নানা কারসাজি করে মিলাররা চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক।
রোববার এক অনুষ্ঠানে এ অভিযোগ করে তিনি বলেন, সরকার ভোক্তা পর্যায়ে চালের দাম স্থিতিশীল রাখতে বদ্ধপরিকর। বাজারে যাতে চালের ঘাটতি না হয় সেজন্য চাল আমদানির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘যদি ঘাটতির পরিস্থিতি তৈরি হয়- তা না মেটাতে পারলে মিলার, আড়াতদার ও চাল ব্যবসায়ী যারা বাজার নিয়ন্ত্রণ করে তারা চালের দাম বাড়ানোর সুযোগ পাবে। ইতোমধ্যে এই ভরা মৌসুমের সময়ও নানান কারসাজি করে মিলাররা চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমদানি করা চাল বাজারে আসা শুরু হয়েছে। পাশাপাশি ওএমএসের আওতায় চাল বিক্রির কার্যক্রম চলছে। চালের কিছুটা ঘাটতি রয়েছে। দ্রুত আমদানি করে এ ঘাটতি মেটাতে পারলে এবং বাজারে সরবরাহ বাড়াতে পারলে চালের মূল্য স্বাভাবিক হয়ে আসবে।’
- আরও পড়ুন: সীমিত পরিসরে চাল আমদানির সুযোগ
মন্ত্রাণালয় থেকে গোপালগঞ্জে কৃষি গবেষণা কেন্দ্র স্থাপনের পূর্ত কাজ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছিলেন কৃষিমন্ত্রী। এ প্রসঙ্গে তিনি জানান, কেন্দ্রটি হলে গোপালগঞ্জসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ভূমির প্রকৃতি ও জলবায়ু অনুযায়ী কৃষি প্রযুক্তি ও ফসলের জাত উদ্ভাবন প্রভৃতি বিষয়ে গবেষণা কাজ ত্বরান্বিত হবে।
এর আগে চাল আমদানির কথা জানিয়েছিলেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে তিনি জানান, এবার সরকারিভাবে চার লাখ টন এবং জিটুজি পদ্ধতিতে দেড় লাখ টনসহ মোট সাড়ে পাঁচ লাখ টন চাল আমদানি করা হবে। এর বাইরে বেসরকারি খাতেও চাল আমদানির সুযোগ থাকবে। আমদানি সহজ করতে শুল্ক কমানো হবে।
গোপালগঞ্জে কৃষি গবেষণা কেন্দ্র স্থাপনের পূর্ত কাজ উদ্বোধনে বক্তব্য রাখছেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। ছবি: পিআইডি
কৃষিমন্ত্রী জানান, এ বছর দেশে ধান উৎপাদন কম হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৫-২০ লাখ টন। এ ঘাটতি মেটাতেই সরকার পাঁচ থেকে ছয় লাখ টন চাল আমদানি করবে।
চালের দাম বৃদ্ধির প্রসঙ্গ টেনে কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, ধান উৎপাদন কম হওয়ার কারণে চালের দাম কিছুটা বেড়েছে। বিশেষ করে কৃষক পর্যায়ে ধানের দাম অনেক বেশি হওয়ায় দাম বাড়ার অন্যতম কারণ।
তিনি বলেন, ‘এই বছর কয়েক দফা লাগাতার বন্যা ও পাঁচ মাসব্যাপী অতিবৃষ্টিতে আউশ ও আমন ধানের ক্ষতি হয়েছে। প্রায় এক লাখ পাঁচ হাজার হেক্টর জমির আমন ধান নষ্ট হয়। এসবের প্রভাব পড়ে বাজারে।’
ভবিষ্যতে যাতে খাদ্য নিয়ে কোনো সমস্যা না হয় সেজন্য সব উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী বোরো মৌসুমে ধান উৎপাদন বৃদ্ধিতে সর্বাত্মক কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। গতবারের তুলনায় এ বছর ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ বাড়ানো হবে। দুই লাখ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড ধান চাষ কার্যক্রম চলছে।’