বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নির্বাচনে আস্থাহীনতার কথা ভিত্তিহীন: সিইসি

  •    
  • ২৪ ডিসেম্বর, ২০২০ ১৭:৪১

‘২০১৮ সালের (জাতীয়) নির্বাচন বিদেশি কূটনীতিকেরা পর্যবেক্ষণ করেছেন। তারা নির্বাচন নিয়ে অভিযোগ তোলেননি, গণমাধ্যমও কোনো অভিযোগ করেনি।… নির্বাচনের প্রতি জনগণের আস্থা চলে গেছে এ খবর ভিত্তিহীন।’

নির্বাচন কমিশনের প্রতি ৪২ নাগরিকের আনা অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা। অভিযোগ তোলা ও রাষ্ট্রপতির কাছে চিঠি দেয়াকে অনভিপ্রেত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতও বলছেন তিনি।

নির্বাচনের প্রতি জনগণের আস্থা নেই- এমন অভিযোগের জবাবে সিইসি দাবি করছেন, জনগণ ভোটে এখনও উৎসাহী। ৬০ থেকে ৮০ শতাংশ ভোট পড়ছে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও কোনো অনিয়মের কথা পর্যবেক্ষক বা গণমাধ্যম জানায়নি।

কমিশনের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করতে গত শনিবার রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে চিঠি দেন ৪২ নাগরিক। এর আগে তারা ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনও করেন।

রোববার নির্বাচন কমিশনার শাহাদাত হোসেন চৌধুরী পাল্টা অভিযোগ এনে বলেন, কয়েকজন ব্যক্তি কমিশনের সঙ্গে ব্যবসা করতে না পেরে এই অভিযোগ তুলেছেন। তবে সে দিন সিইসি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতির কাছে যেহেতু চিঠি দেয়া হয়েছে, তাই তার কিছু বলা ঠিক হবে না।

তবে পাঁচ দিনের মাথায় বৃহস্পতিবার সিইসি সংবাদ সম্মেলনে আসেন, যদিও তিনি লিখিত বক্তব্য দেয়ার পর কোনো প্রশ্ন নেননি।

কমিশনের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তার মধ্যে আছে, আর্থিক অসদাচরণ, কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম, নিয়মবহির্ভূত বিলাসবহুল গাড়ির ব্যবহার, ইভিএম কেনায় অনিয়ম, অংশীজনের মতামত উপেক্ষা, নির্বাচনি অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়া, রিটার্নিং কর্মকর্তার সাক্ষরিত ফলের সঙ্গে কেন্দ্রের ফলের অমিল।

এর প্রতিটিরই জবাব দেন সিইসি। বলেন, বিশিষ্টজনেরা যে অভিযোগ এনেছেন সবগুলোই অসত্য।

বর্তমান নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে সরকারবিরোধীদের অভিযোগের শেষ নেই। ভোট নিরপেক্ষ করার বদলে কমিশন সরকারের হয়ে কাজ করে, এমন অভিযোগ হরহামেশা করে থাকে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। তাদের দাবি, সরকার সমর্থক ছাড়া অন্যদের ভোট দিতে দেয়া হয় না। ইভিএম আসার পরেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। ইভিএমে ভোটাররা তাদের পরিচয় শনাক্তে ফিঙ্গার প্রিন্ট দেয়ার পর ভোট দেয় সরকার সমর্থকরা।

বিশিষ্টজনরাও একই ধরনের অভিযোগ তোলার পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংবাদ সম্মেলন করে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। যদিও সরকারের মুখপাত্র তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, নির্বাচন কমিশন নিয়ে বিবৃতির খসড়া বিএনপির।

সিইসি তার বক্তব্যে সবগুলো অভিযোগ খণ্ডন করে দাবি করেন, প্রশিক্ষণ ব্যয়ে আর্থিক অনিয়মের কোনো সুযোগ নেই। তিনি বলেন, নিয়োগ প্রক্রিয়ার দুর্নীতির যে অভিযোগ করা হয়েছে তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ভিত্তিহীন।

নিয়ম বহির্ভূতভাবে বিলাসবহুল গাড়ি ব্যবহারের অভিযোগের জবাবে নুরুল হুদা বলেন, তারা যে গাড়ি ব্যবহার করেন, সেটা একেবারেই সাধারণ মানের।

ইভিএম কেনায় অস্বচ্ছতার অভিযোগের জবাব দিয়ে সিইসি বলেন, ইভিএম কেনায় সরাসরি নির্বাচন কমিশন যুক্ত নয়। সেনাবাহিনীর মাধ্যমে এই যন্ত্র আমদানি করা হয়। টাকা সরাসরি সরকারি কোষাগার থেকে সেনাবাহিনীকে পরিশোধ করা হয়।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, 'একাদশ সংসদ নির্বাচন ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে ১৫ বিশেষ বক্তার জন্য দুই কোটি টাকা বরাদ্দই ছিল না। সম্পূর্ণ অসত্য তথ্যের ভিত্তিতে অভিযোগ আনা হয়েছে, যা ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

  • আরও পড়ুন: ইসি নিয়ে প্রশ্ন তোলা বিশিষ্টজনদের প্রতি বিএনপির কৃতজ্ঞতা
  • ইভিএম ব্যবহার করে বিতর্কমুক্ত ভোট গ্রহণ ও দ্রুত ফলাফল দেয়া যাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন সিইসি। বলেন, এই যন্ত্রের সুবিধা থাকায় ভারতসহ বিভিন্ন দেশ এখন ইভিএম ব্যবহার করছে।

    জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে অসদাচরণের যে অভিযোগ আনা হয়েছে তাকেও অসত্য বলেন সিইসি। তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালের (জাতীয়) নির্বাচন বিদেশি কূটনীতিকেরা পর্যবেক্ষণ করেছেন। তারা নির্বাচন নিয়ে অভিযোগ তোলেননি, গণমাধ্যমও কোনো অভিযোগ করেনি।’

    অনিয়মের কারণে বহু স্থানীয় নির্বাচন বাতিল করা হয়েছে উল্লেখ করে সিইসি বলেন, ‘তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রতি পদে দুই থেকে আট জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ভোট পড়েছে ৬০ থেকে ৮০ শতাংশ।

    ‘নির্বাচনের প্রতি জনগণের আস্থা চলে গেছে এ খবর ভিত্তিহীন।’

    অবশ্য চলতি বছর ঢাকায় তিনটি আসনে উপনির্বাচনে একটিতে তিন শতাংশের নিচে একটিতে ১০ শতাংশ এবং একটিতে ১৪ শতাংশ ভোট পড়ার কোনো ব্যাখ্যা দেননি সিইসি।

    কর্মচারি নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, '৩৩৯টি পদে নিয়োগের জন্য টেলিটকের মাধ্যমে আবেদন আহ্বান করে পাঁচটি দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়া হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের মাধ্যমে পরীক্ষা নেয়া হয়। পরে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পাঁচ সদ্যস্যের কমিটি ৪১ দিন ধরে মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণ করে। কোনো মহল থেকেই নিয়োগের বিষয়ে অভিযোগ পাওয়া যায়নি।'

    সংবাদ সম্মেলনে তিন নির্বাচন কমিশনার ও কমিশন সচিব উপস্থিত ছিলেন। তবে নানা সময় ব্যতিক্রমী বক্তব্য নিয়ে আলোচিত নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার উপস্থিত ছিলেন না।

    এ বিভাগের আরো খবর