সরকার প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ টাকা খরচ করে বাঁধ নির্মাণ করলেও সেগুলো টেকসই হয় না কেন, তা জানতে চেয়েছেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ফরিদপুরে নদী গবেষণা ইনস্টিটিউটের হলরুমে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে নদ-নদীর রক্ষাবাঁধ প্রসঙ্গে তিনি এ প্রশ্ন তোলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে সমৃদ্ধশালী করে গড়ে তোলার যে মহাপরিকল্পনা নিয়েছেন তা বাস্তবায়নে নদী গবেষণা ইনস্টিটিউটের (নগই) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এই গবেষণা প্রতিষ্ঠানটিকে আরও কার্যকর দেখতে চাই। নগইতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্বীকৃত গবেষণা সমীক্ষা চালাতে হবে।’
নদী গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মো. আলিমুদ্দিন মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন।
বিশেষ অতিথি ছিলেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. রোকন উদ-দৌলা, ফরিদপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শামসুল হক ভোলা মাস্টার, জেলা প্রশাসক অতুল সরকার ও পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান।
পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নদী গবেষণা ইনিস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, ‘গবেষণা ও সমীক্ষার মান উন্নয়ন করুন। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে স্বীকৃতি পায় এমন গবেষণা করতে হবে। নগই যেসব ফিজিক্যাল ও ম্যাথমেটিক্যাল সমীক্ষা করে, সে ব্যাপারে যেন কোনো প্রশ্ন না ওঠে।’
তিনি বলেন, ‘উপকূল রক্ষায় বিশ্বব্যাংক ১০২ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি সমীক্ষা চালাচ্ছে। নগই থাকতে কেন তারা এই কাজ করবে? এই কাজ নগই করলে তাতে আপনারাই লাভবান হতেন।’
তিনি টেকসই বাঁধ নির্মাণে জাপানের বিশেষ প্রযুক্তির ব্যাপারে নগইর গবেষকদের খোঁজখবর নেয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘আপনারা পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে এসব কাজের খোঁজ নিয়ে সেসব স্থানে যান। কাজে যেসব ত্রুটি রয়েছে, সেগুলো বের করে ওই প্রকল্প পরিচালককে জানাবেন, আমাকেও জানান।’
বাঁধ ভেঙে যাওয়া নিয়ে জাহিদ বলেন, ‘সরকার প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ টাকা খরচ করে বাঁধ নির্মাণ করে। সেগুলো টেকসই হয় না। কেন প্রতি বছরই বাঁধ ভেঙে যায়? এসব ব্যাপারে আপনাদের সমীক্ষা চালাতে হবে।’
বড় বড় নদীতে প্রতি বছর চর পড়ে নাব্য হ্রাস ও নৌযান আটকে যাওয়ার বিষয় তুলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘একেক সময়ে একেক স্থানে কেন চর পড়ছে, বিষয়টি আপনারা গবেষণা করে বের করুন।’
সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান, মহিলাবিষয়ক সম্পাদক আইভি মাসুদ, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক মোল্যাসহ অনেকে।
পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক পরে ফরিদপুরের মধুখালীতে মধুমতি নদীর ভাঙন পরিদর্শন এবং বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ স্মৃতি জাদুঘর ও বসতভিটা দেখতে যান।