বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

চুক্তি করেছে, ভ্যাকসিন দিতে হবে: বেক্সিমকো ফার্মা

  •    
  • ৪ জানুয়ারি, ২০২১ ১৯:৩৩

যেহেতু ভারতের ওষুধ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বাংলাদেশের ওষুধ প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মার বেসরকারি প্রাতিষ্ঠানিক চুক্তির মাধ্যমে দেশে এই ভ্যাকসিন আসবে, সেহেতু ভারত সরকার ভ্যাকসিন রপ্তানি নিয়ে কী সিদ্ধান্ত নিল, তাতে কিছু যায় আসে না। আমাদের চুক্তি অনুযায়ী আমাদের ভ্যক্সিন দিতে হবে। এ নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই: বেক্সিমকো ফার্মার এমডি নাজমুল হাসান পাপন

ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট চুক্তি করেছে, এখন তারা যাই বলুক, বাংলাদেশকে টিকা দিতে হবে- বলেছে ত্রিপক্ষীয় চুক্তির অংশীদার বেক্সিমকো ফার্মা।

ভারত সরকার দেশের বাইরে টিকা বেচতে নিষেধ করেছে বার্তা সংস্থা এপিকে জানিয়েছেন সিরাম সিইও আদর পুনাওয়ালা।

বাংলাদেশ যখন এই টিকার অপেক্ষায় তখন বক্তব্যটি তোলপাড় বাংলাদেশে। কেন টিকা দেবে না, জানতে ভারতের সঙ্গে হয় যোগাযোগ।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ভারত সরকার জানায়, বাংলাদেশকে টিকা দেয়া যাবে না সিরামকে এই ধরনের কোনো নির্দেশ দেয়া হয়নি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, সিরাম প্রধান বেশি বকেছেন।

স্বাস্থ্য সচিব জানান, তিনি কথা বলেছেন ভারতীয় ডেপুটি হাইকমিশনারের সঙ্গে। তিনিও বলেছেন বাংলাদেশ টিকা পাবে, এ নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা নেই।

বিকালে গণমাধ্যমের সামনে আসেন নাজমুল হাসান পাপন যিনি সরকারি দল আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য, পাশাপাশি বেক্সিমকো ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

সিরাম থেকে টিকা কিনতে যে চুক্তি হয়েছে, তার অংশীদার বেক্সিমকো ফার্মা। চুক্তি অনুযায়ী তারাই টিকা নিয়ে আসবে দেশে। পরিবহনের পাশাপাশি দেশে সংরক্ষণের দায়িত্বও তাদের। অর্থও পরিশোধ করবে প্রতিষ্ঠানটি। পরে সরকার বেক্সিমকোকে দেবে টাকা।

এরই মধ্যে প্রথম ধাপে বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬০০ কোটি টাকা সমমূল্যের ডলার পাঠানোর প্রস্তুতি শেষ করেছে বেক্সিমকো ফার্মা।

নাজমুল হাসান পাপন বলেন, ‘যেহেতু ভারতের ওষুধ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বাংলাদেশের ওষুধ প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মার বেসরকারি প্রাতিষ্ঠানিক চুক্তির মাধ্যমে দেশে এই ভ্যাকসিন আসবে, সেহেতু ভারত সরকার ভ্যাকসিন রপ্তানি নিয়ে কী সিদ্ধান্ত নিল, তাতে কিছু যায় আসে না। আমাদের চুক্তি অনুযায়ী আমাদের ভ্যক্সিন দিতে হবে। এ নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই।’

পাপন বলেন, ‘ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের নিবন্ধন পেলে চুক্তি অনুযায়ী এক মাসের মধ্যে ভ্যাকসিন পাঠাবে সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া। সেই সাথে চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ সরকারকে অ্যাডভান্স টাকা প্রদান করতে হবে। এই দুই শর্ত যত তাড়াতাড়ি পূরণ হবে, তত তাড়াতাড়ি আমরা ভ্যাকসিন পাব।’

পাপন জানান, তারা সিরামের সঙ্গে আজ যোগাযোগ করেছেন। তারাও নিশ্চিত করেছেন টিকা আসবে।

তিনি বলেন, ‘ভারত সরকার যে ঘোষণা দিয়েছে তাতে প্রভাব পড়ত যদি বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ভারত সরকারের অর্থাৎ জিটুজি চুক্তি হতো। আমরা বাংলাদেশ সরকারের জন্য যে চুক্তি করেছি এটা প্রাতিষ্ঠানিক বেসরকারি চুক্তি। এখন ভারত সরকার কী সিদ্ধান্ত নিল তা নিয়ে প্রতিষ্ঠান তো আন্তর্জাতিক মানের একটি চুক্তি ভাঙতে পারে না।’

বেক্সিমকো এমডি জানান, টিকা আনতে তারা প্রথমে যোগাযোগ করেছিলেন অক্সফোর্ডের সঙ্গে। আর তারাই পাঠায় সিরামের কাছে।

পাপন জানান, শুরুতে বেক্সিমকো প্রতি টিকা আট ডলার হিসাবে পাঁচ লাখ মানুষের জন্য ১০ লাখ টিকা অর্ডার করে। পরে বেক্সিমকোকে বাংলাদেশের ডিলার নিযুক্ত করে সিরাম। এরপর তারা মধ্যস্থতা করে বাংলাদেশ সরকারের জন্য চার ডলার করে তিন কোটি টিকা পেতে চুক্তি করেন। চুক্তি অনুযায়ী প্রতি মাসে ৫০ লাখ করে ছয় মাসে এই তিন কোটি ডোজ টিকা পাবে সরকার।

তিনি বলেন, ‘প্রথমে তারা (সিরাম) টিকার দাম আট ডলার চেয়েছিল। আমাদের চেষ্টায় এখন টিকার দাম চার ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে ভারত সরকার যদি এর চেয়ে বেশি দামে কিনে তখন চার ডলারেই আমাদেরকে দিতে হবে। আর যদি ভারতীয় সরকার এরচেয়ে কম দামে কিনে তাহলে সেই দামেই আমাদের টিকা দিতে হবে।’

প্রতিটি টিকা বাংলাদেশে আসতে মোট খরচ হবে পাঁচ ডলার। বাড়তি এক ডলার পাবে বেক্সিমকো। তবে এর মধ্যে পরিবহন ও ব্যবস্থাপনা খাতে খরচ করতে হবে তাদের।

সিরাম থেকে তিন কোটি টিকা আনতে গত ৫ নভেম্বর হয় সমঝোতা স্মারক। পরে ১৩ ডিসেম্বর হয় ক্রয় চুক্তি।

তাহলে কবে টিকা পাচ্ছি- এমন প্রশ্নে পাপন বলেন, ‘আমাদের দিক থেকে সব কাজ শেষ। এখন যত দায়িত্ব সব সরকারের। আমরা চুক্তি অনুযায়ী সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে ব্যাংক গ্যারেন্টি পেয়ে অগ্রিম টাকা পরিশোধ করে দিয়েছি। সে অনুযায়ী আমরা দেশীয় ব্যাংক থেকে গ্যারান্টি বাংলাদেশ সরকারকে দিয়েছি। এখন সরকারকে বেক্সিমকোকে অগ্রিম টাকা পরিশোধ করতে হবে।

‘চুক্তি অনুযায়ী বেক্সিমকো বাংলাদেশের নিবন্ধন পাওয়ার এক মাসের মধ্যে সিরাম ইনস্টিটিউট তাদের টিকার প্রথম লট পাঠাতে বাধ্য। তাই এখন এই দুই কাজ শেষ হলে আমাদের ভ্যাকসিন আসায় কোন বাধা নেই।’

স্বাস্থ্য সচিব আবদুল মান্নান আগের জানিয়েছেন, ঔষধ প্রশাসন এরই মধ্যে অক্সেফোর্ডের টিকার অনুমতি দিয়েছে। আর অর্থ পাঠানোর বিষয়েও সরকারের সম্মতি মিলেছে।

এ বিভাগের আরো খবর