কনকা ইলেকট্রনিক্সের ফ্রিজ ও টিভি প্রস্তুতকারী কারখানায় চার ঘণ্টার আগুনে ৩৫ হাজার ফ্রিজ পুড়ে যাওয়ার তথ্য জানিয়েছেন কারখানার শ্রমিকেরা। তবে কারখানা কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য এখনও দেয়নি।
দুর্ঘটনার কারণ জানতে ফায়ার সার্ভিস গঠন করেছে তদন্ত কমিটি, যদিও প্রাথমিকভাবে বৈদ্যুতির শর্ট সার্কিটকে কারণ হিসেবে দেখার কথা জানিয়েছেন বাহিনীটির একজন কর্মকর্তা।
রোববার বেলা ১১টার দিকে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে মোগরাপাড়ার ত্রিপদী এলাকায় কনকার কারখানায় আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের স্থানীয় ইউনিটগুলো আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারার পর আশেপাশের এলাকা থেকে যোগ দেয় মোট ১২টি ইউনিট।
নারায়ণগঞ্জ ছাড়াও ডেমরা, সোনারগাঁ, বন্দর, মেঘনা, গজারিয়া ও ঢাকা থেকে বাহিনীর ইউনিট সেখানে যায়। চার ঘণ্টা চেষ্টার পর কর্মীরা আগুন নেভাতে সক্ষম হয়।
কারখানার শ্রমিকের দাবি, প্রায় ৩৫ হাজার ফ্রিজ ছিল দ্বিতীয় তলায়। এর মধ্যে পাঁচটি ছাড়া সবগুলো পুড়ে গেছে। পুড়ে গেছে ফ্রিজ তৈরি করার মেশিনও।
কারখানার শ্রমিক মান্নান মিয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নীচ তলায় ছিল ফ্রিজ তৈরি মেশিন। মজুত ছিল টিভি তৈরির সারঞ্জাম। দ্বিতীয় তলায় প্রায় ৩৫ হাজার ফ্রিজ ছিল প্রস্তুত করা। আগুন লাগার সময় নীচ তলায় কয়েকজন শ্রমিক ছিল। তারা আগুন দেখে পাঁচটি ফ্রিজ বের করতে পেরেছে। বাকি সব ফ্রিজ পুড়ে শেষ।’
কয়েকজন শ্রমিকা জানান, সকালে হঠাৎ কারখানার পেছনের উত্তর পাশে আগুন জ্বলতে দেখেন তারা। এরপর তারা আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। কিন্তু পেরে উঠেননি। আগুনের মাত্রা বেড়ে গেলে আশপাশের ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এসে যুক্ত হয়।
ফায়ার সার্ভিসের ১২ ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ছবি: নিউজবাংলা
ঢাকা বিভাগের ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক দেবাশীষ বর্ধন বলেন, ‘কারখানায় ফায়ার সেফটি প্ল্যান আছে কিনা না সে বিষয়টি তদারকি করছি। একই সাথে একটি তদন্ত কমিটি গঠন হচ্ছে। সেই তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদনের পর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এবং আগুনের সূত্রপাতের কারণ জানানো হবে।’
ঢাকা বিভাগের দমকল বাহিনীর উপপরিচালক আরও জানান, কারখানায় দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসতে সময় লেগেছে।
এই ঘটনায় কারও প্রাণহানি হয়নি বলে নিশ্চিত করেছেন ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা। তবে একজন শ্রমিক দোতলা থেকে লাফিয়ে পড়ে আহত হওয়ার পর তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, আগুনের ঘটনায় কারও গাফিলতি আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ফায়ার সার্ভিসের তদন্তে কারও গাফলতি উঠে আসলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।