যুক্তরাজ্যে নতুন ধরনের করোনা ভাইরাস শনাক্তের মধ্যেই যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে ২০২ যাত্রী নিয়ে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করল বাংলাদেশ বিমানের একটি উড়োজাহাজ।
লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ বিমানের বিজি ২০২ ফ্লাইট বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ১০ মিনিটে ওসমানীতে অবতরণ করে।
এই ফ্লাইটে আসা ২০২ যাত্রীর মধ্যে ১৬৫ জনই সিলেটের। বাকি ৩৭ যাত্রীকে নিয়ে ১০টা ১০ মিনিটে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উদ্দেশে ওসমানী বিমানবন্দর ছাড়ে উড়োজাহাজটি।
নতুন ধরনের ও বেশি সংক্রামক করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ যুক্তরাজ্যে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে। ভারতও যুক্তরাজ্য থেকে আসা বিমানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
তবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এখনও সে ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বুধবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বিমান চলাচল এখনই বন্ধ করছে না সরকার।
মন্ত্রী জানান, যুক্তরাজ্য থেকে আসা সব যাত্রীর জন্য বিমানবন্দরে আলাদা লাইন করা হবে। যাদের করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট থাকবে না, তাদের সেখানেই পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হবে। এরপর সেখান থেকেই তাদের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হবে।
একই দিনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা খফরুল ইসলাম আলমগীর যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বিমান যোগাযোগ বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।
ফ্লাইটে সিলেটে নামা ১৬৫ জন যাত্রীই করোনা নেগেটিভ সনদ নিয়ে এসেছেন বলে জানিয়েছেন ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক হাফিজ আহমদ।
তিনি বলেন, করোনা নেগেটিভ সনদ ছাড়া এখন কাউকেই বিমানে উঠতে দেওয়া হয় না। আবার দেশে আসার পরও মেডিক্যাল টিম সব যাত্রীর করোনা সনদ পরীক্ষা করে। ফলে করোনা নেগেটিভ সনদ ছাড়া কারোরই দেশে আসার সুযোগ নেই।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ওসমানীতে নামা যাত্রীদের করোনা সনদ বিমানবন্দরের মেডিক্যাল টিম পরীক্ষা করছে। নেগেটিভ সনদ থাকায় এরই মধ্যে বেশিরভাগ যাত্রীকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
এই ফ্লাইটে দেশে এসেছেন সিলেটের ওসমানীনগরের জাকারিয়া মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘করোনা নেগেটিভ সনদসহ সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনেই আমি দেশে এসেছি। আমি চাই না আমার মাধ্যমে দেশের কেউ বা আমার কোনো স্বজন আক্রান্ত হোক।’
ওসমানী বিমানবন্দরে আসা বিদেশযাত্রীদের পরীক্ষার জন্য গঠিত মেডিক্যাল টিমের সমন্বয়ের দায়িত্বে আছেন সিলেট সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সিরাজুম মুনির।
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাজ্য থেকে আসা যাত্রীদের আমাদের টিম পরীক্ষা করছে। তাদের করোনা নেগেটিভ সনদ আছে কি না দেখা হচ্ছে। এ কাজ শেষ করতে দুপুর পর্যন্ত সময় লাগবে। তার আগে সবার নেগেটিভ সনদ আছে কি না তা বলা যাবে না।’
সিলেটের সিভিল সার্জন প্রেমানন্দ মন্ডল বলেন, ‘করোনা নেগেটিভ সনদ ছাড়া কোনো যাত্রী সিলেটে এলে তাকে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখা হবে। তবে যাদের নেগেটিভ সনদ আছে তাদের কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে না।’