মানবতাবিরোধী অপরাধী জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে আদালতে আর প্রিজন ভ্যানে করে আসতে হবে না। আইনজীবীর আবেদনের পর আদালতে হাজিরা দিতে মাইক্রোবাসের ব্যবস্থা করেছেন বিচারক।
মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ড পাওয়া জামায়াত নেতাকে আদালতে এখনও হাজিরা দিতে হচ্ছে আয়কর ফাঁকি ও জাকাতের অর্থ আত্মসাতের মামলায়।
সোমবার পুরান ঢাকার বকশিবাজারের আলিয়া মাদ্রাসার মাঠে স্থাপিত (অস্থায়ী) ঢাকা মহানগর-১ নম্বর আদালতে এই মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানি ছিল। কিন্তু আসামিপক্ষ কাগজপত্র প্রস্তুত করতে না পারার কারণ দেখিয়ে শুনানি পেছানোর আবেদন করেন। বিচারক তা গ্রহণ করে আগামী ১১ জানুয়ারি আবার শুনানির তারিখ দেন।
এরপর একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধীর আইনজীবী মোজাহিদুল ইসলাম শাহীন করেন নতুন আবেদন।
সাঈদীকে প্রিজন ভ্যানের বদলে মাইক্রোবাসে করে কারাগার থেকে আদালতে নেয়ার ব্যবস্থা করতে আবেদন করেন তিনি।
আইনজীবী দাবি করেন, তার মক্কেলের সামাজিক মর্যাদা ও স্বাস্থ্যের বিবেচনায় প্রিজন ভ্যানে করে আদালতে আসা চলে না।
আইনজীবী শাহীন বলেন, সাঈদী একজন সাবেক সংসদ সদস্য। তিনি ভিআইপি পদমর্যাদার নাগরিক।
পরে বিচারক তার আবেদন গ্রহণ করেন বলে নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন আইনজীবী শাহীন।
২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে মানবতাবিরোধী অপরাধে সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। পরে ২০১৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগ তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিলে তিনি প্রাণে বেঁচে যান।
আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন অনুযায়ী মানবতাবিরোধী অপরাধে যাদের বিচার হয়, তাদের মৌলিক মানবাধিকার স্থগিত থাকার কথা। তবে সরকার তাদের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করেছে।
ওই মামলা নিষ্পত্তি হয়ে গেলেও দুটি মামলায় তাকে নিয়মিত আদালতে হাজিরা দিতে হচ্ছে।
২ কোটি ২৭ লাখ ৪০ হাজার ১২০ টাকা আয় গোপন করে ৫৬ লাখ ৪৬ হাজার ৮১২ টাকা কর ফাঁকির অভিযোগে ২০১১ সালের ১৯ আগস্ট তার বিরুদ্ধে মামলা করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। পরের বছর ১৫ সেপ্টেম্বর অভিযোগ গঠন করে আদালত।
বিএনপি-জামায়াত জোটের শাসনামলে সংসদ সদস্য থাকাকালে ২০০৫-০৬ অর্থবছরে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের জাকাত বোর্ডের এক কোটি ১৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং ২০০৪-০৫ অর্থবছরের ১৩ লাখ টাকাসহ এক কোটি ২৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা দুস্থদের না দিয়ে নিজেদের দলীয় প্রতিষ্ঠানে বরাদ্দ করে আত্মসাতের অভিযোগে করা হয়েছে অন্য মামলাটি।
দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক ওয়াজেদ আলী গাজী ২০১২ সালের ৩০ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র দেন।
এই দুটি মামলায় গত ৭ ডিসেম্বর অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচার শুরুর কথা ছিল। কিন্তু তার আইনজীবীরা সময়ের আবেদন করায় শুনানি পিছিয়ে যায়। তিন সপ্তাহ পর আইনজীবীরা একই আবেদন করায় আরও দুই সপ্তাহ সময় দিল আদালত।