রাজধানীর ফুলবাড়িয়ায় সুন্দরবন স্কয়ার মার্কেটে নকশা বহির্ভূতভাবে গড়ে তোলা ৭৫৩টি দোকানের মধ্যে সাড়ে চার শর মতো দোকান গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ভেঙে ফেলা হয়েছে মার্কেটের বাইরের বর্ধিত অংশগুলো।
শনিবার বেলা ১২টা থেকে এই মার্কেট ঘিরে তৃতীয় দিনের মতো উচ্ছেদ অভিযান চালায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ভ্রাম্যমাণ আদালত।
অভিযানের বিষয়ে ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন নিউজবাংলাকে বলেন, ঝুঁকি এড়াতে মার্কেটের ভেতরের অংশে ম্যানুয়ালি (হাতুড়ি, শাবল দিয়ে) কাজ করতে হচ্ছে। কোনো যন্ত্র ব্যবহার করা যাচ্ছে না। তাই কাজের গতি একটু ধীর।
এই মার্কেটের নকশাবহির্ভূত দোকান উচ্ছেদে গত ১৭ ডিসেম্বর প্রথম দিনের অভিযান চালায় ডিএসসিসি। অভিযানের শুরুতে মার্কেটের চারপাশে ফুটপাতে গড়ে তোলা স্থাপনাগুলো ভেঙে দেন অভিযান পরিচালনাকারীরা। এর পর ভূতলে (বেজমেন্ট) গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গায় গড়ে তোলা দোকানগুলো ভাঙা হয়।
এ সময় ব্যবসায়ীরা দাবি করতে থাকেন, তাদের পজেশন অবৈধ নয়। তারা টাকা দিয়ে দোকান বৈধ করেছেন। টাকা দেয়ার রশিদও দেখিয়েছেন বহুজন। জানিয়েছেন, সিটি করপোরেশনে নিয়মিত ভাড়াও পরিশোধ করা হয়েছে।
দোকানিরা জানান, দোকান বৈধ করার আশ্বাস দিয়ে টাকা তুলেছেন যুবলীগ নেতা শাহাবুদ্দিন, আওয়ামী লীগ নেতা মনোয়ার হোসেন ও কাউন্সিলর ফরিদ উদ্দিন রতন। একেকটি দোকানের জন্য পাঁচ থেকে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত নেয়া হয়েছে বলেও দাবি করেন তারা।
উচ্ছেদ অভিযান শুরুর প্রথম দিনেই মার্কেটের ৩৪ জন ব্যবসায়ীর করা এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত ৩৪টি দোকান উচ্ছেদে স্থিতাবস্থা দেয়। এ আদেশের কপি সেদিন দুপুরে অভিযান পরিচালনাকারীদের হাতে পৌঁছালে বন্ধ হয়ে যায় গোটা উচ্ছেদ কার্যক্রম।
পরে ২৪ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফার উচ্ছেদ অভিযানে ভাঙা হয় আরও কিছু অবৈধ স্থাপনা।
শনিবার তৃতীয় দিনের অভিযানের সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত রাসেল সাবরিন বলেন, ‘যে ৩৪টি দোকানের ব্যাপারে আদালতের নির্দেশনা আছে, সেগুলো বাদ রেখেই আমরা কাজ করছি।’
নকশা অনুসারে ডিএসসিসির নিয়ন্ত্রণাধীন এই বিপণিবিতানের চারতলা পর্যন্ত বৈধ। তবে অনুমতি ছাড়াই নির্মিত পঞ্চম তলা ও বেজমেন্টে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গায় অবকাঠামো নির্মাণ করে ব্যবসা পরিচালনা করা হচ্ছিল। এ ছাড়া নকশায় থাকা খোলা জায়গা, শৌচাগার ও সিঁড়িঘরসহ বিভিন্ন ফাঁকা জায়গাতেও গড়ে তোলা হয় অনেক দোকানঘর।
ডিএসসিসির হিসাবে মার্কেটে মোট বৈধ দোকানের সংখ্যা হাজারের কাছাকাছি। আর নকশা বহির্ভূতভাবে গড়ে তোলা ৭৫৩টি দোকানের মধ্যে চার শটি তৈরি করা হয়েছিল ভূ-তলের (বেজমেন্ট) গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গায়।
ডিএসসিসি কর্তৃপক্ষ বলছে, ভূ-তলের সবগুলো দোকান অপসারণের পর জায়গাটিকে আবার পার্কিংয়ের কাজে লাগানোর ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে।