রাজধানী ঢাকার কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমানসহ পাঁচজনের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মো. রহিমের করা চাঁদাবাজির মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
মো. রহিম গত ১৭ নভেম্বর আদালতে মামলাটি করেন। অন্য আসামিরা হলেন- কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আনিসুল ইসলাম, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) খায়রুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম ও পুলিশের কথিত সোর্স দেলোয়ার হোসেন।
মঙ্গলবার ঢাকার মুখ্য মহানগর আদালতের হাকিম আবু সুফিয়ান মো. নোমান বাদীর জবানবন্দি নেয়ার পর মামলাটি আমলে নেন। একইসঙ্গে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখাকে (ডিবি) অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী রহিম কেরানীগঞ্জ থানার চরকালিগঞ্জ জেলা পরিষদ মার্কেট থেকে গত ১২ অক্টোবর সন্ধ্যায় কাজ শেষে বাসায় ফিরছিলেন। রাত ৮টার দিকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার চুনকুটিয়া ব্রিজে অজ্ঞাতপরিচয় তিনজন তার গতিরোধ করেন। তারা নিজেদের ঢাকা জেলা ডিবি পুলিশের সদস্য পরিচয় দিয়ে বলেন, রহিমের নামে এক মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। পরে তারা রহিমকে একটি দোকানে নিয়ে তল্লাশি করেন। কিন্তু তার কাছে কিছু পাওয়া যায়নি।
অভিযোগে বলা হয়েছে, ওই দোকানে উপস্থিত লোকজন রহিমকে ছেড়ে দেয়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু তারা রহিমকে দোকান থেকে বের করে বাবুবাজার ব্রিজের কাছে নিয়ে যান। সেখানে এসআই আনিসুল ইসলাম, এএসআই খায়রুল ইসলাম ও সোর্স দেলোয়ার ছিলেন। এই তিনজন নিজেদের কাছ থাকা ইয়াবা বের করে অভিযোগ করেন, সেগুলো রহিমের কাছ থেকে পাওয়া গেছে।
মামলায় আরও বলা হয়েছে, এএসআই আনিসুল ইসলাম তাকে দুই লাখ টাকা দিতে বলেন। না দিলে মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়ার হুমকি দেন। পরে রহিম তার কাছে থাকা এক ভরির সোনার চেইন ও ১৩ হাজার টাকা দেন। কিন্তু দুই লাখ টাকা দিতে না পারায় রহিমকে রাত সোয়া ৯টার দিকে থানায় নিয়ে যান তারা। পরে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে রহিম তাদের আরও ৫০ হাজার টাকা দেন। রাত ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে ওসি মিজানুর রহমান রহিমকে অফিসকক্ষে ডাকেন। বলেন, ‘তোকে বাঁচিয়ে দিলাম। ছোট মামলা দিলাম, দুই একদিনের মধ্যে বের হয়ে আসতে পারবি।’
পরে রহিমের বিরুদ্ধে ১০টি ইয়াবা রাখার অভিযোগে মামলা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। ১৭ দিন থাকার পর গত ৩০ অক্টোবর জামিন পান তিনি।