ভারতের মিজোরামে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের সশস্ত্র গোষ্ঠীর আস্তানা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিবি)। জবাবে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ বলেছে, সেখানে এমন আস্তানা থাকলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শুক্রবার ভারতের গৌহাটিতে বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের সম্মেলনে এক যৌথ ঘোষণায় এ উদ্বেগ জানানো হয়। একই সঙ্গে আস্তানাগুলো ধ্বংসের অনুরোধ জানায় বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী।
সম্মেলনে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম ভারতের মিজোরাম রাজ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের সশস্ত্র গোষ্ঠীর আস্তানা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সেগুলো ধ্বংসের অনুরোধ জানান।
জবাবে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ভারত সরকারের ‘জিরো টলারেন্স নীতি’ উল্লেখ করে বিএসএফ প্রধান রাকেশ আস্থানা বলেন, আস্তানা যদি থাকে, তাহলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সম্মেলনে দুই পক্ষ আগে থেকে না জানিয়ে সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে কোনো ধরনের উন্নয়নমূলক কাজ না করার বিষয়েও একমত হয়েছে। পাশাপাশি বন্ধ থাকা উন্নয়নমূলক কাজগুলো দ্রুত শেষ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।
লালমনিরহাট সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশির মরদেহ হস্তান্তরের আগে বিজিবি-বিএসএফের পতাকা বৈঠক
গত ২২ ডিসেম্বর শুরু হওয়া এই সম্মেলন শেষ হবে শনিবার। এতে আলোচনা হচ্ছে ১০টি বিষয় নিয়ে, যার প্রথমটিই সীমান্তে হত্যা।
সম্মেলনে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে হত্যা শূন্যে নামাতে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী যৌথ টহল চালাতে একমত হয়েছে। সীমান্ত অতিক্রম না করার বিষয়ে জনগণকে সচেতন করার কর্মসূচি আরও বেগবান করার সিদ্ধান্তও হয়েছে।
এ সম্মেলন শুরুর পাঁচ দিন আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভার্চুয়াল সামিটেও সীমান্ত হত্যার বিষয়টি আলোচিত হয়। মোদি অঙ্গীকার করেন, বাংলাদেশ সীমান্তে তার দেশের বাহিনী প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করবে না।
অবশ্য এই সম্মেলনের মধ্যেই ময়মনসিংহ সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে এক বাংলাদেশির প্রাণ যায়।
সম্প্রতি লালমনিরহাট সীমান্তে গুলিতে এক বাংলাদেশির মৃত্যুর তিন দিন পর মরদেহ হস্তান্তর করে বিএসএফ
বিজিবি মহাপরিচালকের নেতৃত্বে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিসহ ১১ সদস্যের প্রতিনিধিদল এই সম্মেলনে অংশ নেয়।
বিএসএফ মহাপরিচালকের নেতৃত্বে সে দেশের স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিসহ ১২ সদস্যের দল অংশ নেয়। ২২ ডিসেম্বর শুরু হওয়া এ সম্মেলন শেষ হবে ২৬ ডিসেম্বর।
আগামী এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে ঢাকায় দুই বাহিনীর মহাপরিচালক পর্যায়ের পরবর্তী সীমান্ত সম্মেলন হবে বলেও সিদ্ধান্ত হয়েছে।