বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘ডাকতর নাই, বাইচ্চার কষ্ট সহ্য অয় না’

  •    
  • ২৮ ডিসেম্বর, ২০২০ ১৯:৪৭

জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকদের ওপর হামলার অভিযোগ এনে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও সদর থানার ওসিকে প্রত্যাহারসহ চার দফা দাবিতে সোমবার দ্বিতীয় দিনের মতো ধর্মঘট পালন করছেন হাসপাতালটির চিকিৎসকরা।

‘আমার বাইচ্চার ম্যালা ঠান্ডা লাগছে। কালকে আইছিলাম, ডাকতর আছিলো না। আইজকা আইছি, কেউ নাই। প্রাইভেটেও ডাকতর নাই। এহন কই যাইয়াম। বাচ্চার কষ্ট আর সহ্য অইতাছে না।’

জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে সোমবার দুই বছরের বাচ্চাকে চিকিৎসা করাতে আসা সুমাইয়া বেগম এভাবেই নিউজবাংলাকে জানাচ্ছিলেন তার দুর্ভোগের কথা।

চিকিৎসকদের ওপর হামলার অভিযোগ এনে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও সদর থানার ওসিকে প্রত্যাহারসহ চার দফা দাবিতে সোমবার দ্বিতীয় দিনের মতো ধর্মঘট পালন করছেন হাসপাতালটির চিকিৎসকরা।

তাদের ধর্মঘটের সমর্থনে চিকিৎসা বন্ধ রেখেছেন জেলার সব বেসরকারি হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কমিউনিটি ক্লিনিক ও ক্লিনিকের চিকিৎসকরা। সব মিলে অচল হয়ে পড়েছে জেলার চিকিৎসা ব্যবস্থা।

হঠাৎ পুরো জেলায় চিকিৎসা সেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে কয়েক হাজার রোগীকে, বিশেষ করে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত শিশু ও বৃদ্ধরা।

অবশ্য সরকারি সব হাসপাতালে আন্তঃবিভাগ ও জরুরি বিভাগ চালু রয়েছে বলে জানিয়েছে সিভিল সার্জন কার্যালয়।

সোমবার জামালপুর জেনারেল হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, জরুরি বিভাগের চিকিৎসা সেবা চলছে। তবে বহির্বিভাগে কোনো চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী দেখা যায়নি। চিকিৎসক না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা। ভর্তি রোগীদের ছেড়ে দেয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

আট মাসের মেয়ের মা আসমা খাতুন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সরিষাবড়ির হাসপাতালে গেছিলাম। ডাক্তার নাই। এতদূর জামালপুরে আসলাম তাউ ডাক্তার নাই। এহন আমরা কি করমু? বাচ্চাদের কোন ঔষধ খাওয়ামু? ডাক্তাররা এমন করলে আমরা কই যামু?’

চিকিৎসকদের অভিযোগ, গত ২৫ ডিসেম্বর শুক্রবার দুপুরে এক নারী রোগীর মৃত্যুর জেরে তার স্বজনরা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ও ইন্টার্নদের ওপর হামলা চালায়। পুলিশ সেখানে তাদের রক্ষা না করে উল্টো মারধর করে। এ সময় সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা লুৎফর রহমানকে লাঞ্ছিত করা হয়।

এসব অভিযোগ এনে ঘটনায় জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিচার, ওসি রেজাউল ইসলাম খানকে প্রত্যাহার এবং জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নিরাপত্তা জোরদারের দাবিতে শনিবার সন্ধ্যায় ধর্মঘটের ডাক দেন চিকিৎসকরা।

শনিবার রাতে হামলার অভিযোগ এনে মামলা করেন হাসপাতালের চিকিৎসক মাহফুজ। আসামি করা হয় মৃত রোগীর স্বজন, পৌরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মনিরুজ্জামানসহ কয়েকজনকে। এর মধ্যে দুই জনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।

জামালপুরের মানবাধিকারকর্মী জাহাঙ্গীর সেলিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যেহেতু তদন্ত চলছে, কয়েকজন আসামিকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে, তাই এখন ডাক্তারদের উচিত চিকিৎসা দেয়া। তারা আন্দোলন করলেও চিকিৎসা অব্যাহত রাখুক।’

এ ব্যাপারে সিভিল সার্জন প্রণয় কান্তি দাস নিউজবাংলাকে বলেন, ‌‘জরুরি বিভাগ ও বহির্বিভাগে চিকিৎসা চলছে।’

এসপি দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘মামলার তদন্ত চলছে। গ্রেপ্তার দুইজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’

এ বিভাগের আরো খবর