রাজবাড়ীর রাজেন্দ্রপুর গ্রামের সৌদি আরব প্রবাসী সেকেন্দার আলী বছর পাঁচেক আগে নির্মাণ করেছিলেন একটি দোতলা বাড়ি। তিন বছর আগে সেখানে বাসা বাঁধা শুরু করে মৌমাছি। এরপর প্রতি বছরই বেড়েছে মৌচাকের সংখ্যা।
চলতি বছর ওই বাড়িতে এখন পর্যন্ত মৌচাকের সংখ্যা ৪০টি। বাড়িটির ছাদ, কার্নিশ ও চারপাশ জুড়ে চাক তৈরি করেছে মৌমাছিরা। বাড়ির সামনের ছোট আমগাছেও রয়েছে চারটি। দেখে বোঝার উপায় নেই, বাড়িটি সেকেন্দার আলীর, না মৌমাছিদের।
সেকেন্দার আলীর স্ত্রী লতিফা বেগম জানান, সাধারণত অগ্রহায়ণ মাসে মৌমাছিরা বাসা বাঁধতে শুরু করে। এ সময় বাড়ির চারপাশের সরিষা ক্ষেতে ফুল আসে। সরিষার মৌসুম শেষ হলে মেহগনি, আম, লিচু গাছে ফুল আসা শুরু করে। সেসব ফুল থেকেও মৌমাছিরা মধু সংগ্রহ করে। ছয় মাসের মতো থেকে চৈত্র মাসের দিকে চলে যায় মৌমাছি দল।
তিনি বলেন, ‘প্রথম বছর ১৬টি মৌচাক ছিল। গত বছর ছিল ২৭টি। আর এ বছর ৪০টির মতো বসেছে। আরও সময় আছে। মৌচাক এ বছর আরও বাড়তে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন খাঁটি মধু সহজে মেলে না। এ কারণে মৌচাক থেকে সংগ্রহ করা মধু আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের দিয়ে থাকেন।’
বাড়িটির পাশেই রয়েছে কানাডা বাজার। এ বাজারের একটি ছোট দোতলা ভবনেও বাসা বেঁধেছে মৌমাছি।
বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, এসব মৌমাছি কাউকে কামড়ায় না। বাজারে উড়ে বেড়ায়। মাঝে মধ্যে রাতে লাইটের আশে পাশে ভনভন করে।
এ বিষয়ে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক রাজবাড়ী সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মো. নুরুজ্জামান জানান, মৌমাছি ফুলে ফুলে নেকটার সংগ্রহ করে। সেই নেকটারই তারা পরে মধুতে পরিণত করে। যে অঞ্চলে ফুলের সমারোহ বেশি থাকে, যেখানে থাকলে ফুলের নেকটার সংগ্রহ করা সহজ, এমন জায়গা পছন্দ করে তারা।
রাজেন্দ্রপুর গ্রামে প্রচুর পরিমাণে সরিষার চাষ হয় বলে এখানে মৌমাছির দল বাসা বেঁধেছে বলে জানান তিনি।