বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বন্ধুর ভাইকে মারের বদলা নিতে গিয়ে খুন

  •    
  • ২ জানুয়ারি, ২০২১ ২১:২০

রাজধানীর মহাখালীতে কিশোর হত্যার ঘটনায় প্রাথমিকভাবে যে তথ্য মিলেছে, তাতে দেখা যায়, বন্ধুর ভাইকে মারধর করা হয়েছে শুনে দলবলের সঙ্গে যান মো. আরিফ নামে এক কিশোর। দুই পক্ষের মারামারির সময় তার বুকে ছুরি চালানো হয়। এরই মধ্যে প্রধান সন্দেহভাজনকে এক সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

মো. আরিফ। বয়স ১৬। রাজধানীর মহাখালীর ওয়্যারলেস গেট আবদুল হামিদ দর্জি মডেল হাই স্কুলে নবম শ্রেণির ছাত্র। বাবা-মা ও ছোট বোনের সঙ্গে থাকত পাশের সাত তলা বস্তিতে। শুক্রবার রাত পৌনে ১০টার দিকে রাজধানীর মহাখালী কাঁচাবাজারের সামনে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয় তাকে।

এটুকু বয়সে কেন খুন হতে হলো এই কিশোরকে? কী নিয়ে ছিল বিরোধ?

নিউজবাংলার প্রাথমিক অনুসন্ধান বলছে, কারও সঙ্গে এই কিশোরের এমন কোনো বিরোধ ছিল না যে তাকে খুন করে ফেলা হবে।

ওই কিশোরের স্বজন, বন্ধু, এলাকাবাসী আর প্রত্যক্ষদর্শীরা যা যা বলেছেন, তার সংক্ষেপসার করলে একটি সিদ্ধান্তে অবশ্য আসা যায়।

ড্যান্ডি খাওয়া নিয়ে স্থানীয় দুই দল যুবকের মধ্যে বিরোধ চলছিল, যার অংশ ছিলেন না আরিফ। বরং বন্ধুর ভাইয়ের মারের বদলা নিতে গিয়ে খুন হতে হয় তাকে।

আরিফের গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফললের করপুলকাঠি এলাকায়।

আরিফের বন্ধু রবিন। তার ভাই হাসান।

স্থানীয় যুবক জনি ও তার সহযোগীদের সঙ্গে বিরোধ হয়েছিল হাসান ও তার সহযোগীদের।

আরিফকে ছুরিকাঘাত করা জনি। তাকে আসামি করে মামলা হয়েছে। এখন ঢাকা মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন। ছবি: নিউজবাংলা

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাজীব তালুকদার বলেন, ‘রাত সাড়ে নয়টার দিকে মহাখালী কাঁচাবাজারের সামনে ড্যান্ডি খাওয়া নিয়ে জনির সঙ্গে হাসান ও সোহাগদের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে জনিসহ তার সহযোগীরা হাসান ও সোহাগকে ইট দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে মাথা ফাটিয়ে দেয়।’

এ সময় সোহেল নামে একজন সাততলা বস্তিতে রবিনকে ফোন করে। সে বলে, হাসানকে জনি ও তার সহযোগীরা মহাখালী কাঁচাবাজারের সামনে মারধর করছে।

খবর পেয়ে রবিন তার বন্ধু আরিফ দলবল নিয়ে যায় মহাখালী কাঁচাবাজারের সামনে। তারা জনি ও তার সহযোগীদের মারধর শুরু করে। এ সময় জনি ছুরি দিয়ে আরিফের বুকে দুই বার ঘা দিয়ে পালিয়ে যায়।

আরিফকে প্রথমে মহাখালীর মেট্রোপলিটন হাসপাতালে নেয়া হয়। তার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় সেখানকার চিকিৎসক পাঠান ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। এই হাসপাতালে রাত ১১টার দিকে মারা যায় আরিফ।

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) বাচ্চু মিয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি যতটুকু জানতে পেরেছি, শুক্রবার রাতে ১০ থেকে ১৫ জন লোক এসে আরিফদের উপরে হামলা করে।

‘হামলার সময় আরিফের বুকে ছুরি দিয়ে দুইটা আঘাত করে। ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে আসা হলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত দুইজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর ডাক্তারের অনুমতিতে তারা হাসপাতাল ত্যাগ করে।’

মরদেহের সুরতহাল রিপোর্টে বলা হচ্ছে, বুকের ডানপাশে আনুমানিক আধা ইঞ্চি গভীর কাটা জখম ও বুকের বাম পাশে হাফ ইঞ্চি গভীর জখমের চিহ্ন আছে।

বন্ধুর ভাইকে মারধর থেকে রক্ষা করতে গিয়ে ছুরিকাঘাতে নিহত কিশোর আরিফ

আরিফের কাকা মো. মহিউদ্দিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রবিনের ভাইকে মারার জন্য রবিন আমার ভাতিজাকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে জনি ছুরি দিয়ে কুপিয়ে আমার ভাতিজাকে হত্যা করে।’

তিনি বলেন, ‘জনি ও তার গ্রুপ মহাখালীতে চুরি, ছিনতাই করে টাকা কামাই করে। সেই টাকা দিয়ে ড্যান্ডিসহ বিভিন্ন ধরনের নেশা করে।

‘জনি আগে সাত তলা বস্তিতে পরিবারের সঙ্গে থাকত। পরে নেশা করার জন্য পরিবার থেকে তাকে বের করে দেয়া হয়। সে রাস্তা ঘাটে নেশা করে বেড়ায়। বেশিরভাগ সময় মহাখালী ফ্লাইওভারের আসেপাশে থাকত।’

স্থানীয় যুবক মো. সুমন বলেন, ‘জনির গ্যাঙে ওই লিডার। তাদের দলে তিনজন মেয়েও আছে। ওরা সারা দিন ড্যান্ডি খায়, মাথা সবসময় আউলাঝাউলা থাকে। এলাকায় সব সময় ঝামেলা করে বেড়ায়। এই গ্রুপের সবারই কম বেশি পরিবার আছে। কিন্তু নেশা করার জন্য পরিবারের সঙ্গে থাকে না।’

নিহত আরিফের বাবার অভিযোগে বনানী থানায় জনিকে প্রধান আসামি করে চার জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

এরই মধ্যে জনিসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জনি পুলিশ হেফাজতে ঢাকা মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন।

এ বিভাগের আরো খবর