প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, সেনাবাহিনীর নবীন কর্মকর্তাদের মাঝে আসলে তিনি স্মৃতিকাতর হয়ে ওঠেন; খুঁজে ফেরেন আদরের ছোটভাই শেখ রাসেলকে।
চট্টগ্রামের ভাটিয়ারিতে বাংলাদেশ মিলিটারি অ্যাকাডেমিতে বৃহস্পতিবার সকালে রাষ্ট্রপতির কুজকাওয়াজ অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ কথা জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘তোমাদের এখানে যখন আসি, মনে হয় আমি তোমাদের পরিবারেরই একজন।
‘আমার ছোট ভাইটার মাত্র ১০ বছর বয়স। তার জীবনের একটা স্বপ্নই ছিল, সে সেনাবাহিনীর অফিসার হবে। কিন্তু সে স্বপ্ন আর পূরণ হতে পারেনি।’
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে ভোরে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের বাড়িতে একদল বিপদগামী সেনা সদস্য হামলা চালিয়ে হত্যা করে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। পরিবারের আরও অনেকের সঙ্গে সেদিন নির্মতার শিকার হন ছোট্ট রাসেলকেও।
বিদেশে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।
রাসেলের স্মৃতিচারণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট ঘাতকের নির্মম বুলেটের আঘাতে আমার বাবা রাষ্ট্রপতি ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, আমার মা ও তিন ভাইসহ পরিবারের সবাইকে নির্মমভাবে হত্যা করে। কাজেই তার (রাসেলের) স্বপ্নটা অধরাই থেকে গেল। সেই ছোট্ট রাসেল আর সেনা অফিসার হতে পারল না।’
ওই হামলায় নিহত দুই সেনা কর্মকর্তা ভাই শেখ কামাল ও শেখ জামালের কথাও তুলে ধরেন বঙ্গবন্ধু কন্যা।
‘মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামাল আমার ছোট। আমার আরেক ভাই লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগদান করেছিল। প্রথমে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে একজন অফিসার হিসেবে। কামাল মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে আর জামাল দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে যোগ দেয়, সেও মুক্তিযোদ্ধা।’
নবীন সেনা অফিসারদের উদ্দেশে সরকারপ্রধান বলেন, ‘তোমাদের প্রতি সব সময় দোয়া থাকবে, আশীর্বাদ থাকবে এবং তোমরা দেশকে ভালোবাসবে। মানুষকে ভালোবাসবে, মানুষের জন্য কর্তব্য পালন করবে যেন এই দেশ এগিয়ে যেতে পারে।’
অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনীর ৭৯ বিএমএ লংকোর্স শেষে ১১৬ জন বাংলাদেশি ও চারজন বিদেশি ক্যাডেটকে কমিশন প্রদান করা হয়।
বাংলাদেশি ক্যাডেটদের মধ্যে ১০২ জন পুরুষ ও ১৪ জন নারী। আর চার জন বিদেশি ক্যাডেটের মধ্যে তিন জন ফিলিস্তিনের আর একজন শ্রীলঙ্কার।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যে একাডেমি বঙ্গবন্ধু গড়ে দিয়েছিলেন সেটি আজ আন্তর্জাতিকভাবে যথেষ্ট সুনামের অধিকারী। এখানে আজকে শুধু বাংলাদেশিরাই নয়, বিদেশি ক্যাডেটরাও আসছে।’