বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) মালামাল ক্রয়ের জন্য বরাদ্দ সাড়ে তিন কোটি টাকা আত্মসাৎ করার মামলায় এক জন বিদেশিসহ তিন জনের কারাদণ্ড হয়েছে।
বুধবার ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ আদালতের বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান এই রায় ঘোষণা করেন।
যন্ত্রপাতি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান মালয়েশিয়ার মেসার্স নভেলকোর (এম) কর্মকর্তা জন নোয়েল ও স্থানীয় বিক্রয় প্রতিনিধি খন্দকার শহীদুল ইসলামকে দুই বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং তা অনাদায়ে আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়।
এ ছাড়া ক্রয়কারী ও প্রকল্পের পরিচালক শফিকুল ইসলামকে তিন বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডসহ ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে এক মাস কারাদণ্ডের আদেশ দেয় আদালত।
পাশাপাশি বিচারক আসামিদের আত্মসাৎ করা ৯১ লাখ ২৬ হাজার ৬০ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দেন। এ ছাড়া এই তিন আসামিকে আরও ৩০ লাখ ৪২ হাজার ২০ টাকা জরিমানা করা হয়। এ টাকা তারা যন্ত্রের মূল্য বাবদ বেশি দেখিয়েছিলেন।
আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের অনুপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়।
এফডিসির আধুনিকায়নের জন্য যন্ত্রপাতি ক্রয় বাবদ উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে সরকারের ৩ কোটি ৪৬ লাখ ৫৮ হাজার ৫২০ টাকার ক্ষতি হয়েছে মর্মে দুদকের উপপরিচালক হামিদুল হাসান ২০১৫ সালের ৭ অক্টোবর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় মামলা করেন।
মামলায় জন নোয়েল, খন্দকার শহীদুল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম ও বিএফডিসির তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়কে আসামি করা হয়।
এজাহারে বলা হয়, ক্রয় প্রক্রিয়ায় পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়সহ এফডিসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা পেশাগত দায়িত্ব পালনে অবহেলা করাসহ প্রাক-জাহাজীকরণের বিধিমালা মানেননি। তারা মনগড়া বিশ্লেষণের ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের পরিবর্তে চীনের তৈরি মালামাল জাহাজীকরণের অনুমতি দেন।
এ ছাড়া মালামাল গ্রহণ কমিটির সুপারিশ আছে বলে মিথ্যা তথ্য দিয়ে চুক্তি বহির্ভূতভাবে চীনের তৈরি মালামাল গ্রহণ ও মূল্য পরিশোধ করেন। এসব অনিয়ম করার বিষয়ে খন্দকার শহীদুল ইসলাম সরবরাহকারী আসামিদের উৎসাহিত করেছেন। প্রকল্প পরিচালক মো. শফিকুল ইসলামের এসব অনিয়মকে পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় সমর্থন করেন।
দুদক উপপরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী মামলাটি তদন্ত করে ২০১৭ সালের ২ মার্চ পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়কে অব্যাহতি দিয়ে অপর তিন জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
২০১৮ সালের ২২ জানুয়ারি তিন আসামির বিরুদ্ধে আদালত অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয়। মামলাটির বিচার চলার সময় আদালত অভিযোগপত্রে উল্লেখিত ২১ জন সাক্ষীর মধ্যে ২০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করে।