ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনাকে কেন্দ্র করে সমালোচনার মুখে পড়েছেন জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম (শিউলী আজাদ)।
গত শনিবার উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়ন পরিষদে মুক্তিযোদ্ধাদের এই সংবর্ধনা দেয়া হয়। সেখানে ইউনিয়ন জামায়াতের আমির তাজুল ইসলামকেও দেয়া হয় সংবর্ধনা।
এই ঘটনায় স্থানীয়ভাবে ব্যাপক সমালোচনা মুখে পড়েছেন সংসদ সদস্য।
মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের পক্ষে অস্ত্র ধরা জামায়াতে ইসলামের নেতা তাজুল ইসলাম পেশায় একজন হোমিও চিকিৎসক। মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় কীভাবে তার নাম উঠল, এ নিয়ে নানা জল্পনা কল্পনা চলছে।
বঙ্গবন্ধুর ছবি ছিড়ে ফেলার মামলায় তিনি জেলও খেটেছেন। তার বিরুদ্ধে নাশকতার অভিযোগও রয়েছে।
সংসদ উম্মে ফাতেমা নাজমা (শিউলী আজাদ) বলছেন, এ রকম একজন লোক অনুষ্ঠানে উপস্থিত আছেন, সেই বিষয়টি তিনি জানতেন না।
তিনি বলেন, ‘প্রতিপক্ষ কৌশলে আমাকে দিয়ে ফুল দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে। আমি জানলে নিশ্চয় কোনো জামায়াত নেতাকে ফুল দিতাম না।
‘আমি মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রীকে জানিয়েছি। যদি জামায়াতের আমির মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় থাকেন, তাহলে তাকে তালিকা থেকে বাদ দেয়ার জন্য বলেছি।’
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে শরীফপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাইফুদ্দিন চৌধুরীরর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্পপতি বিল্লাল ভূইয়া।
মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে বক্তব্য দেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার ফয়েজ আহমদ ফুল মিয়া।
ফুল মিয়া নিউজ বাংলাকে বলেন, ‘শরীফপুর ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে সেই ইউনিয়নের ৭৪ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা আয়োজন করা হয়েছিল। তাই আমরা শরীফপুর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পক্ষ থেকে মাইকিং করে মুক্তিযোদ্ধা দাওয়াত পৌঁছে দেই। তাজুল ইসলামের নাম মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় রয়েছে। তাই তিনি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এসেছেন। তবে তাকে আলাদা করে কোনো দাওয়াত দেয়া হয়নি।’
শরীফপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গণসংবর্ধনার বিষয়টি মুক্তিযোদ্ধারা আয়োজন করেছেন। আমি সভাপতিত্ব করেছি। যতটুকু জানি তাজুল ইসলামকে অনুষ্ঠানে দাওয়াত করা হয়নি। মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনার বিষয়ে এলাকায় মাইকিং শুনে যোগ দিয়েছিলেন।’
জামায়াত নেতাকে সংবর্ধনা দেয়ার বিষয়টি অন্যায়ের কাজ বলে মন্তব্য করেছেন যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আল-মামুন সরকার। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় তাজুল ইসলাম নাম থাকলেও তিনি জামায়াত নেতা এটাও সত্য। এর সঙ্গে সংগঠনের কেউ যুক্ত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’