করোনাভাইরাস প্রতিরোধী অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর।
ফলে এই টিকা বাংলাদেশে ব্যবহারের কোনো বাধা নেই। এখন কেবল পাওয়ার অপেক্ষা।
সোমবার সন্ধ্যায় টিকা অনুমোদনের বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাসার মোহম্মদ খুরশীদ আলম।
অক্সেফোর্ডের টিকা ভারতীয় উপমহাদেশে উৎপাদন করবে সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া। তাদের কাছ থেকে তিন কোটি টিকা কিনবে বাংলাদেশ।
এ জন্য ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয় গত ৫ নভেম্বর, ১৩ ডিসেম্বর হয় চুক্তি। চুক্তির পক্ষ তিনটি- বাংলাদেশ সরকার, সিরাম ও বেক্সিমকো।
সবকিছু যখন ঠিকঠাকভাবে চলছিল, তখন রোববার এক সাক্ষাৎকারে সিরামের সিইও আদর পুনাওয়াল জানান, দেশের বাইরে টিকা রপ্তানিতে তাদেরকে নিষেধ করেছে ভারত সরকার।
তার এই মন্তব্য সোমবার বজ্রাঘাতের মতো আসে। তোলপাড় শুরু হয় ঢাকায়। কারণ, বিষয়টি নিয়ে কিছুই জানা ছিল না সিরামের সঙ্গে চুক্তি করা বাংলাদেশ সরকার ও বেক্সিমকো ফার্মার।
অক্সফোর্ডের করোনার টিকা পেতে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে গত ৫ নভেম্বর সমঝোতা হয় বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের। এতে উপস্থিত ছিলেন ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামীও। ফাইল ছবি: নিউজবাংলা
বাংলাদেশ সরকার যোগাযোগ শুরু করে ভারতের সঙ্গে। ঢাকায় ভারতীয় ডেপুটি হাইকমিশনারের সঙ্গে কথা বলে দুপুরে স্বাস্থ্যসচিব জানান, টিকা নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই। চুক্তি অনুযায়ীই টিকা পাবে বাংলাদেশ।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যোগাযোগ করে ভারতীয় পররাষ্ট্র দপ্তরের সঙ্গে। বিকেলে সংবাদিকদের পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন জানান, ভারত সরকার তাদেরকে জানিয়েছে সিরাম প্রধানের বক্তব্য অপরিপক্ব। যথাসময়ে টিকা পাবে ঢাকা।
টিকা নিয়ে বাংলাদেশ সরকার যখন অনিশ্চয়তার মধ্যে ঘোরপাক খাচ্ছে, তখন নিষেধাজ্ঞা নিয়ে সুর পাল্টায় সিরামও।
প্রতিষ্ঠানটির জনসংযোগ কর্মকর্তা মায়াঙ্ক সেন জানিয়েছেন, টিকা রপ্তানি নিয়ে প্রকাশিত নিষেধাজ্ঞার খবর পুরোপুরি সঠিক নয়। তাদের ওপর টিকা রপ্তানিতে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই।
টিকাটি এখন হাতে পাওয়ার অপেক্ষায় বাংলাদেশ। চুক্তি অনুমোদন দেয়ার এক মাসের মধ্যে টিকা হাতে পাওয়ার কথা বলে জানালেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাসার মোহম্মদ খুরশীদ আলম।
তিনি বলেন, ‘টিকাটি অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছিল বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস। ওষুধ প্রশাসন এ বিষয়ে আলোচনা করে সন্ধ্যায় টিকার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ফলে এই টিকা নিতে আর জটিলতা রইল না। চুক্তি অনুযায়ী অনুমোদনের এক মাসের মধ্যে টিকা পাবে বাংলাদেশ।’
অনুমোদন দেয়াতে দেশে অক্সফোর্ডের টিকা আনাতে আর কোনো বাধা নেই বলে জানালেন ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক আইয়ুব হোসেনও।
তিনি বলেন, ‘বেক্সিমকো এখন এই টিকা আনতে পারবে, তারা নো অবজেকশন সার্টিফিকেট পেয়েছেন।’
বাংলাদেশ এই টিকা কবে আসবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অনুমোদনের পর এক মাস মধ্যে টিকা পাওয়ার কথা, এ কারণে সঠিক সময় বলা যাচ্ছে না। তবে, ১০ দিনের মধ্যেও চলে আসতে পারে।’