ব্রিটিশবিরোধী বিপ্লবী বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আনিসুর রহমানসহ তিন জনকে তিন দিন করে রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।
সোমবার কুষ্টিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কুমারখালী আমলি আদালতের বিচারক সেলিনা খাতুন তাদের তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন।
এর আগে বেলা ১১টার দিকে কঠোর নিরাপত্তা দিয়ে ওই তিন জনকে আদালতে হাজির করে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার রাতের কোনো এক সময়ে হাতুড়ি দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয় ভাস্কর্যটি।
এতে জড়িত থাকার সন্দেহে পরের দিন গ্রেপ্তার করা হয় ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আনিসুর রহমান, স্থানীয় সবুজ হোসেন ও হৃদয় আহমেদকে।
এই তিন জন ভাস্কর্য ভাঙচুরে সরাসরি জড়িত বলে জানিয়েছে কুষ্টিয়া পুলিশ। তাদের দাবি, কয়া মহাবিদ্যালয়ের বর্তমান কমিটিকে ফাঁসাতেই ভাস্কর্যটি ভাঙচুর করে তারা।
বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙনে জড়িত যুবলীগ নেতা রাজাকার বা আলবদরের সন্তান কি না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক।
এ প্রসঙ্গে রোববার জাতীয় সংসদের সামনে এক প্রতিবাদ সভায় তিনি বলেন, ‘যুবলীগের নাম এসেছে কুষ্টিয়াতে। ১৭ কোটি মানুষের দেশ। অনেকেই বিভ্রান্ত সে সত্যিকারের যুবলীগ কি না। না কোনো রাজাকার আলবদরের সন্তান, যারা নানান পরিচয়ে আসে। তাও হতে পারে।
‘তবে যে লীগই হোক না কেনো, কেউ বাংলাদেশের চেতনাকে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে আলাদা করতে পারবে না।’
ব্রিটিশ বিরোধী বিপ্লবী বাঘা যতীনের জন্ম ১৮৭৯ সালে কয়া গ্রামের মামার বাড়িতে। তার পৈত্রিক নিবাস ঝিনাইদহে। তার আসল নাম যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়।
১৯১৫ সালে ৩৬ বছর বয়সে ভারতের বালেশ্বর বুড়িবালামের তীরে ব্রিটিশদের সঙ্গে সশস্ত্র যুদ্ধে তিনি শহিদ হন।
এর আগে ৪ ডিসেম্বর কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তা মোড়ে ভাঙচুর করা হয় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য। এ ঘটনার পর দেশজুড়ে প্রতিক্রিয়ার ঝড় ওঠে।
পরে সিসিটিভির ফুটেজ পর্যালোচনা করে এ ঘটনায় কওমি মাদ্রাসার দুই ছাত্র ও দুই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।