিল দুদকের। কিন্তু চতুর্থবারের মতো প্রতিবেদন দিতে ব্যর্থ হন তদন্ত কর্মকর্তা।
ওসি প্রদীপ বর্তমানে চট্টগ্রাম কারাগারে আছেন। এই মামলায় তাকে হাজিরও করা হয়নি।
মেজর সিনহা হত্যা মামলায় আত্মসমর্পণের পর ওসি প্রদীপের অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ সামনে আসে। গত ১৪ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামে দুদকের করা অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায়ও গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
নয় দিন পর দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-২ এর সহকারী পরিচালক রিয়াজ উদ্দিন অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেন। মামলায় প্রদীপের সঙ্গে তার স্ত্রী চুমকি কারণকেও আসামি করা হয়েছে। তিনি পলাতক।
তাদের বিরুদ্ধে তিন কোটি ৯৫ লাখ পাঁচ হাজার ৬৩৫ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন, সম্পদের তথ্য গোপন ও মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগ আনা হয়।
প্রথমবার ১৩ অক্টোবর তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার দিন নির্ধারিত ছিল। সেদিন ব্যর্থ হওয়ার পর ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত সময় দেয় আদালত। সেদিনও প্রতিবেদন জমা না দেয়ায় ৬ জানুয়ারি জমা দিতে বলা হয়।
বুধবার শুনানির দিন দুদকের পক্ষ থেকে আবার সময়ের আবেদন করা হয়। আর ওসি প্রদীপের আইনজীবী করেন জামিন আবেদন করেন।
পরে আগামী ১০ জানুয়ারি নতুন করে শুনানির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
দুদকের আইনজীবী মাহমুদুল হক বলেন, দুদকের তদন্ত প্রতিবেদন না আসায় আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়নি। তবে আসামিপক্ষ থেকে আদালতে জামিন আবেদন করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী আসামির জামিন আবেদন করা হলে তাকে আদালতে হাজির থাকতে হয়।
যেহেতু আদালতে আসামি হাজির ছিলেন না তাই আদালত ১০ জানুয়ারি জামিন শুনানির নতুন দিন ঠিক করেছেন।
মাহমুদুল বলেন, ‘মামলাটি যেহেতু খুবই গুরুত্বপূর্ণ তাই মামলার প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সবকিছু যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। তাই দুদকের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে সময় লাগছে।’
গত ৩১ জুলাই ঈদুল আজহার আগের রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশ কর্মকর্তা লিয়াকত আলীর গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান।
এই মামলাও ওসি প্রদীপের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দিয়েছে র্যাব। গত ১৩ ডিসেম্বর বাহিনীটি জানায়, প্রদীপের মাদক কারবারে সম্পৃক্ততা জেনে ফেলায় তাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। পরে পরিকল্পনা করে তাকে খুন করে বন্দুকযুদ্ধ বলে প্রচার চালানোর চেষ্টা করা হয়।
- আরও পড়ুন: সিনহা হত্যা: এসপি মাসুদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার সুপারিশ
- আরও পড়ুন: প্রদীপের মাদক কারবার জেনে ফেলায় সিনহা হত্যা: র্যাব
- আরও পড়ুন: সিনহা হত্যা: র্যাবের তদন্ত প্রতিবেদন জমা আজ
- আরও পড়ুন: ওসি প্রদীপের পরিকল্পনায় সিনহা খুন: প্রতিবেদন
- আরও পড়ুন: সিনহা হত্যা মামলা বাতিলের আবেদন খারিজ
- আরও পড়ুন: সিনহা হত্যা: শিপ্রার অব্যাহতির বিরুদ্ধে পুলিশের নারাজি
- আরও পড়ুন: সিনহা হত্যার তদন্তে ইতিবাচক অগ্রগতি: র্যাব