দেশের প্রায় সাড়ে ৪ কোটি শিক্ষার্থীর হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে বিনা মূল্যের নতুন বই।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বই বিতরণের এ উৎসব উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ওই সময় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই তুলে দেন।
কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের নতুন বই দেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
অনুষ্ঠানে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী, সচিব ও জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন।
করোনাভাইরাস মহামারি প্রতিরোধ ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে এবার দেশজুড়ে ঘটা করে বই উৎসব হচ্ছে না।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালে বিনা মূল্যের পাঠ্যপুস্তকের সংখ্যা ১০ কোটি ২৫ লাখ ৮২ হাজার ৫৫৫টি।
চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো ও সাদ্রী জনগোষ্ঠীর ৯৪ হাজার ২৭৫ শিশুর মধ্যে পাঁচটি ভাষায় প্রাক-প্রাথমিক থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ২ লাখ ১৩ হাজার ২৮৮টি বই বিতরণ করা হবে।
এ বছর সাঁওতাল ভাষায় পাঠ্যপুস্তক দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। এবার ৯ হাজার ১৯৬ জন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীর জন্য ব্রেইল পদ্ধতির বই বিতরণ করা হবে।
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি জানান, করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার এক দিনে না করে, প্রতিটি শ্রেণির বই বিতরণের জন্য তিন দিন করে সময় দেয়া হবে। অর্থাৎ ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত চারটি শ্রেণিতে সপ্তাহে তিন দিন করে ১২ দিনে বই বিতরণ করতে হবে।
তিনি বলেন, দেশে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর ১৭ মার্চ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এর পর ধাপে ধাপে ছুটি বাড়িয়ে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত করা হয়েছে। তবে এর মধ্যে বই বিতরণ চলবে।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বৃহস্পতিবার সকালে শিশুদের মাঝে বই বিতরণ করেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। ছবি: নিউজবাংলা
নতুন বই হাতে পেয়ে উচ্ছ্বসিত অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী সিয়াম আহমেদ।
সে বলে, ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে একটু মন খারাপ ছিল। তবে নতুন বই পেয়ে মন ভালো হয়ে গেছে। মন চাচ্ছে স্কুলে গিয়ে বন্ধুদের সাথে একসাথে আনন্দ করি। তবে করোনার কারণে এটা করতে পাচ্ছি না।’
সে আরও বলে, ‘কবে যে এই মহামারি বিদায় নেবে। কবে আমরা স্কুলে ফিরব, এটা নিয়ে চিন্তায় আছি।’
বেসরকারি চাকরিজীবী সাবিনা ইয়াসমিন কর্মস্থল থেকে ছুটি নিয়ে মেয়ে তাহামিনাকে নিয়ে এসেছেন বই উৎসবে।
তিনি বলেন, ‘বাচ্চাদের পড়াশোনা নিয়ে অনেক চিন্তা রয়েছে। এই মহামারির মধ্যে নতুন বই পেয়ে অনেক খুশি।’
এ অভিভাবকের হতাশা কাটেনি। তার প্রত্যাশা, দ্রুত খুলে দেয়া হোক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।