মাদক ও অস্ত্র আইনে র্যাবের করা দুটি মামলায় পুলিশের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে হাজী সেলিমপুত্র ইরফান সেলিমকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে সতর্ক মন্তব্য করেছেন র্যাব প্রধান। জানালেন, বিচারিক বিষয় নিয়ে কথা বলতে চান না তিনি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে মঙ্গলবার র্যাবের রক্তদান কর্মসূচির উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন বাহিনীটির মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
সোমবার আদালতে দাখিল করা মামলা দুটির চূড়ান্ত প্রতিবেদনে ইরফানের অব্যাহতি চেয়েছে পুলিশ। প্রতিবেদনে বলা হয়, মামলায় মাদক ও অস্ত্রে ইরফানের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে তথ্যগত ভুল ছিল। সে কারণে চূড়ান্ত প্রতিবেদনে তার অব্যাহতি চাওয়া হয়েছে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে হাজী সেলিমের বাসায় অভিযান চালানোর পর ইরফানের বিরুদ্ধে দুটি মামলাই করেছিল র্যাব-৩। মামলার অপর আসামি তার সহযোগী জাহিদ মোল্লা।
মামলায় ইরফানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ‘তথ্যগত ভুল’ ছিল উল্লেখ করে তাকে দায়মুক্তি দিতে দাবি জানিয়েছে পুলিশ।
বিষয়টি নিয়ে র্যাব ডিজি বলেন, ‘আমরা আমাদের অভিযান সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে পরিচালনা করেছি। অভিযানে যে সকল জিনিস আমরা পেয়েছি তার ভিত্তিতে আমরা মামলা করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘পরে পুলিশ তদন্ত করে যা পেয়েছে তার ওপর ভিত্তি করে প্রতিবেদন দাখিল করে। এইটা এখন আদালতের বিচারিক বিষয়। বিচারিক বিষয় নিয়ে আমরা কথা বলতে চাই না।’
বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন র্যাবের লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইং এর পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহও।
পুলিশের দেয়া চুড়ান্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে র্যাব নারাজি দেবে কি না এমন প্রশ্নে তিনি জানান, চুড়ান্ত প্রতিবেদনে হাতের আসার পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন তারা।
পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনে ইরফান সেলমিকে দায়মুক্তি দেয়ায় র্যাবের অভিযান প্রশ্নবৃদ্ধ হয়েছে কি না? জবাবে আশিক বিল্লাহ বলেন, ‘অভিযানে যেসব আলামত পাওয়া গিয়েছিল তার ভিত্তিতে মামলাগুলো করা হয়েছে। পরবর্তীতে তদন্তকারী কর্মকর্তা যেসব বিষয় বিবেচনা করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন এ বিষয়ে র্যাব অবগত নয়।’
জনগণ পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন, নাকি র্যাবের অভিযানকে বিশ্বাস করবে এমন প্রশ্নে আশিক বিল্লাহর জবাব- ‘র্যাব বাংলাদেশ পুলিশেরই একটি বিশেষায়িত বাহিনী। অর্থাৎ বাংলাদেশ পুলিশের যেসব শাখা আছে তার মধ্যে র্যাব অন্যতম। এ রকম একটি বাস্তবতায় আমরা অভিযানে যেসব আলামত ও মালামাল পেয়েছি সেগুলো সুনির্দিষ্টভাবে লিপিবদ্ধ করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।’
গত ২৪ অক্টোবর রাতে ধানমন্ডি এলাকায় নৌবাহিনীর একজন লেফটেন্যান্টকে মারধরের ঘটনায় ধানমণ্ডি থানায় ইরফানসহ সাত জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার মামলা হয়।
পরদিন পুরান ঢাকার সোয়ারিঘাটের দেবীদাস লেইনে হাজী সেলিমের বাসায় অভিযান চালায় র্যাব-৩ এর একটি দল। কয়েক ঘণ্টাব্যাপী অভিযানে সেখান থেকে পিস্তল, গুলি, এয়ারগান, ওয়াকিটকি, বিদেশি মদ উদ্ধার করে র্যাব।
অবৈধ জিনিসপত্র রাখার দায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত সঙ্গে সঙ্গে ইরফানকে ছয় মাসের ও তার সহযোগী জাহিদ মোল্লাকে এক বছরের কারাদণ্ড দেয়।