আইনজীবী নিবন্ধনে বার কাউন্সিলের লিখিত পরীক্ষায় বিশৃঙ্খলার কারণে পাঁচটি কেন্দ্রের পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে নতুন করে পরীক্ষা নেয়া হবে।
গত শনিবার লিখিত পরীক্ষা হয় নয়টি কেন্দ্রে। তবে প্রশ্ন কঠিন হওয়ার অভিযোগ কয়েকটি কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা ও ভাঙচুর করে কিছু পরীক্ষার্থী। এমনকি যারা পরীক্ষা দিচ্ছিল, তাদের খাতা টেনে ছিড়ে ফেলা হয়।
যে শিক্ষানবীশ আইনজীবীরা পরীক্ষা দিতে পারেনি, তাদের উদ্বেগ উৎকণ্ঠার মধ্যে বৃহস্পতিবার বার কাউন্সিল থেকে এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়, পাঁচ কেন্দ্রের পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা আবার নেয়া হবে।
কেন্দ্রগুলো হলো: মোহাম্মদপুর মহিলা কলেজ, মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজ, বিসিএসআইআর উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি মোহাম্মদপুর মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং ঢাকা মহানগর মহিলা কলেজ।
পরীক্ষা কবে হবে, সেটা অবশ্য বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়নি। বলা হয়েছে, ‘যত দ্রুত সম্ভব গ্রহণ করা হইবে।’
আইনজীবী নিবন্ধনে বার কাউন্সিলের পরীক্ষা হওয়ার কথা বছরে দুটি। তবে নানা জটিলতায় এই পরীক্ষা আটকে যাচ্ছে। সবশেষ পরীক্ষা হয়েছে ২০১৭ সালে। এর আগের পরীক্ষা হয় ২০১৪ সালে।
তিন বছর পর হওয়া এই পরীক্ষা ঘিরে শিক্ষানবীশ আইনজীবীদের মধ্যে এক ধরনের স্বস্তিও কাজ করছিল। কারণ, এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেই কেবল তারা আদালতে নিজেদের মতো করে আইন পেশায় লিপ্ত হতে পারবে।
তবে করোনাকালে লিখিত পরীক্ষা না নিয়ে মৌখিক পরীক্ষার ভিত্তিতে সনদ দেয়ার দাবিতে কয়েক মাস ধরেই আন্দোলন চলছিল। এক দফা পরীক্ষা স্থগিতও হয়। দ্বিতীয় দফায় লিখিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণার পরও আন্দোলন চলতে থাকে।
আর ১৯ ডিসেম্বর পরীক্ষার দুই দিন আগে সংবাদ সম্মেলন করে আন্দোলনকারীদের একটি অংশ পরীক্ষায় অংশ না নেয়ার ঘোষণা দেয়। ধারণা করা হয়, তারাই কেন্দ্রে যায় এবং গোলযোগ করে।
পুলিশ এই ঘটনায় মামলা করে পাঁচটি। গ্রেপ্তার করা হয় ৩৯ জনকে। এদের মধ্যে ২৪ জনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে।
বার কাউন্সিল জানিয়েছে, যেসব পরীক্ষার্থী কেন্দ্রে গোলযোগ করে পরীক্ষার পরিবেশ নষ্ট করেছে, পরীক্ষা গ্রহণের বাধা সৃষ্টি করেছে, তাদের চিহ্নিত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
যারা গোলযোগ করেছে, তাদের আইনজীবী হওয়ার পথও রুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। বার কাউন্সিল জানিয়েছে, তাদেরকে আইনজীবী তালিকাভুক্তির পরীক্ষায় নিষিদ্ধ করা হবে।
বাংলাদেশে আইন পেশায় নিয়োজিত হতে হলে বার কাউন্সিলের সনদ নেয়া বাধ্যতামূলক।