ভারতের মিজোরামে বাংলাদেশের পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর আস্তানা ধ্বংসে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বিএসএফ ও বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বিজিবি যৌথভাবে অভিযান চালাবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
মন্ত্রী বলেছেন, মিজোরামে ঘাঁটি থাকার তথ্য নিশ্চিত হওয়ার পরেই বিএসএফকে বিষয়টি জানিয়েছে বিজিবি।
বুধবার রাজধানীর পিলখানায় বিজিবি সদরদপ্তরে এক অনুষ্ঠানে বাহিনীটির সদস্যদের বীরত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতি হিসেবে পদক তুলে দিতে যান মন্ত্রী। পরে তিনি মুখোমুখি হন গণমাধ্যমকর্মীদের। এ সময় তিনি বিএসএফের সঙ্গে সীমান্ত সম্মেলনে বিজিবির পক্ষ থেকে তোলা অভিযোগ নিয়ে জবাব দেন।
গত ২২ থেকে ২৬ ডিসেম্বর ভারতের গৌহাটিতে বিএসএফের সঙ্গে সম্মেলনে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম মিজোরামে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আস্তানার কথা তুলে ধরে বাংলাদেশের উদ্বেগের কথা জানান। পাশাপাশি আস্তানাগুলো ধ্বংসের অনুরোধ করেন।
বিএসএফ মহাপরিচালক রাকেশ আস্থানা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ভারত সরকারের ‘জিরো টলারেন্স নীতির’ কথা উল্লেখ করে আস্তানা থাকলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন বলে ২৫ ডিসেম্বর বিজিবির বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
২ে২ থেকে ২৬ ডিসেম্বর ভোরতের গৌহাটিতে বিএসএফের সঙ্গে সীমান্ত সম্মেলনে মিজোরামে পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের আস্তানার কথা তুলে ধরে বিজিবি
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মিজোরামের পাহাড়ি সীমান্তে বাংলাদেশি সন্ত্রাসী বাহিনীর অবস্থানের খবর আমরা গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে নিশ্চিত হয়েছি। তারা মাঝে মধ্যেই সীমানা পার হয়ে দেশে ঢোকার চেষ্টা করে।’
এখন কী ব্যবস্থা নেয়া হবে- এই জিজ্ঞাসারও জবাব দেন মন্ত্রী। বলেন, ‘দুর্গম পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় সেখানে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব হয় না। তবে এখন এই সন্ত্রাসী গ্রুপের বিরুদ্ধে বিজিবি ও ভারতের বিএসএফ মিলে অভিযান পরিচালনা করবে।’
বিজিবির একজন কর্মকর্তা জানান, তাদের সদস্যরা ভারতের মাটিতে যাবেন না। বাংলাদেশ থেকে মিজোরামে সন্ত্রাসীরা ঢুকলে বিএসএফকে তথ্য দেবে তারা। তখন ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী ব্যবস্থা নেবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন ভারতের মিজোরামে পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের আস্তানা থাকার কথা গোয়েন্দা তথ্যে নিশ্চিত হয়েছেন তারা
একইভাবে সন্ত্রাসীরা বাংলাদেশ সীমানায় ঢুকলে বিএসএফ জানাবে বিজিবিকে। তখন ব্যবস্থা নেবে বিজিবি।
ভারতের ভেতরে বাংলাদেশি সশস্ত্র গোষ্ঠীর অবস্থানের বিষয়টি গত দুই দশকে সেভাবে আলোচিত হয়নি। ৯০ দশকের শেষ দিকে বিচ্ছিন্নতাবাদী পাহাড়িরা সরকারের কাছে অস্ত্র সমর্পণের পর এ নিয়ে আর কথা হয়নি।
এর আগে দুই দশক বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠী ভারতে আস্তানা গড়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ে যেত বলে অভিযোগ আছে।
বাংলাদেশেও ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় বেশ কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর আস্তানা থাকার অভিযোগ ছিল ভারতের। যদিও এখন সেই অভিযোগ আর তারা করে না।