মহাসড়কের সুরক্ষায় দুই বছরের কারাদণ্ড এবং অনধিক পাঁচ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রেখে ‘মহাসড়ক আইন, ২০২০’-এর খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার সকালে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার ভার্চুয়াল বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়।
বৈঠক শেষে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘যদি কেউ মহাসড়কে অবৈধ স্থাপনা করেন তাহলে দুই বছরের কারাদণ্ড বা স্থায়ী স্থাপনার ক্ষেত্রে অনধিক পাঁচ লাখ টাকা এবং অস্থায়ী স্থাপনার ক্ষেত্রে অনধিক ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।’
মহাসড়কে অনুমতি ছাড়া বিলবোর্ড, তোরণ স্থাপন করা যাবে না। ধীর গতির যানবাহন সার্ভিস লাইন ছেড়ে মহাসড়কে এলেও গুণতে হবে জরিমানা। এক্ষেত্রে জরিমানার পরিমাণ ১০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। ফসল, খড় বা কোনো পণ্য মহাসড়কে শুকানো যাবে না। নির্ধারিত স্থান ছাড়া যত্রতত্র মহাসড়ক দিয়ে পারাপার করা যাবে না। এসব করলে এক থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে খসড়া আইনে।
আইনটি পাশ হলে সড়ক দুর্ঘটনা অন্তত ৮০ ভাগ কমে যাবে বলে মনে করছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
মহাসড়ক নিয়ে বিদ্যমান আইনটি ১৯২৫ সালের। এ কারণেই নতুন আইনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে বলে জানান সচিব।
‘সেটা ব্রিটিশ আমলের পাঁচটা ধারার একটা আইন। তখন মহাসড়কের এই কনসেপ্ট ছিল না। তাই আগের আইনটি রহিত করে, যুগোপযোগী করে মহাসড়ক নির্মাণ, উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এবং অবাধ, সুশৃঙ্খল যান চলাচল নিশ্চিত করার জন্য মহাসড়ক আইন ২০২০ প্রণয়ন করা হচ্ছে।’
আইনটিতে মোট ১৯টি ধারা এবং ৪০টি উপধারা আছে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। তিন বলেন, দেশের সব প্রধান সড়ক ধাপে ধাপে চার লেনে উন্নীত করা হবে।
‘আগের মহাসড়কগুলো টু লেন ছিল। এখন আমরা ফোর লেনে চলে যাচ্ছি। দুই সাইডে স্লো মুভিং ভেহিকেলের জন্য করা হচ্ছে। যার ফলে মহাসড়ক যেটা থাকছে মাঝখানে, তার একটা ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড আছে যে মহাসড়কে কত স্পিডে গাড়ি সবসময় চলতে পারবে। ‘সেক্ষেত্রে আমরা যদি নিয়ন্ত্রণ না করি, কিছু ফ্যাসিলিটিজ যদি মানুষকে না দিই, তাহলে এই মহাসড়ক ব্যবস্থা ঠিক মতো চালানো যাবে না।’
গাড়ির গতিসীমা কত হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হাইওয়ে যখন করবেন ৮৫ কিলোমিটার স্পিড এনশিওর করতে হবে।’
মহাসড়কের পাশে সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে জানিয়ে খন্দকার আনোয়ারুল বলেন, ‘প্রতিটি মহাসড়কে মানুষের চলাচলের সুবিধার্থে আন্ডারপাস ও ওভারপাস তৈরি করে দেয়া হবে। ’
মহাসড়কে বৃষ্টি বা অন্য যে কোনো পানি দ্রুত অপসারণের ব্যবস্থা রাখতে প্রধানমন্ত্রী বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। পাশাপাশি মহাসড়কের দুই পাশে উপযোগী গাছ লাগানোর নির্দেশও দেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া প্রতিটি মহাসড়কে নির্দিষ্ট দূরত্ব পরপর ফুয়েল স্টেশন, মানুষের বিনোদন এবং লং রুটের চালকদের জন্য বিশ্রামাগার রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।