এজেন্টের দোকান থেকে নাম্বার সংগ্রহ থেকে শুরু করে টাকা উত্তোলন পর্যন্ত চার ধাপে চারটি দল সক্রিয় থেকে বিকাশে প্রতারণা করে থাকে। এ রকম একটি চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ওয়ারী বিভাগ।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার মো. শিমুল মিয়া, শাহিন মাতুব্বর ও এমডি মহিদুল।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার আ. আহাদ জানান, বুধবার মোহাম্মপুর থানায় বিকাশে প্রতারণার একটি মামলা হয়। এ মামলায় ওই তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জড়িত অন্যদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
চার ধাপে চলে প্রতারণাবিকাশ প্রতারক চক্রের সদস্যরা মূলত চারটি ভাগে বিভক্ত হয়ে প্রতারণা করে থাকে।
প্রথম দল মাঠ পর্যায়ে অবস্থান করে বিকাশের এজেন্ট বা দোকানে টাকা বিকাশ করার কথা বলে অবস্থান নেয়। একপর্যায়ে আগের লেনদেনের খাতার ছবি তুলে নেয় তারা। পরে এ ছবি হোয়াটসঅ্যাপ-এ দ্বিতীয় দলের কাছে স্থান উল্লেখ করে পাঠিয়ে দেয়। এ ছবি দেখে দ্বিতীয় পক্ষ সক্রিয় হয়।
দ্বিতীয় পক্ষ এজেন্ট বা দোকানদার সেজে গ্রাহককে ফোন করে এবং জানতে চায় যে, পাঠানো টাকা পেয়েছেন কিনা এবং ক্যাশ আউট করেছেন কিনা। টাকা পেয়েছেন কিন্তু তোলেননি বা ক্যাশ আউট করেননি জানালে এ পক্ষের প্রতারণা শুরু হয়। প্রতারক বলতে থাকেন যে আমার দোকান হতে একই সময়ে কয়েকটি নাম্বারে পাঠানো টাকা নিয়ে অভিযোগ এসেছে। তাদের নাম্বার লক করতে গিয়ে আপনার নাম্বারও লক হয়ে গেছে। আপনাকে বিকাশ অফিস হতে ফোন করে আনলক করে দেবে।
অল্প সময়ের ব্যবধানে তৃতীয় দল বিকাশ কাস্টমার কেয়ার সার্ভিস অফিসার পরিচয় দিয়ে তৎপরতা চালাতে থাকে। অনলাইনভিত্তিক বিভিন্ন অ্যাপসের মাধ্যমে তারা বিকাশ অফিসের নাম্বার ক্লোনিং করে ফোন দেয়। তারা ফোন করে বিভিন্ন কথার ছলে ওটিপি (One Time Password) এবং বিকাশ পিনকোড নিয়ে নেয়। পরে প্রতারক চক্র গ্রাহকের বিকাশ অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে এবং অ্যাকাউন্ট আনলক করার কথা বলে গ্রাহকের বিকাশ অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়।
এভাবে হাতিয়ে নেয়া টাকা মাঠ পর্যায়ে থাকা সর্বশেষ অর্থাৎ চতুর্থ দলের কাছে পাঠানো হয়।
ওয়ারী বিভাগের উপ কমিশনার আ. আহাদ বলেন, ‘আসামিরা দীর্ঘদিন যাবত বিকাশ কাস্টমার কেয়ারের ম্যানেজার অথবা বিকাশ এজেন্ট সেজে মানুষের বিকাশ অ্যাকাউন্ট হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎ করে আসছিল। তারা বিভিন্ন হাত বদল করে ক্যাশ আউট করে থাকে। তাদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা কঠিন হয়। আমরা এ ধরনের প্রতারকদের প্রতিরোধে কাজ করছি।’