বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ক্যালেন্ডারের পাতায় একাত্তরের পুনরাবৃত্তি

  •    
  • ১ জানুয়ারি, ২০২১ ১৭:২১

২০২১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ক্যালেন্ডারের প্রতিটি পাতা মিলে ‍গিয়েছে ১৯৭১ সালে দেশটির জন্মযুদ্ধের বছরের সঙ্গে। অবাক করা মিল রয়েছে প্রতিটি বার ও তারিখে। সুতরাং কেউ চাইলে, ২০২১ সালে বাস করে ক্যালেন্ডারের পাতায় সওয়ার হয়েই চলে যেতে পারেন একাত্তরের দিনগুলোতে।

সময় পরিভ্রমণের ভেতর দিয়ে অতীত কিংবা ভবিষ্যতের সুলুক সন্ধানের সম্ভাবনার বিষয়টি সম্ভবত প্রথমবারের মতো মানুষের মাথায় ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন ইংরেজ কল্পবিজ্ঞান লেখক এইচ জি ওয়েলস।

প্রায় দেড়শ বছর আগে ১৮৮৫ সালে ওয়েলস রচিত বিজ্ঞান কল্পকাহিনি ‘দ্য টাইম মেশিন’ প্রকাশিত হওয়ার পর মানুষ সময় প্রদক্ষিণ নিয়ে তার কল্পনার পাখায় বহু রঙ চড়িয়েছে।

বিজ্ঞানীরাও গণিত ও পদার্থবিদ্যার ছাঁচে ফেলে ওয়েলসের ধারণাটির ভিত্তি আবিষ্কারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ফলে বাস্তবিক অর্থে একজন মানুষের পক্ষে সময় পরিভ্রমণ করা আদৌ সম্ভব কি না- তা আজও একটা অমীমাংসিত বিষয়।

তাই টাইম মেশিনে চড়ে যদি অতীতে ফিরে যাওয়া সম্ভব নাও হয়, অন্তত ক্যালেন্ডার বা দিনপঞ্জির পাতায় ভর করে সেটা খুবই সম্ভব। এই যেমন ২০২১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ক্যালেন্ডারের প্রতিটি পাতা মিলে ‍গিয়েছে ১৯৭১ সালে দেশটির জন্মযুদ্ধের বছরের সঙ্গে। অবাক করা মিল রয়েছে প্রতিটি বার ও তারিখে।

সুতরাং কেউ চাইলে, ২০২১ সালে বাস করে ক্যালেন্ডারের পাতায় সওয়ার হয়েই চলে যেতে পারেন একাত্তরের দিনগুলোতে।

গাণিতিক ভাষায় পৃথক বছরের দিন বা বারের মধ্যে হুবহু মিল থাকলে তাকে বলা হয় আইডেন্টিটিক্যাল ক্যালেন্ডার ইয়ারস বা অভিন্ন দিনপঞ্জির বছর। শুধু নির্দিষ্ট কোনো বছর নয়, স্রেফ গাণিতিক নিয়মে যেকোনো বছরের জন্য এমন অনেকগুলো অভিন্ন বছর আসতে পারে।

১৯৭১ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ৫০ বছরের দিনপঞ্জি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এ সময়ের মধ্যে ১৯৮২, ১৯৯৩, ১৯৯৯ ও ২০১০ সালে অভিন্ন বছরের ঘটনা ঘটেছে। এমনকি আগামী ৫০ বছরে অর্থাৎ ২০২১ থেকে ২০৭১ সাল পর্যন্ত এমন ঘটনা ঘটবে আরও পাঁচবার। ওই বছরগুলো হবে ২০২৭, ২০৩৮, ২০৪৯, ২০৫৫ ও ২০৬৬।

যে নিয়মে এটা ঘটে

গ্রেগরীয় বা খ্রিষ্টীয় বর্ষপঞ্জির যে কোনো বছরের প্রথম দিন (১ জানুয়ারি) স্বাভাবিকভাবেই রবি থেকে শনি অর্থাৎ সপ্তাহের নির্দিষ্ট সাত দিনের একটা দিনে হয়। আর সাধারণ বছর হয় ৩৬৫ দিনের, লিপ ইয়ার বা অধিবর্ষ হয় ৩৬৬ দিনের।

যদি কোনো বছরের শুরুর দিনটি অন্য কোনো বছরের শুরুর দিনের সঙ্গে মিলে যায়, তাহলে প্রথমে দেখতে হবে দুটো বছরের কোনোটি অধিবর্ষ কি না।

যদি দুটো বছরের একটি সাধারণ বছর ও অন্যটি অধিবর্ষ হয়, তাহলে বছর দুটি অভিন্ন বছর হবে না। কিন্তু দুটো বছরই যদি সাধারণ বছর হয় কিংবা দুটো বছরই যদি অধিবর্ষ হয় তখন সেগুলো অভিন্ন বছর হবে।

গাণিতিক হিসাবে দেখা যায়, দুটো অভিন্ন বছরের মধ্যে সর্বনিন্ম ২ হাজার ১৯১ দিন (৬ বছর) ও সর্বোচ্চ ১৪ হাজার ৬০৯ দিন (৪০ বছর) তফাত থাকতে পারে।

এভাবেই ২০২১ সালের দিনপঞ্জি মিলে গেছে ১৯৭১ সালের দিনপঞ্জির সঙ্গে। এখন ২১ সালে বসে প্রতিটি তারিখ কিংবা বার ধরে যুদ্ধের সেই উত্তাল দিনগুলোতে কারা কারা ফিরতে চান, কী দেখতে কিংবা করতে চান- সেটা একান্তই তাদের ব্যক্তিগত অভিরুচি।

বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি মশহুরুল আমীন মিলন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘জমজ বর্ষ বলা হচ্ছে এবারকে। এটা আগেও ঘটেছে, ভবিষ্যতেও ঘটবে। এটা সম্পূর্ণ গাণিতিক বিষয়।…সাধারণত প্রতি ১০০ বছরে এটা ১০ থেকে ১২ বার ঘটে। চার বছর পরপর লিপ ইয়ার বা অধিবর্ষের কারণে এটা ঘটে থাকে।’

তিনি বলেন, ‘আগে তেমন উল্লেখযোগ্য কোনো বছর ছিল না, যখন এটা ঘটেছে। এবার তা আছে। যেমন এবার আমরা ১৯৭১ সালকে পাচ্ছি আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ও বিজয়ের বর্ষ হিসেবে, তেমন ২০২১ সালকে পাচ্ছি আমাদের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তির বর্ষ হিসেবে। যে কারণে আলোচনা বেশি।’

এ বিভাগের আরো খবর