নারায়ণগঞ্জের বায়তুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় মসজিদ কমিটির সভাপতি আব্দুল গফুর মিয়াসহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা পড়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ আদালতে এই প্রতিবেদন জমা দেন সিআইডির সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার, এএসপি জিসানুল হক।
কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে এই ঘটনায় নাম আসা তিতাস গ্যাসের আরও আটজন সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীর বিরুদ্ধে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
গত ৪ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে আটটার দিকে় ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা এলাকার বাইতুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণ ঘটে। এশার নামাজ পড়তে যাওয়া ৩৭ জন মুসল্লি ও এক জন পথচারী দগ্ধ হন। এদের মধ্যে ৩৪ জন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে মারা যান। চার জন এখনও বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
সিআইডি জানায়, ঘটনার ছয় দিন পর ১০ সেপ্টেম্বর মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব নেয় তারা। সিআইডির ক্রাইমসিন ইউনিট ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আলামত সংগ্রহ করে।
সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে দায়িত্বে অবহেলার জন্য তিতাস গ্যাসের ফতুল্লা জোনের আট জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডেও নেয়া হয়।বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা ডিপিডিসির একজন মিটার রিডার, দুই জন ইলেকট্রিশিয়ানসহ আরও তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এদের মধ্যে ইলেকট্রিশিয়ান মোবারক হোসেন ও মোহাম্মদ রায়হান অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগের বিষয়ে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
তদন্তে মসজিদ কমিটির বিরুদ্ধে অবহেলা ও অব্যবস্থাপনারও প্রমাণ পাওয়ায় যায়। মসজিদ কমিটির সভাপতি আবদুল গফুরকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
বিস্ফোরণের কারণ হিসেবে সিআইডির প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘটনার আগে থেকে তিতাস গ্যাস পাইপের লিকেজ থেকে গ্যাস বের হয়ে মসজিদে জমা হতে থাকে। বাধাহীনভাবে গ্যাস উদগিরণ হয়ে মসজিদ গ্যাস চেম্বারে পরিণত হয়।
ঘটনার সাত থেকে আট দিন আগে থেকে গ্যাসের তীব্রতা বৃদ্ধি পেলে মুসল্লিরা বিষয়টি মসজিদ কমিটিকে জানান। কিন্তু মসজিদ কমিটি কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
ঘটনার দিন এশার নামাজের সময় বৈধ লাইনে বিদ্যুৎ চলে যায়। অবৈধ বিদ্যুৎ লাইন চালু করা হলে বিদ্যুতের স্পার্ক হয়। তখন জমে থাকা গ্যাসের কারণে আগুন ধরে যায়।
আগুনে মসজিদের এসি, থাই গ্লাসসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র পুড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
আসামি কারাআসামিরা হলেন- আব্দুল গফুর মিয়া, সামসুদ্দিন সরদার, শামসু সরদার, শওকত আলী, অসিম উদ্দিন, জাহাঙ্গীর আলম, শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল, নাঈম সরদার তানভীর আহমেদ, আল আমিন, আলমগীর সিকদার, আল আমিন, সিরাজ হাওলাদার, নেওয়াজ মিয়া, নাজির হোসেন, আবুল কাশেম, আব্দুল মালেক, মোহাম্মদ মনিরুল, স্বপন মিয়া, আসলাম আলী, আলী তাজম মিল্কী, মোহাম্মদ কাইয়ুম, মামুন মিয়া, দেলোয়ার হোসেন, বশির আহমেদ, মো. রিমেল আরিফুর রহমান, মোবারক হোসেন ও রায়হানুল ইসলাম।