বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সিলেটে পরিবহন ধর্মঘট প্রধানমন্ত্রীর ‘নজর কাড়তে’

  •    
  • ২৩ ডিসেম্বর, ২০২০ ১৪:৫১

সিলেট জেলা ট্রাক, পিকআপ-কাভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আবু সরকার বলেন, ‘সমঝোতা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন থেকে সরছি না। আমরা চাইছি প্রধানমন্ত্রী কোনো নির্দেশনা দিক। পরিবহন ধমর্ঘট দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নজরে বিষয়টি আনার চেষ্টা করছি।’

সিলেটের বন্ধ কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলনের দাবিতে টানা দ্বিতীয় দিন বিভাগজুড়ে পরিবহন ধর্মঘট চলছে।

জেলার বিভিন্ন সড়কে বুধবার সকাল থেকে অবস্থান নিয়ে যান চলাচলে বাধা দেয় পরিবহন শ্রমিকেরা। যাত্রী ও পণ্যবাহী যান বন্ধ থাকায় তীব্র ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ। শ্রমিক নেতারা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর ব্যবস্থা নেয়ার আশায় এই পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হয়েছে।

পরিবেশের বিপর্যয় ঠেকাতে ২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর সিলেটের জাফলং, ভোলাগঞ্জ, শাহ আরেফিন টিলা, বিছনাকান্দি ও লোভছড়ার পাঁচ কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলন নিষিদ্ধ করে খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়।

এর আগে, ২০১৪ সালে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বেলা)-এর একটি রিটের পরিপ্রেক্ষিতে সিলেটের পাথর কোয়ারিতে সব ধরনের যন্ত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে উচ্চ আদালত।

সম্প্রতি প্রশাসন এ বিষয়ে কঠোর অবস্থান নিলে মঙ্গলবার থেকে তিন দিনের ধর্মঘটের ডাক দেয় পরিবহন শ্রমিকেরা। পাথর কোয়ারির সংশ্লিষ্টদের ইন্ধনে এই ধর্মঘট ডাকা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

সিলেটের হেতিমগঞ্জ থেকে প্রতিদিন বাসে চেপে নগরীতে অফিস করেন সরকারি কর্মকর্তা আশফাকুল হক। ধর্মঘটের কারণে বুধবার হেঁটে, কিছুটা পথ ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলে করে আর বাকি পথ রিকশায় চেপে অফিসে পৌঁছান তিনি।

‘অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে শেষপর্যন্ত অফিসে এসে পৌঁছাতে পেরেছি। কিন্তু এতে সময় এবং ভাড়া দুটোই বেশি লেগেছে। দুর্ভোগ তো আছেই।’

ব্যক্তিগত কাজে হবিগঞ্জ যাওয়ার কথা ছিল জাহেদ আহমেদের। বাস টার্মিনালে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেও গাড়ি না পাওয়ায় বাড়ি ফিরে যেতে বাধ্য হন তিনি।

সিলেটের কদমতলী বাস টার্মিনালে দেখা গেছে এলোমেলোভাবে রাখা হয়েছে বাস। ধর্মঘটের কারণে বন্ধ রয়েছে নগরের একমাত্র গণপরিবহন টাউন বাস সার্ভিসও।

বাস না চলায় পর্যটকশূন্য হয়ে পড়েছে সিলেট। বিপনী বিতান ও রেস্টুরেন্টে মানুষের আনাগোনা একেবারেই কম। পরিবহন ধর্মঘটের প্রভাব পরেছে নিত্যপণ্যের বাজারেও। একদিনের ব্যবধানে বেড়ে গেছে মাছ ও সবজি দাম।

পরিবহন ধর্মঘটে ক্ষুব্ধ বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম বলেন, ‘পাথরখেকোদের কালো টাকার কাছে শ্রমিক নেতারা বিক্রি হয়ে গেছেন।

‘সম্পূর্ণ অন্যায্য, অযৌক্তিক দাবিতে পরিবহন ধর্মঘটের নামে অরাজকতা চলছে। এই ধর্মঘটের সঙ্গে পরিবহন শ্রমিকদের কোনো স্বার্থ জড়িত নেই। এই মুহূর্তে ধর্মঘট কঠোর হাতে প্রতিরোধ করা উচিত।’

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ধর্মঘট দিয়ে আদালত অবমাননা করা হচ্ছে। মানুষকে জিম্মি করে পরিবহন নেতারা ধর্মঘট ডাকতে পারেন না।’

তবে আন্দোলনকে যৌক্তিক দাবি করছেন সিলেট জেলা ট্রাক পিকআপ-কাভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আবু সরকার।

‘সমঝোতা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন থেকে সরছি না। আমরা চাইছি প্রধানমন্ত্রী কোনো নির্দেশনা দিক। পরিবহন ধমর্ঘট দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নজরে বিষয়টি আনার চেষ্টা করছি।’

সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (গণমাধ্যম) আশরাফ উল্লাহ তাহের নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শ্রমিকদের ডাকা পরিবহন ধর্মঘটে সতর্ক অবস্থায় আছে পুলিশ। মহানগরীতে একাধিক টিম তৎপর আছে।’

এ বিভাগের আরো খবর